ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কেবিনেটে উতরে গেলেও এমপিদের সায় পাওয়া বাকি ব্রেক্সিট পরিকল্পনার

বাধা টপকালেন মে

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১৬ নভেম্বর ২০১৮

বাধা টপকালেন মে

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসা বা ব্রেক্সিটের খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। দীর্ঘ দর কষাকষির পর সম্মতি জানিয়েছে ইইউ। এ খসড়া চুক্তি ব্রিটেনের রাজনীতিকরা মেনে নেবেন কিনা এখন সেটিই দেখার বিষয়। বুধবার মন্ত্রিসভায় চুক্তিটি অনুমোদিত হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে বড় একটি বাধা অতিক্রম করলেন। তবে তার দলের এমপিরা সেটি সমর্থন করবেন কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়। এএফপি ও বিবিসি। ইইউর ব্রেক্সিট আলোচক মাইকেল বার্নিয়ার ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় চুক্তি অনুমোদিত হওয়াকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন এর ফলে ব্রিটেন একটি বাধা পেরোল। ইইউ কমিশনের প্রধান জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কারও একে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ বলে মন্তব্য করেছেন। তীব্র মতপার্থক্য সত্ত্বেও ইইউর সঙ্গে শেষ পর্যন্ত খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করে যুক্তরাজ্য। এরপর মে প্রত্যেক মন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন। তাদের খসড়া চুক্তির সমর্থন করার জন্য আহ্বান জানালে মন্ত্রিসভার সমর্থন আদায় করতে সমর্থ হন মে। মন্ত্রীরা ওই পরিকল্পনায় যেন সায় না দেন সেজন্য সমালোচকদের কাছ থেকে তারা প্রচ- চাপের মুখে ছিলেন। ব্রেক্সিট বিরোধীদের মধ্যে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির অনেক প্রভাবশালী নেতাও আছেন। অন্যদিকে যারা হার্ড ব্রেক্সিট বা কোন চুক্তি না করেই ইইউ ছাড়ার পক্ষপাতী ছিলেন তারা বলছেন মে ইইউর কাছে নতিস্বীকার করেছেন। তাদের আশঙ্কা, খসড়া চুক্তি অনুসারে ইইউর কাস্টমস ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যকে বেধে রাখবে। একই সঙ্গে পরবর্তী বছরগুলোতে যুক্তরাজ্যকে ইউরোপের মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। খসড়া চুক্তির বিরোধীদের মধ্যে অগ্রবর্তী রয়েছেন পদত্যাগকারী সাবেক মন্ত্রীরা। তারা চুক্তি প্রত্যাখ্যান করার জন্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এটা ছুড়ে ফেলে দিন’। উল্লেখ্য, বরিসের দেখাদেখি তার ভাই জো জনসন গত সপ্তাহে মে’র মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে ব্রেক্সিট চুক্তি বিরোধীদের দলে ভিড়েছেন। ব্রেক্সিট ইস্যুতে মন্ত্রিসভা কার্যত দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। একদিকে ছিলেন হার্ড ব্রেক্সিট সমর্থকরা। অন্যদিকে ব্রেক্সিটেরই ঘোর বিরোধী, যারা ইইউর সঙ্গে আগের মতো থাকতে চেয়েছিলেন। ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্যদের মে বোঝাতে সক্ষম হন যে, খসড়া চুক্তিতে ২০১৬ সালে গণভোটের মূল উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়েছে। কেবিনেট অনুমোদনের পর চুক্তিকে পার্লামেন্টের পরীক্ষায় পাস করতে হবে। বেশিরভাগ সদস্য ইতোমধ্যেই ব্রেক্সিট পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার কথা বলেছেন। বিরোধী লেবার পার্টি ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা খসড়া চুক্তি সমর্থন দেবেন না। দলটির ব্রেক্সিট বিষয়ক মুখপাত্র কেইর স্টারমার বলেন, সমঝোতার ধরন দেখে মনে হচ্ছে এটা কোন ভাল চুক্তি হবে না। পার্লামেন্টে চুক্তিটি পাস না হলে কেবিনেটের অনুমোদন কাজে আসবে না। সেক্ষেত্রে ব্রিটেনকে হয়ত কোন চুক্তি ছাড়াই ইইউ ছাড়তে হবে। পার্লামেন্টে চুক্তিটি অনুমোদিত হলে ২৫ নবেম্বর ইইউ নেতৃবৃন্দ মে’র সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সেখানে চূড়ান্ত ব্রেক্সিট চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হবে। । পরিকল্পনাটি করা হয়েছে ‘কাস্টম এ্যারেঞ্জমেন্টের’ ভিত্তিতে। এতে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্তে কড়াকড়ি শিথিল করা এবং যুক্তরাজ্য ও ইইউর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাজ্য ইইউর সাধরণ আইন মেনে চলবে। মে’র সব মন্ত্রী এখনও পর্যন্ত পরিকল্পনাটির প্রতি তাদের সমর্থন জানাননি।
×