ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কেটে গেছে, এটা শেখ হাসিনারই সাফল্য

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৪ নভেম্বর ২০১৮

নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কেটে গেছে, এটা শেখ হাসিনারই সাফল্য

বিভাষ বাড়ৈ ॥ কদিন আগেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে মুখোমুখি অবস্থানে ছিল সরকার ও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত বিরোধী পক্ষ। এমনকি নির্বাচন নিয়ে সংলাপ হতে পারে এমন আশাও করা যাচ্ছিল না। ফলে জনমনে ক্রমেই বাড়ছিল উৎকণ্ঠা। গত নির্বাচনের মতো বিরোধীদের লাগাতার অবরোধের নামে নাশকতার আশঙ্কাও বাড়ছিল। তবে বিরোধীদের অবাক করে প্রধানমন্ত্রীর নেয়া সংলাপে পাল্টে গেল পরিস্থিতি। দুদিন আগেও শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলে যারা হুমকি দিয়েছেন তারা সবাই এখন সংবিধান মেনে সরকারের অধীনে নির্বাচনে প্রস্তুত। এ অবস্থাকে ক্ষমতাসীনদের ‘বিশাল রাজনৈতিক সাফল্য’ বলে অভিহিত করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি নির্বাচনের আগে একটি বড় সফলতা। তবে দুই দফা সংলাপের পর নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েও এখন আবার নানা অজুহাত তুলে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিচ্ছে বিএনপি সমর্থিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এক দফা নির্বাচন পিছানোর পরও এক মাস পিছানোর দাবি নিয়ে আজ বুধবার নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সদিচ্ছার কারণে সংলাপের রাস্তায় দেশে যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে তাতে শেষ মুহূর্তে এসে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের মতো ঘোষণায় ক্ষমতাসীনদের ক্ষতির আশঙ্কা থাকবে না। বরং গত দুই মেয়াদে সরকারের উন্নয়নের ফলে ইতিবাচক ভাবমূর্তি নিয়েই নির্বাচন করতে পারবেন ক্ষমতাসীনরা। বাংলাদেশ এখন রোলমডেল অন্যদেশগুলোর কাছেও। যেখানে পাকিস্তানও এখন বাংলাদেশের মতো হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। ফলে বিএনপি নির্বাচনে না এলে আখেড়ে মূল্য তাদেরই দিতে হবে। এমনকি আগামী ৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকলে দলটির অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়তে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে চলা বিভিন্ন জোট ও দলের সঙ্গে সংলাপে ৭০টি দলের ২৩৪ জন প্রতিনিধির সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা ৫ মিনিট আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোটের নেতারা। বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোটের ২৩ দল ছাড়া প্রতিটি দলই সংলাপে সংবিধান মেনে সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। সে অনুসারে বাকি সকল দল সংলাপের পরপরই শুরু করেন নির্বাচনের প্রস্তুতি। ড. কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বাকি নেতারা প্রথম দিনের সংলাপেই সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তবে বিএপির নেতারা অনড় ছিলেন সরকারের পদত্যাগ, তাদের নেত্রীর, মুক্তিসহ তাদের ঘোষিত ৭ দফায়। তবে সেই অনড় অবস্থায় বেশি সময় অটুট থাকেননি। সংলাপে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের ইতিবাচক মনোভাবে দেশের অধিকাংশ দল ও সাধারণ মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করলে বিএনপি নেতারাও ইতিবাচক অবস্থান নিয়ে আবার সংলাপের আশা প্রকাশ করেন। এরপর দ্বিতীয় দিনের সংলাপের পর সুনির্দিষ্টভাবে ৭ দফা দাবি পূরণের ওয়াদা না পেলেও প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যায় বিরোধী পক্ষ। সংলাপের ফল হিসেবে এই মুহূর্তে সরকার সমর্থত সকল দল, বিএনপি সমর্থিক দল ছাড়াও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে দেশের প্রতিটি দল। নিবন্ধন না থাকলেও তথ্য মিলছে, বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে গোপনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে মাঠে সক্রিয় জামায়াতও। জাতীয় পার্টি ও ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট ছাড়াও তফসিল মেনে নির্বাচনের কাজে সক্রিয় সকল ইসলামী দল। সংলাপের ফলে বাংলাদেশের হঠাৎ ইতিবাচক রাজনৈতিক পরিবর্তন নিয়ে ইতোমধ্যেই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী গণমাধ্যম ‘দি ইকোনমিস্ট। ‘নির্বাচনের আগে হঠাৎ নমনীয় ক্ষমতাসীন দল’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ইকোনমিস্ট বলেছে, এক সপ্তাহ আগেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে মানুষের চিন্তাভাবনা অন্য রকম ছিল। অনেকেই মনে করছিল, আগামী নির্বাচনে খুব বেশি ভোট পড়বে না। