ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্চ দরে মুন্নু গ্রুপের দুই কোম্পানির উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রির ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ১৪ নভেম্বর ২০১৮

উচ্চ দরে মুন্নু গ্রুপের দুই কোম্পানির উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রির ঘোষণা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ উচ্চ দরে শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে মুন্ন গ্রুপের দুই কোম্পানি মুন্নু সিরামিক ও মুন্নু স্টাফলার্সের উদ্যোক্তা পরিচালক। শেয়ারবাজারে যখন কোম্পানি দুইটির ব্যাপক চাহিদা তখনই উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রির ঘোষণা আসল। গত দেড় বছর ধরেই কোম্পানির আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লভ্যাংশ ঘোষণার হার বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে শেয়ারদরও। তবে বাজারে বিএনপি ঘরানার ব্যবসায়ী পরিবারের মালিকানাধীন কোম্পানি দুইটির শেয়ার নিয়ে অস্বাভাবিক লেনদেনও ছিল চোখে পড়ার মতো। কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রদানসহ নানা অভিযোগও রয়েছে কোম্পানিটির মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে। সবমিলে কোম্পানি দুইটির অস্বাভাবিক আয় সম্পর্কে বাজারে নানা নেতিবাচক প্রচার রয়েছে। এর আগে বিএসইসির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও কোম্পানি দুইটির বিরুদ্ধে সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোম্পানি দুইটির শেয়ার বিক্রির ঘোষণা আসল মালিকপক্ষের কাছ থেকে। শেয়ারবাজারের লেনদেনেও এই পরিস্থিতিতে শেয়ার বিক্রির ঘোষণাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন অনেকেই। মঙ্গলবার ডিএসইতে ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, মুন্নু সিরামিকের স্পন্সর মুন্নু ওয়েলফার ফাউন্ডেশন আগামী ত্রিশ দিনের মতো ২ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করবেন। এই ফাউন্ডেশনের হাতে মুন্নু সিরামিকের ১ কোটি ১৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৩২টি শেয়ার রয়েছে। মঙ্গলবারের মুন্নু সিরামিকের সমন্বয় মূল্য ৩৭৭.৫০ টাকা ধরে বিক্রির ঘোষণা দেয়ার শেয়ারের মূল্য ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে মুন্নু ওয়েলফার ফাউন্ডেশন মুন্নু স্টাফলার্সেও ২৫ হাজার শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। এই স্পন্সরে হাতে কোম্পানিটির ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৯২টি শেয়ার রয়েছে। মঙ্গলবারে কোম্পানিটির ৫৪৩০.৬০ টাকা সমন্বয় মূল্য ধরে বিক্রির ঘোষণা দেয়া শেয়ারের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ৫৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত বছর মুন্নু সিরামিকের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ মারা যান। এরপরে কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান মিসেস হারুনুর রশিদ মুন্নু। তার মেয়ে আফরোজা খান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নেন। মূলত এরপর থেকেই কোম্পানিটির অস্বাভাবিক মুনাফা বাড়তে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে শেয়ারদর মাত্র ৩৯ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৩৭৭.৬০ টাকায় অবস্থান করছে। একইভাবে মুন্ন স্টাফলার্সের দর ৪০০ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে ৫৪৩০.৭০ টাকায় অবস্থান করছেন। অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির কারণে মুন্নু স্টাফলার্সের লেনদেনও বন্ধ রাখে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সমাপ্ত জুন ২০১৮ সালের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩৫০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যদিও কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় দেখানো হয়েছে ৮.৭৪ টাকা। আগের বেশিরভাগই পণ্য বিক্রয় নয়, অন্যান্য মুনাফা থেকে দেখানো হয়েছে। একইভাবে মুন্নু সিরামিকের লভ্যাংশ প্রদান করেছে ৩০ শতাংশ বোনাস আর শেয়ারপ্রতি আয় দেখানো হয়েছে ২.১১ টাকা। অর্থাৎ দুইটি ক্ষেত্রেই রিজার্ভ থেকে বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আবার সেই পরিচালনা পর্ষদই আবার লভ্যাংশ না নেয়ার জন্য শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন।
×