ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নতুন অনলাইন পত্রিকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী

১৬ কোটি মানুষের এই দেশে জাগরণ আসছে

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

১৬ কোটি মানুষের এই দেশে জাগরণ আসছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের ১৬ কোটি মানুষের ১৬ কোটি সমস্যা ও সম্ভাবনার পাশাপাশি তাদের স্বপ্ন নিয়ে নতুন ‘দৈনিক জাগরণ’কে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আর অপরাধী খুনীদের বিপক্ষে, সাম্প্রদায়িকতা রুখতে দৈনিক জাগরণ জনতার পাশে থাকলে শত ভিড়েও নিজস্ব জায়গা করে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী হলে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দৈনিক জাগরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর মধ্য দিয়ে ‘মুক্তবুদ্ধির মুক্তিযোদ্ধা’ স্লোগানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী দেশে নতুন আরও একটি পত্রিকার সূচনা হলো। আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু করল দৈনিক জাগরণ নামের এ দৈনিকটি উদ্বোধন হয় পত্রিকাটির অনলাইন ভার্সনের। এ সময় কেক কেটে ও সুইচ টিপে দৈনিক জাগরণের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন দেশের অন্যতম প্রবীণ ও প্রথিতযশা, দেশের সাংবাদিক জগতের অভিভাবকতুল্য ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট সাংবাদিক দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান। উদ্বোধনকালে দৈনিক জাগরণের সম্পাদক ও প্রকাশক আবেদ খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, সাবেক বিচারপতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকসহ দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, সংস্কৃতিজন, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, অনেক পত্রিকার ভিড়ে দেশের সাংবাদিকতার জগতে ভিন্ন মাত্রা ও ভিন্ন স্বাদ নিয়ে আসবে দৈনিক জাগরণ। তিনি বলেন, অনেকেই এত পত্রিকা বা টেলিভিশনের কি দরকার এমন প্রশ্ন করেন। আমার উত্তর হচ্ছে, ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে ১৬ কোটি সমস্যা, ১৬ কোটি স্বপ্ন। এই মানুষের সুখ-দুঃখ দেখার বা বোঝার সক্ষমতা নিয়ে জাগরণ আসছে বলে আমার বিশ্বাস। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আর অপরাধী খুনীদের বিপক্ষে, সাম্প্রদায়িকতা রুখতে জাগরণ জনতার পাশে থাকলে শত ভিড়েও নিজস্ব জায়গা করে নেবে এই নতুন দৈনিকটি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের এই ক্ষণে চারদিকে অপরাধী ও খুনীদের সঙ্গে হাত মেলানো ও লেনদেনের মহোৎসব চলছে। আশা করি এই সময়ে জাগরণ পত্রিকাটি তার অনলাইন ভার্সনে এসব সত্য স্পষ্ট করে তুলে ধরবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে একটি চক্র গণতন্ত্রের নামে নির্বাচন নিয়ে অপরাধীদের পার করে দিতে তাদের বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে। জাগরণ পত্রিকা যেন তা রুখে দাঁড়াতে কাজ করে। উদ্বোধনকালে তোয়াব খান বলেন, আমি আশা করব জাগরণ, মুক্তবুদ্ধির জন্য মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সত্যের পথে থেকে কাজ চালিয়ে যাবে। তোয়াব খান বলেন, মুক্তবুদ্ধি নিয়ে মুক্তচর্চা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন। মুক্তচিন্তা নিয়ে উঠে আসা সত্য কথাগুলো অনেক সময় হারিয়ে যায়। আশা করি মুক্তবুদ্ধির চর্চায় জাগরণ পত্রিকাটি টিকে থাকবে। একইসঙ্গে জাগরণ নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে, দেশের সংবাদপত্রের জগতে নিজের স্থান করে নিতে পারবে। দেশের অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের কথা তুলে ধরে তোয়াব খান বলেন, আমি মনে করি সব জানালাই খোলা থাকা উচিত। তথ্যপ্রবাহ কভু আটকে রাখা যায় না। এখন ১২ থেকে ১৪ কোটি লোকের হাতে মোবাইল ফোন আছে। তার ফলে প্রতিমুহূর্তে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, তা অন্তত দশ কোটির মানুষের হাতে হাতে সচিত্র হয়ে উঠে যাচ্ছে। এখানে তথ্য-প্রবাহ আটকে রাখা খুব কঠিন, যা প্রায় অসম্ভব। তাই এই অবস্থায় দৈনিক জাগরণের অনলাইন ভার্সন উপযুক্ত এবং অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, আমি এই প্রত্যাশা করি। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে আবেদ খান বলেন, দৈনিক জাগরণ চেতনার কথা বলবে। মানবতার কথা বলবে। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করবে। বর্তমানে সংবাদপত্রের বাইরের লোকজন বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রের মালিক হওয়ার ফলে পেশাদার সাংবাদিকতার ওপর প্রভাব পড়ছে। যার ফলে সাংবাদিক হয়ে যান কর্মচারী। দৈনিক জাগরণের পথচলা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি তথাকথিত নিরপেক্ষ নই। আমি যে জাগরণের স্বপ্ন দেখি, সেই জাগরণ তথাকথিত নিরপেক্ষতার ভান ধরবে না। জাগরণ সত্যকে তুলে ধরবে। যে কোন সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে। তিনি বলেন, অবশ্যই জাগরণ প্রিন্টেড ভার্সনে যাবে। শুধু তাই নয়, জাগরণ একটা সাংবাদিকতার ইনস্টিটিউশনে পরিণত হবে। অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন সম্মতি প্রদান করায় তোয়াব খানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। পরে কেক কেটে দৈনিক জাগরণের পথচলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সাংবাদিক তোয়াব খান।
×