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবারও যেভাবেই হোক নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে চাইবে। কিন্তু হঠাৎ করেই দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। পরিবর্তিত এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মানুষ আশা করছে, ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত অক্টোবর মাস দুটি বড় চমক নিয়ে এসেছে। মাসের মাঝামাঝি সময়ে বড় দুই রাজনৈতিক দলের একটি বিএনপি তাদের দীর্ঘদিনের ডানপন্থী মিত্রদের বাদ দিয়ে তুলনামূলক উদার ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট করে। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন এই জোটের নাম জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এর চেয়েও বড় চমকটি আসে পরে। কঠোর অবস্থানে থাকা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হঠাৎ করেই নমনীয় হয়। তারা ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দুই দফায় সংলাপ হয়। এদিক তফসিল ঘোষণার তিন দিন পর বিএনপিসহ তাদের মিত্রদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণায় সরগরম হয়ে উঠেছে নির্বাচনের মাঠ। রবিবার দিনভর সারাদেশে আলোচনার বিষয়ও ছিল এটিই। এর আগে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অংশগ্রহণের অনিশ্চয়তার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার মিত্র দলগুলো ভোটের কাজে নেমে পড়লেও বিএনপির স্পষ্ট ঘোষণা না আসায় দশম সংসদ নির্বাচনের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কাই উঁকিঝুঁকি মারছিল মানুষের মনে। তবে তিন দিনের মাথায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলন থেকে জোটের প্রধান নেতা কামাল হোসেন ও মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেন। পরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলও ভোটে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত জানালে নির্বাচন নিয়ে স্বস্তির নিশ^াস ফেলেন সাধারণ মানুষ। বিরোধী দলগুলোর ইতিবাচক ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবাই যেহেতু নির্বাচন করবে সেজন্য সবাইকে ধন্যবাদ ও স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা সকলে মিলে নির্বাচন করব। জনগণ যাকে চাইবে তাকে ভোট দেবে- সেটাই আমরা করব। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই সংলাপের প্রেক্ষাপট ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ঐক্যফ্রন্টের সংগে সংলাপে আমি কিন্তু একটা কথাও বলিনি প্রথমে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাদের কথা শুনেছি। শেষে গিয়ে আমি কথা বলেছি। সেখানেও বলেছি কোনটা কোনটা আমরা করতে পারি, কোনটা রাষ্ট্রপতির, কোনটা নির্বাচন কমিশনের, কোনটা কীভাবে করা যায় এসব নিয়ে বলেছি। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই সকলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সংলাপে বসেছি। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, দেশের মানুষ তার পছন্দ মতো ভোট দিতে পারুক, তারা তাদের পছন্দের সরকার বেছে নিক; সে কারণেই আমি ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বার বার তাকে বিএনপির পক্ষ থেকে অপমান করা সত্ত্বেও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে অবাধ ও সকলের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে জন্য তিনি ঐ দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপে বসেছেন। এই রকম অপমান তারা করেছে, হয়তো আমরা ভুলতে পারব না। তারপরও, আগামীতে সবার অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা দায়িত্ব মনে করে আমরা সংলাপে গিয়েছি। আমরা চাই সকলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এদেশের মানুষকে যাতে ঐ জ্বালাও-পোড়াও- এ ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয়। সংলাপের ফল হিসেবে সারাদেশেই নির্বাচন নিয়ে ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। কদিন আগের ভয় নেই জনমনে। ক্ষমতাসীন জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা আগেই জানিয়েছিল, ভোট নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই সরগরম আওয়ামী লীগের কার্যালয়। জাতীয় পার্টিও নির্বাচনের প্রচারে নেমে পড়েছে আগেই। এখন ভোটের মাঠে বিএনপিসহ তাদের রাজনৈতিক মিত্ররাও। অবশেষে বাম গণতান্ত্রিক জোটও নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা যদিও বলছেন, বিএনপির পক্ষে এবার নির্বাচনে আসা ছাড়া কোন বিকল্প ছিল না। বিএনপিসহ অধিকাংশ দলের বর্জনে সহিংসতার মধ্যেই পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালে হয়েছিল দশম সংসদ নির্বাচন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় বিএনপি সেই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। একই দাবিতে অনড় থেকে বিএনপি বিভিন্ন সময় সরকারের প্রতি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে এলেও