ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কেরানীগঞ্জের কারখানাগুলোতে শীতবস্ত্র তৈরির ধুম

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ১৪ নভেম্বর ২০১৮

কেরানীগঞ্জের কারখানাগুলোতে শীতবস্ত্র তৈরির ধুম

সালাহউদ্দিন মিয়া, কেরানীগঞ্জ ॥ শীত মৌসুম সামনে রেখে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কেরানীগঞ্জের ৪ শতাধিক কারখানা। শুভাঢ্যা ও আগানগর ইউনিয়নে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে সব বয়সী মানুষের জন্য শীতবস্ত্র তৈরি চূড়ান্ত পর্যায়ে। এখানকার সোয়েটার, জাম্পার, ব্লেজার, জেকেট, কোট, লেডিস কোট, ওভার কোট ও ট্রাউজারসহ নানান ধরনের বাহারি ও ফ্যাশনেবল শীতবস্ত্র ছেয়ে গেছে রাজধানীসহ সারা দেশের ছোট-বড় মার্কেট,সুপার মার্কেট,শপিংমল ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে। বাচ্চা, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধসহ মেয়েদের জন্য তৈরি ফ্যাশনেবল শীতবস্ত্রগুলো শোভা পাচ্ছে এখানকার পাইকারি শোরুমগুলোতে। ইতোমধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে পাইকাররাও শীতবস্ত্র কিনতে ভিড় জমাচ্ছে কোরনীগঞ্জের এসব মার্কেটে। কোরনীগঞ্জের কারখানাগুলোতে সরজমিনে দেখা গেল,এখানকার কারখানাগুলোর শ্রমিকরা দিন-দুনিয়া ভুলে প্রচুর ব্যস্ত সময় পার করছেন শীতবস্ত্র তৈরিতে। কেউবা কাটিংয়ে ব্যস্ত, কেউ ডিজাইন নিয়ে ব্যস্ত, কেউবা সেলাই এম্ব্রয়ডারিতে ব্যস্ত আবার অনেকে বোতাম, চেন লাগানো থেকে শুরু করে প্যাকেট করা পর্যন্ত কাজ সেরে ফেলছে। এখানকার ৪ শতাধিক কারখানায় দিনরাত কাজ চলছে। লিজা গার্মেন্টেসের স্বত্বাধিকারী সিরাজুল ইসলাম বলেন, মফস্বলের পাইকাররা শীতবস্ত্র খরিদ করার জন্য ভিড় জমাচ্ছে। এ বছর ব্যবসা আগের তুলনায় ভাল হবে আর এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন নির্বাচনী আমেজকে। আসন্ন জাতীয় একাদশ নির্বাচন ২৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ হওয়াতে অর্থাৎ শীতের ভরা মৌসুমে নির্বাচন, সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের মাঝে আমেজ বিরাজ করছে। তাই এ বছর শীতবস্ত্রের ব্যবসা ভাল হবে এবং চলবে আগামী জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। এমনটাই প্রত্যাশা এখানকার ব্যবসায়ীদের। ৪ শতাধিক কারখানায় উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য গড়ে উঠেছে ৫ সহস্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। গড়ে উঠেছে বিশাল মার্কেট। ৩০ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করছে এসব কারখানায়। তিনি বলেন, পাইকারদের চাহিদা পূরণে এখানকার উৎপাদিত পণ্য ছাড়াও চীন, ভারত ও থাইল্যান্ড থেকেও শীতবস্ত্র আমদানি করতে হয়। তার মতে, এ বছর শীতবস্ত্রে প্রতিযোগিতা চলছে কেরানীগঞ্জ ও চীন দেশের সঙ্গে। চীনের তৈরি বস্ত্র দামে কম, দেখতে সুন্দর এবং টেকসই। কেরানীগঞ্জে কারখানাগুলোতেও ঠিক বিদেশী সোয়েটার, জাম্পার, জ্যাকেট, ব্লেজার, ওভার কোর্ট ও মাফলার তৈরি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানে ২ শতাধিক শ্রমিক ৮ মাস আগ থেকে শীতবস্ত্র তৈরি করছে। তাছাড়াও চীন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ শীতবস্ত্র আমদানি করে দেশের চাহিদা মিটাচ্ছে। ইত্যেমধ্যে দেশী ও বিদেশী শীতবস্ত্র পাইকাররা তাদের পন্য তৈরি করে শো-রুমে ডিসপ্লে করে রেখেছে। দেশে তৈরি মেয়েদের কার্টিগান সোয়েটারের দাম ৩শ’ ৫০ থেকে ৫শ’ টাকা, মেয়েদের জ্যাকেট ৩শ’ ৮০ টাকা থেকে শুরু করে প্রকারভেদে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা, ছেলেদের জ্যাকেট লেদার, কটন, র‌্যাক্সিন ৯শ’ থেকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা, ছেলেদের জিংচিকাং একটি জ্যাকেটের মূল্য ২ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা, মেয়েদের সুপার ওভার কোর্ট ৯শ’ থেকে ১ হাজার ৩শ’ টাকা। ছেলেদের হাফ ও ফুল সোয়েটারের দাম ৩শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা । স্কুল ড্রেস ২শ’ ৫০ টাকা থেকে ৩শ’ ৫০ টাকা। বেবী সোয়েটার ৪শ’ ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩শ’ টাকা । ছেলে ও মেয়েদের জ্যাকেট প্রকার ভেদে ৯শ’ টাকা থেকে ১ হাজার ৪শ’ টাকা। মাফলার ১শ’ টাকা থেকে ৩শ’ ৫০ টাকা।
×