ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কোন সুযোগ নেই ॥ ফের ভোট পেছানোর দাবিতে আজ ইসিতে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৪ নভেম্বর ২০১৮

কোন সুযোগ নেই ॥ ফের ভোট পেছানোর দাবিতে আজ ইসিতে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফের জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে আজ বুধবার নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এতে নেতৃত্ব দেবেন ফ্রন্টের আহŸায়ক ড. কামাল হোসেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাক্ষাত চেয়ে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নাম রয়েছে; যারা সাক্ষাতপর্বে অংশ নেবেন। এদিকে যৌক্তিক কারণেই নির্বাচন আর পেছানোর সুযোগ নেই বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা মঙ্গলবার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্রিফিং ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। মঙ্গলবার মতিঝিলে ড. কামালের চেম্বারে জোটের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের আজ ইসিতে যাওয়ার তথ্য জানান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার সন্ধ্যায় এ বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও কামাল হোসেনের অসুস্থতার কারণে তা বাতিল করা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে একে একে ফ্রন্ট নেতারা আসতে থাকেন কামাল হোসেনের চেম্বারে। বৈঠকে ইশতেহার কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। নির্বাচন করা না করার প্রশ্নে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে নানা নাটকীয়তা চলছিল কয়েকদিন ধরেই। নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণার আগেই বার বার তাদের পক্ষ থেকে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ঠিক করে তফসিল ঘোষণা করে ইসি। এ নিয়েও নানা আপত্তি ফ্রন্ট নেতাদের। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তির মুখে দ্বিতীয়বার তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নতুন তফসিলে নির্বাচন এক সপ্তাহ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। এতেও ফের আপত্তি ঐক্যফ্রন্টের। তারা চায় নির্বাচন আরও অন্তত এক মাস পেছানো হোক। যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার মঙ্গলবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কোন অবস্থাতেই আর নির্বাচন পেছানো সম্ভব নয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন পেছানোসহ কিছু বিষয় নিয়ে ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করে ইসিকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহŸান জানানো হবে বলেও জানান ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেসব ব্যবস্থা নেয়া উচিত তা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। রেওয়াজ ছিল, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তফসিল ঘোষণা করা, কিন্তু তা করা হয়নি। আমরা এতে অত্যন্ত হতাশ হয়েছি। আমরা মনে করছি, নির্বাচন কমিশন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আগ্রহী নয়। তিনি বলেন, আমাদের যে দাবিগুলো ছিলÑ আলোচনা করে এক মাস তফসিল পিছিয়ে দেয়া, এটা অত্যন্ত জরুরী। এজন্য যে, যে সময়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, তখন বড়দিনের ছুটি থাকবে। এদিনে আমাদের খ্রীস্টান স¤প্রদায়ের লোকজন, তারা উৎসবের আমেজে থাকবেন। এটা তাদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান। এছাড়া নববর্ষ আসছে, সেটাও একটা বড় অনুষ্ঠান। তখন যে বিদেশী পর্যবেক্ষকরা আসবেন, সেই সুযোগও থাকবে না যদি নির্বাচন ওই সময়টাতে (৩০ ডিসেম্বর) হয়। এছাড়াও কিছু বিষয় আছে, যা নিয়ে আগামীকাল দুপুর ১২টায় নির্বাচন কমিশনে আমরা আলোচনা করার জন্য যাব। ড. কামাল হোসেনসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দও থাকবেন। আমরা আশা করব, আমাদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে ইসি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। ফ্রন্টের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৈঠক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে যে, আগামী ১৬ নবেম্বর ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতারা জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে বসবেন বলেও মির্জা ফখরুল জানান। চলমান রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা এদিন জরুরী বৈঠকে মিলিত হন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর মতিঝিলে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন ও গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও বৈঠকে যোগ দেন। ইসিকে ঐক্যফ্রন্টের চিঠি ॥ ১৩ নবেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর এ চিঠি দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক। জোটটির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে একটি রেওয়াজ ছিল যে, নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে তফসিল ঘোষণা করে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রে এ রেওয়াজ মানা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সংলাপ শেষ হওয়ার আগেই তড়িঘড়ি নির্বাচন কমিশন একতরফাভাবে তফসিল ঘোষণা করে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে একমাস নির্বাচন পেছানোর দাবি করলেও সরকারের পরামর্শক্রমে নির্বাচন ৭ দিন পিছিয়ে পুনর্তফসিল ঘোষণা করা হয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কোন আলোচনা করা হয়নি। এমতাবস্থায় সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন করার স্বার্থে আমরা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আগামীকাল ১৪ নবেম্বর দুপুর ১২টায় আপনার দফতরে এসে নির্বাচনের তফসিলসহ সামগ্রিক বিষয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলের মধ্যে থাকবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আ স ম আব্দুর রব, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, মোস্তফা মোহসীন মন্টু, মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মোকাব্বির খান, এস এম আকরাম ও আবদুল মালেক রতন। ইশতেহার কমিটি ॥ একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহার তৈরির জন্য সরকারবিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিতে এ পর্যন্ত ছয়জনকে যুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ফ্রন্টের বৈঠকে এ কমিটি গঠন করা হয়। ঐক্যফ্রন্টের দায়িত্বশীল নেতারা জানান, ইশতেহার তৈরির কমিটিতে বিএনপি থেকে মাহফুজ উল্লাহ, গণফোরাম থেকে আ ও ম শফিক উল্লাহ, নাগরিক ঐক্য থেকে ডাঃ জাহেদ উর রহমান, জেএসডি থেকে শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের অধ্যক্ষ ইকবাল সিদ্দিকী এবং ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী আছেন। সিইসি যা বললেন ॥ এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আরও পিছিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারিত আছে। এরপর আর নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য ৪ নবেম্বর তফসিল ঘোষণা এবং ২১ ডিসেম্বর নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ছিল। রাজনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ৮ তারিখের তফসিলে ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখন সব দল নির্বাচনে আসছে। রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধে নির্বাচন পেছানো হয়েছে। এরপর নির্বাচন পেছানোর আর কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, নির্বাচনের এক মাসের মধ্যে নতুন সরকার গঠিত হবে। হাতে সময় কম। ২৯ থেকে ৩০ জানুয়ারি মধ্যে সংসদ বসবে। ফলে যারা নির্বাচিত হবেন এই সময়ের মধ্যে গেজেট দিতে হবে। এমপিরা শপথ নেবেন। এছাড়াও জানুয়ারি মাসে বিশ্ব এজতেমা রয়েছে। সেখানে দায়িত্ব পালনের জন্য সারাদেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আনা হবে নিরাপত্তার জন্য। এ অবস্থায় নির্বাচন পেছানোর কোন সুযোগ নেই। মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্রিফিং ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি এসব কথা বলেন। গত ৮ নবেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনঃতফসিলে নির্বাচন ৭ দিন পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর করা হয়েছে। নির্বাচন পেছানোর পর ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি থেকে নির্বাচন এক মাস পেছানোর দাবি জানানো হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন পেছানোর দাবিতে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করা হবে। তবে ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির পক্ষ থেকে যতই নির্বাচন পেছানোর দাবি জানানো হোক না কেন, নির্বাচন যে আর পেছানোর সুযোগ নেই তা মঙ্গলবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কেন নির্বাচন আরও পেছানোর সুযোগ নেই তার ব্যাখ্যায় তিনি দুটি কারণও উল্লেখ করেছেন। বলেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। এরপরে