ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফাস্টট্র্যাক সরকারী বিদ্যুত কেন্দ্রকেও এবার গুনতে হবে জরিমানা

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

ফাস্টট্র্যাক সরকারী বিদ্যুত কেন্দ্রকেও এবার গুনতে হবে জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারী ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পের বিদ্যুত কেন্দ্রকেও নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে আসতে না পারলে জরিমানা গুনতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে উৎপাদনে না আসতে পারলে বেসরকারী উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জরিমানা নেয়ার বিধান রয়েছে। এখন থেকে সরকারী যেসব বিদ্যুত কেন্দ্রকে ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় নেয়া হয়েছে তাদের বেলায় বেসরকারী উদ্যোক্তাদের মতো একই বিধান কার্যকর হবে। বিদ্যুত বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিদ্যুত সচিব আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ গ্রীষ্ম মৌসুমের সঙ্কট সামাল দিতে তরল জ¦ালানিনির্ভর বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করছে। বেসরকারী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সরকারী কোম্পানিগুলোকেও এই কাজ ভাগ করে দেয়া হয়েছে। আগামী বছর গ্রীষ্মে আরও এক থেকে এক হাজার ২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুতের নতুন চাহিদা তৈরি হবে। পাশাপাশি গত গ্রীষ্মের সঙ্কটও রয়ে গেছে ৫শ’ মেগাওয়াট। আগামী গ্রীষ্মে প্রায় এক হাজার ৭শ’ মেগাওয়াটের যে বিদ্যুত সঙ্কট সৃষ্টি হবে, তা সামাল দিতে কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। ইঞ্জিনচালিত এসব কেন্দ্রের উৎপাদনে আসার সময় ছয় থেকে নয় মাস বেঁধে দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, বেসরকারী কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকার কঠোর হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে উৎপাদনে আনতে কিভাবে তাদের এলডি (জরিমানা) বাড়ানো যায় সে বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেসব উদ্যোক্তা নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের চুক্তি বাতিল করে দিতে বলা হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুত কেন্দ্রের মোট নির্মাণ ব্যয়ের দশমিক এক ভাগ হারে প্রতিদিন এলডির বিধান রাখা হয়েছে। সরকার দ্রুততম সময়ে বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য কয়েক ধাপে তিন হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত ফাস্টট্র্যাক বিদ্যুত প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। মোট তিন হাজার মেগাওয়াটের এসব প্রকল্পে সবই তেলচালিত। কেন্দ্রগুলোর জন্য মেগাওয়াট প্রতিদিন ২শ’ ডলার করে এলডি নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ যে নির্দিষ্ট তারিখে বিদ্যুত কেন্দ্রটির উৎপাদনে আসার কথা, সেদিন কেন্দ্র উৎপাদনে আসতে না পারলে প্রতি মেগাওয়াটের জন্য ২শ’ ডলার করে জরিমানা দিতে হবে। তবে কত দিন ওই জরিমানা দিতে হবে এমন সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। চাইলে বিনিয়োগকারী অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জরিমানা দিয়ে নিজের চুক্তি বহাল রাখতে পারে। সরকার দ্রুত বিদ্যুত উৎপাদন করার সময় কুইক রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য প্রতি মেগাওয়াট প্রতিদিনের জন্য ৫শ’ ডলার জরিমানার বিধান রেখেছিল। অর্থাৎ এক শ’ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্রের উৎপাদন সীমা একদিন পার হলেই ৫০ হাজার ডলার জরিমানা দিতে হতো। এক বছর পর্যন্ত এভাবে জরিমানা গ্রহণের বিধান রাখা হয়েছিল। অর্থাৎ এক বছর পরে আর জরিমানা দিতে হতো না। তবে এখন বিদুত বিভাগ মনে করছে ২শ’ ডলারের এই জরিমানা আরও বৃদ্ধি করা জরুরী। অনেক বিনিয়োগকারীই জরিমানা কম হওয়ায় বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে করেছেন। কোন কোন বেসরকারী উদ্যোক্তা দিনের পর দিন প্রকল্প ঝুলিয়ে রেখেছে। মিরপুরের এক সরকারদলীয় এমপির বিরুদ্ধে বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ নিয়ে দীর্ঘদিনেও শেষ না করার অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারী উদ্যোক্তাদের মতোই কোন কোন সরকারী কোম্পানিও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে দেরি করে। এসব প্রকল্পের কাজ দ্রুততার সঙ্গ শেষ করতেই জরিমানার বিধান যোগ করা হচ্ছে বলে বিদ্যুত বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান।
×