ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির

শাস্তিযোগ্য অপরাধ

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

শাস্তিযোগ্য অপরাধ

একেবারে নিখাঁদ সত্য যে গুজবের ধরন এখন পাল্টে গেছে। এই গুজব এখন ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশি স্থান পেয়েছে। তাই আমরা বলি ডিজিটাল গুজব। আমি বলব গুজব হচ্ছে ইন্টারনেটের সবচেয়ে বড় কালিমা। ইন্টারনেটের সবচেয়ে বড় অপব্যবহার। প্রশ্ন হচ্ছে কেন এই ধরনের ডিজিটাল গুজবের কথা আমরা বলছি? কেন হচ্ছে? প্রথম হচ্ছে ব্যক্তিগতভাবে একজন একজনকে ঘায়েল করতে নানা রকম মিথ্যা মন্তব্য, বিকৃত ছবি ছড়িয়ে দিয়ে অপরের মানসম্মান নষ্ট করা। এই রকম প্রচুর গুজব ছড়ানো হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই ধরনের গুজব থেকে ব্যক্তিগত রেষারেষি ও শক্রতা সৃষ্টি হয়। এবার বলি সবচেয়ে জঘন্য গুজবের কথা। সেটি হচ্ছে দেশে শান্তি বিনষ্ট করা ও বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার নানা কুটিল গুজব ছড়িয়ে দেওয়া দেশে ও বিদেশে। আর এর সহজ অপব্যবহার হচ্ছে ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। আবার দেখুন কোন কোন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াও বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য ও সংবাদ পরিবেশন করে গুজব ছড়িয়ে দেয় জনগণের মাঝে। আর তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলে আসে শেয়ারের মাধ্যমে। তিলকে তাল করা এটি হচ্ছে গুজবের মুল মন্ত্র। এই ধরনের গুজবের সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা। একটি অপ্রীতিকর ঘটনা হয়েছে। তারপর একটি পক্ষ চিন্তা করবে এই ঘটনার দ্বারা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করা যায় কিনা। যখন দেখে পাবলিক সেন্টিমেন্টে ঘটনাটি আঘাত লেগেছে তখনই তারা সুযোগ নিবে কিভাবে উস্কানি দিয়ে ঘটনাটিকে বড় করে তোলা। তখনই নানা রকম মন্তব্য ও ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তাদের পক্ষের লোকেরা। তখন দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় আর তারা সুযোগ নেয় তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে হাসিল করায়। ফলে আমরা দেখতে পাই আন্দোলন নামে একটি ডিজিটাল গুজবের গর্ভের সন্তান। তখন সরকারকে স্বাভাবিকভাবে কঠোর হতে হয় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে। আবার সেটিও নিয়ে গুজবের নাটকের সাজানো হয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয়ের মাধ্যমে। দেখা গেছে তাদের কোন কিছু সফল হয় না। কারণ জনগণ এই সব নিয়ে আর ভাবে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই আইন কার্যকর হবে। তারপরও থেমে নেই গুজব। যারা এই ধরনের গুজব ছড়ায় তাদের শাস্তি শুধু আইনের ভাষায় নয়, তাদের ডিজিটাল শাস্তি হওয়া দরকার। যাদের আই ডি থেকে গুজব ছড়ানো হয় তাদের শনাক্ত করে তারা যেন নামে-বনামে আইডি খুলতে না পেরে সেই ব্যবস্থা করা আর তাদের একটি তালিকা তৈরি করে তাদের গুজবের হ্যাকার হিসেবে সবার কাছে তুলে ধরা যাতে কেউ যেন তাদের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব না করে। আইনের কাজ আইন করবে। আর আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে জেলাওয়ারী টিম গঠন করে ফেসবুকে নজরদারি করতে হবে। সরকার এই ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে। পরিশেষে আমি ডিজিটাল গুজবকে বলব ইন্টানেটের অপব্যবহারের একটি অবৈধ ফসল যার কোন স্বীকৃতি নেই, থাকতে পারে না। আমাদের উচিত এই ধরনের ডিজিটাল গুজবকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করা। দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম থেকে
×