আর এটা পেছানোর সুযোগ নেই। কেন পেছানো যাবে না, নানা কারণে আপনাদের (রিটার্নিং কর্মকর্তা) জানা দরকার। প্রথমত, নির্বাচনের ৩০ দিনের মধ্যে সংসদ অধিবেশন বসতে হবে। আপনাদের কাছ থেকে ফলাফল আসবে। এর জন্য ২৯ দিন কিন্তু খুব বড় একটা সময় নয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ৩০০ আসনের গেজেট তাড়াতাড়ি সম্ভব হবে না। দ্বিতীয়ত, টঙ্গীতে তবলীগ জামাতের বিশ্ব এজতেমা ১১ তারিখে বলে আমাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। এখানে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বাইরে থেকে মানুষ আসে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়। বিভিন্ন জেলা থেকে তাদের আনতে হয়, ৮-১০ দিন সময় লাগে। ১ থেকে ২ তারিখের মধ্যেই তাদের ঢাকায় আনতে হয়। আবার ঢাকা থেকে ফেরত পাঠাতে হয়। ৩০ তারিখ আমাদের জন্য অত্যন্ত কমপ্যাক্ট টাইম। এজন্য যে সময় দেয়া দরকার, সেটা আমরা বিভিন্ন কারণে পারিনি। তিনি আরও বলেন, খ্রিস্টান স¤প্রদায় আমাদের বলেছে, আগে বা পরে তাদের অনুষ্ঠানের কাছাকাছি যেন নির্বাচন না হয়। সে বিষয়টি আমরা বিবেচনায় নিয়েছি। ৪ নবেম্বর তফসিল দিয়ে ২১ ডিসেম্বর ভোট করার ইচ্ছা ছিল। পরে যখন তারা (খ্রিস্টান স¤প্রদায়) অনুরোধ করল, তখন ৮ তারিখে তফসিল ঘোষণা করে ২৩ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ দেয়া হয়েছিল। এরপর সব রাজনৈতিক দল তফসিল পেছানোর অনুরোধ করল। আমরা খুশি হয়েছি। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ দিয়েছি। ৩০ তারিখের পরে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই। এটিকে সামনে রেখেই আপনাদের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এ ধরনের পরিবেশে নির্বাচন আগে কখনও অনুষ্ঠিত হয়নি। সরকার, সংসদ থেকে যে নির্বাচন হচ্ছে তা আগের যে কোন নির্বাচনের চেয়ে ভিন্ন। আগে কখনও রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের অধীনে নির্বাচন, কখনও সামরিক শাসনের অধীনে নির্বাচন এবং কখনও তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। গতবার সংসদ রেখে নির্বাচন হলেও আগেরবারের চেয়ে এবারের ভিন্ন প্রেক্ষাপট এজন্য যে আগেরবার সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। কিন্তু আমরা আনন্দিত যে এবার সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ফলে যে নির্বাচন আসছে তা পরিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। এ অবস্থায় রিটার্নিং কর্মকর্তার ওপর জনগণের গভীর দৃষ্টি রয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দায়িত্বও বেড়ে গেছে। একাদশ নির্বাচনের জন্য আপনাদের একটি ম্যানুয়াল বা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের ম্যানুয়ালের নির্দেশনা অনুসরণ করে কাজ করবেন। চৌকস অভিজ্ঞতা দিয়ে পরিস্থিতি উপলব্ধি করার চেষ্টা করবেন। সিইসি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আরও বলেন, কারো অবহেলায় যেন অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন বিঘিœত না হয়। আইন অনুসারে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করতে হবে। একমাত্র পোলিং বুথ ছাড়া সব জায়গায় আপনাদের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। সংবিধান অনুসারে কমিশন যে দায়িত্ব নিয়েছে নির্বাচনকে সামনে রেখে সেই দায়িত্ব আপনাদের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। এখন থেকে নির্বাচনের সব দায়িত্ব আপনাদের। আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে কারো ব্যক্তিগত সন্দেহ সংশয় আপনাদের ওপর পড়বে না। নির্বাচনে যারা প্রার্থী এবং এলাকায় যারা রাজনীতি করেন তারা সম্মানিত ব্যক্তি। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। প্রার্থীদের প্রতিপক্ষ ভাবা যাবে না। ব্যক্তিগত ব্যর্থতার কারণে সার্বিক নির্বাচন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশনের কোন হাত থাকে না। ইসির গুরুত্বপূর্ণ অংশ রিটার্নিং কর্মকর্তারা। সব দায়িত্ব আপনাদের। আইন মেনে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করলে এবং অংশীজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখলে, আপনাদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা বাড়বে। সহযোগিতাও করবে। ব্যক্তিগত ব্যর্থতার দায়ে যেন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। এবার নির্বাচনে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে। সরকার বহাল থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় এই নির্বাচনের মাধ্যমে সেটা প্রমাণ হবে।
×