ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন কমিশনকে দৃশ্যমান-বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান বাম জোটের

প্রকাশিত: ০১:৫১, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

নির্বাচন কমিশনকে দৃশ্যমান-বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান বাম জোটের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাম গণতান্ত্রিক জোট-এর সভায় আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ-নিরপেক্ষ-অর্থবহ-গ্রহণযোগ্য করতে এখনও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে দৃশ্যমান-বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশন-এর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সভায় বলা হয়, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের মনোনয়নকে ঘিরে ব্যাপক শোডাউন, রাস্তা বন্ধসহ অন্যান্য ঘটনায় আচরণ বিধি লংঘনের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ায় নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। পরবর্তীতে বিএনপি অফিসের সামনের সহিংস ঘটনা চলমান নির্বাচনী পরিবেশের শঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। গণভবনকে ঘিরে সরকারী সুবিধা নিয়ে দলীয় প্রার্থীর সাক্ষাৎকার, প্রচার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রচার, নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকা ও আচরণ বিধি লংঘনের ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। প্রচার প্রোপাগান্ডা, মনোনয়ন বাণিজ্যসহ নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে টাকার খেলার যে উৎসব দেখা যাচ্ছে তা প্রতিকারেও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নেই। সভায় নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারী দলসহ সকল দল ও ব্যক্তিবর্গের জন্য সমসুযোগ প্রদানের দাবি জানানো হয়। সভায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের দল নিরপেক্ষ ভূমিকাও নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের মোশারেফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র ফখরুদ্দিন কবীর আতিক, গণসংহতি আন্দোলনের ফিরোজ আহমেদ, সিপিবি’র কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ। সভায় আসন্ন নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত করতে সকল মহলকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া আসন্ন নির্বাচনে বাম গণতান্ত্রিক জোট এর প্রার্থীদের আসন বণ্টন ও নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। মানুষ হত্যার পরিকল্পনা ছিল বিএনপির ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো এক বিবৃতিতে বিএনপি কার্যালয়ে মনোনায়ন প্রদানকে কেন্দ্র করে পুলিশের উপরে বর্বর আক্রমন, গাড়ি পোড়ানো ও ধংসাত্মক কার্যকলাপের নিন্দা করেছে। পার্টির পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, এটা বিএনপির সেই পুরনো অগ্নিসন্ত্রাসেরই আরেক রূপ জনগণের সামনে প্রকাশ হয়ে গেলো। এর মধ্যে বোঝা যায় যে বাংলায় একটা প্রবাদ আছে “কয়লা ধুলে না যায় ময়লা”। বিএনপির বেলায় সেটি বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য। বৃহস্পতিবার দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠনো বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচনকে বানচাল করার, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করা এবং একটা অশান্ত পরিবেশ তৈরী করার চেষ্টা করছে বিএনপি। ওরা চেয়েছিলো পিছনের দরজা দিয়ে একটি অশুভ শক্তিকে ক্ষমতায় বসানো। সেটা ব্যর্থ হয়ে তারা এখন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনে যে সাধারণ একটি প্রকাশ্যে গতিবিধির সুযোগ তারা পেয়েছে এবং এখানে সভাসমাবেশ মিছিল করতে পারছে সেটাকে কাজে লাগিয়ে আবার সেই পুরোন অগ্নি সন্ত্রাসে তারা ফিরে গেছে। বিবৃতিতে বলা হয় যে, ২০১৪ নির্বাচনের আগে তিন মাস ধরে তারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল এবং একই সঙ্গে তারা মানুষ হত্যায় মেতে উঠেছিল। এটা খুবই স্পষ্ট গতকাল তাদের মানুষ হত্যার পরিকল্পনা ছিলো। হেলমেট পরা, হাতে লাঠি নিয়ে হামলা করা, গাড়ী পোড়ানো এই যে পরিস্থিতির ছবি গুলো টেলিভিশনে ফুটেজে দেখা গেছে এটিই পূর্ব পরিকল্পনার প্রমান দেয়। একটি কথাই বিএনপি তরফ থেকে প্রায় সময় বলা হয় যে, তাদের নেতৃবৃন্দরা যখন কোন ঘটনায় জড়িত নয় তবুও তাদেরকে মামলায় জড়ানো হয়। গতকাল দেখা যায় যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন নেতার নেতৃত্বে এই মিছিল এসেছিলো এবং সেখান থেকে এর সুত্রপাত হয়। এর মধ্যে অভ্যন্তরীন বিরোধের একটি বিষয় সামনে চলে আসে। এটা স্পষ্ট যে পুলিশের উপর আক্রমন এটা তাদের পূর্ব পরিকল্পিত ছিলো। পুলিশ এখানে চরম ধৈর্য্য দেখিয়েছে আমরা পুলিশের এই ধৈর্য্যের প্রশংসা করি এবং আমরা মনে করি নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ রাখতে শুধু মাত্র বিএনপিকে নয় সব ক্ষেত্রে পুলিশ স্বাভাবিক ভাবে আইন-শৃংঙ্খলা বজায় রাখতে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। বিবৃতিতে পার্টির নেতারা আরো বলেন, আমরা মনে করি অবশ্যই জনগণ এই ধরণের অপতৎপরতাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। পার্টি আশা প্রকাশ করে যে, বিএনপির এখন সেখান থেকে বোধোদয় হবে এবং তাদের এই অগ্নিসন্ত্রাস এবং হত্যা হামলা ঘটনা থেকে বিরত হয়ে নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে অংশ নেবে এবং নির্বাচন থেকে পালিয়ে যাওয়ার কোন প্রচেষ্টা তারা নেবে না। এবারের নির্বাচনে তারা যদি সঠিকভবে অংশ না নেয় তাহলে তাদের জন্যে এটাই হবে তাদের রাজনীতির শেষ কথা।
×