বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ‘নৌকা যার, সবাই তার, সিদ্ধান্ত অমান্য করলেই বহিষ্কার’। এমন কড়া বার্তা নিয়ে আজ বুধবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলবেন দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে অতীতের মতো এবার আসন, জেলা কিংবা বিভাগওয়ারী মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার নেয়া হবে না। সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীর সামনে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বেলা ১১টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ডাকা হয়েছে। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারী ৪ হাজার ২৩ জনকেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আহŸান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ধানমণ্ডি কার্যালয়ে প্রাথমিক সাক্ষাতকার শেষে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের গণভবনে মধ্যাহ্ন ভোজে আপ্যায়ন করা হতে পারে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এবার সর্বাধিক সংখ্যক মনোনয়ন প্রত্যাশী দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। নির্বাচন নিকটে থাকায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সবার সাক্ষাতকার নেয়া সম্ভব নয়। এ কারণে তাদের একসঙ্গে ডাকা হয়েছে। তাদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থীদের পক্ষে একাট্টা হয়ে নির্বাচনী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিতে পারেন। সেই সঙ্গে দলের যে কোন পর্যায়ের নেতা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে গেলে তার বিরুদ্ধে আজীবন বহিষ্কারের মতো সাংগঠনিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারীও উচ্চারণ করতে পারেন তিনি।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরমের অঙ্গীকার নামায় স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করলে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এমন অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করেই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ফরম জমা দিয়েছেন। সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে একথাটিই পুনর্বার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন স্বনামধন্য জরিপ প্রতিষ্ঠান এবং দলের অভিজ্ঞ একাধিক টিমের মাধ্যমে কয়েক দফা মাঠ জরিপ চালিয়ে তিনশ’ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জনপ্রিয়তার বাস্তবচিত্র এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ল্যাপটপে বন্দী। নেতা-এমপি-মন্ত্রীরা যত বড় বড়ই শোডাউন করুন না কেন, প্রধানমন্ত্রীর হাতেই রয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিজ নির্বাচনী এলাকায় সর্বশেষ অবস্থা ও বিস্তারিত আমলনামা।
গত টানা ১০ বছরে কোন মন্ত্রী-এমপি বা সম্ভাব্য প্রার্থী নিজ এলাকায় কী করেছেন, জনপ্রিয়তা বেড়েছে নাকি কমেছে, অনিয়ম-দুর্নীতি কিংবা দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে কিনা, এ সকল আমলনামা রয়েছে দলীয় প্রধানের হাতে। তাই সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক থেকে সর্বশেষ জরিপসহ সবকিছু বিবেচনা করেই এবার আওয়ামী লীগ একক প্রার্থীতা ঘোষণা করবে। তবে জোট-মহাজোটের নির্বাচনী হিসাবের অঙ্কে এবার অনেক জনপ্রিয় দলের এমপি-নেতার কপাল পোড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলের বৃহত্তর স্বার্থে এসব নেতাদের জোট-মহাজোটের প্রার্থীদের নিশ্চিত আসন ছেড়ে দিতে হতে পারে। এসব বিষয়গুলোও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে সাক্ষাতকার অনুষ্ঠানে উঠে আসতে পারে বলে জানা গেছে।