প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। আওয়ামী লীগ নেতারা এমনও বলছিলেন, বিএনপি না এলে আগের বারের মতোই ভোট হয়ে যাবে। এবার তাই নির্বাচনে যাওয়ার একটা পথ বিএনপি খুঁজছিল বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সংলাপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাংলাদেশে ইইউ-র হেড অব ডেলিগেশন রেন্সজে তেরিংক গণমাধ্যমকে বলেছেন, এটা নির্বাচনের জন্য একটি ভাল অগ্রগতি। যদিও নির্বাচনে ইইউ-র পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর বিষয়টিও আবারও নিশ্চিত করেন তিনি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ঐক্যজোটের মধ্যে সংলাপকে স্বাগত জানিয়েছে জার্মানি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত পেটার ফাহরেনহোলজ দেখা করে জানান, ‘সংলাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি আশা করেন, নির্বাচন অত্যন্ত ভাল হবে এবং সবাই সামনের দিকে এগিয়ে যাবে’। নির্বাচনকালীন সরকার, ইভিএম, সেনা মোতায়েনসহ নানা বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কাজ শুরু করছে ইসলামী দলগুলো। ইতোমধ্যে কয়েকটি দল প্রাথমিকভাবে প্রার্থী তালিকাও চূড়ান্ত করেছে। কিছু দল ক্ষমতায় যেতে বড় জোটের শরিক হতে বা তাদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টাও করছে। জনসংযোগ শুরু করেছেন দলগুলোর নেতারা। নির্বাচন সামনে রেখে হয়েছে কিছু নতুন জোট। ১৫টি সমমনা রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি নিয়ে গঠিত ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক এ্যালায়েন্স ১৫ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করে। এ জোটের নেতৃত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ও তরিকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপি। ৬ নবেম্বর গণভবনে সংলাপে অংশ নেয় জোটের নেতারা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাশে থাকার চেষ্টা জোটের নেতাদের। ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক এ্যালায়েন্সের কো-চেয়ারম্যান এম এ আউয়াল বলেন, আমরা নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেব। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এম এ আউয়াল বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও ইসলামের প্রচার অবদান রয়েছে। আমরা আগেও তাদের পাশে ছিলাম। আগামীতেও থাকব। এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সঙ্ঘাতের বিপরীতে শান্তিপূর্ণ এ পরিবেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনায়কোচিত পদক্ষেপের ফল। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলছিলেন, সকল দলকে নির্বাচনে আনতে পারা অবশ্যই একটি বড় সফলতা। যারা আগের নির্বাচনে কেবল আসেইনি। তারা অবরোধের নামে নাশকতা চালিয়েছে। এবার তাদের নির্বাচনে আনতে পারা দেশের রাজনীতির জন্য ইতিবাচক অগ্রগতি। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. সফিউল আলম ভূইয়া বলছিলেন, আসলে আগের নির্বাচনে না এসে বিএনপি যে মূল্য দিয়েছে তাতে এবার তাদের নির্বাচনের আসার বিকল্প ছিল না। তার পরেও যে আতঙ্ক ছিল জনমনে নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনায়কোচিত পদক্ষেপের ফলে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য, দেশের জন্য বড় একটি কাজ হয়েছে। সকলে এখন নির্বাচনমুখী। নেই সঙ্ঘাত। সকল দলকে নির্বাচনে আনাকে শাসক দলের বিশাল রাজনৈতিক সাফল্য বলে অভিহিত করেছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিপপের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ। তিনি বলছিলেন, নির্বাচনের আগে এটা ক্ষমতাসীনদের বড় সফলতা। তবে এক্ষেত্রে বড় কৃতিত্ব পান বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বলতে গেলে তার একক কৃতিত্বে দেশে এখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। সঙ্ঘাতের বিপরীতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি নির্বাচনের আগে তাই ক্ষমতাসীনদের একটি বড় সফলতা বলতেই হবে। তিনি আরও বলছিলেন, সংলাপ দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবেশ দিয়েছে। এখন যে পরিবেশ হয়েছে এটাই গণতন্ত্র। গণতন্ত্র মানে তো কেবল নির্বাচন নয়। সকল মত পথের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই গণতন্ত্র। এ বিশেষজ্ঞ বলছিলেন, সংলাপের উদ্যোগ ও সেখানে সরকারের নেয়া ইতিবাচক অবস্থান ইতিবাচক ফল দিয়েছে। এদিকে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আলী সিকদার বলেন, সরকার যে সব দলকে নির্বাচনে আনতে সক্ষম হয়েছে তা সারা বিশে^ প্রশংসিত হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশে^ নন্দিত নেত্রী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সকল দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সরকারের বড় একটি সফলতা।
×