স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে অবসরের সিদ্ধান্ত নিলেন এ্যাগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে টেনিস ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন তিনি। আক্ষেপ-অতৃপ্তি নিয়েই টেনিসকে বিদায় বললেন পোল্যান্ডের এই টেনিস তারকা। কেননা সুদীর্ঘ ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে তার নামের পাশে যে যোগ করতে পারেননি কোন গ্র্যান্ডস্লাম। যদিওবা এই সময়ে ২০টি ডব্লিউটিএ শিরোপার দেখা পেয়েছেন উইম্বলডনের সাবেক ফাইনালিস্ট এ্যাগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা।
বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের সর্বোচ্চ দ্বিতীয় স্থান দখল করেছিলেন ২০১২ সালে। সে বছরই ক্যারিয়ারের প্রথম কোন মেজর টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। সেবার সেরেনা উইলিয়ামসের কাছে উইম্বলডনের ফাইনালে হেরে যান ২৯ বছরের এই পোলিশ তারকা।
২০০৮ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতিটি মৌসুম বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১৫ থেকে শেষ করেছেন রাদওয়ানস্কা। অবসর নেয়ার সময় র্যাঙ্কিংয়ে তার অবস্থান ৭৫তম। সাম্প্রতিক সময়টা এতোই বাজে কাটছিল যে, ২০১৬ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ কোন শিরোপার দেখা পেয়েছিলেন রাদওয়ানস্কা।
তারপরও পোলিশ তারকা জানালেন, অবসরের সিদ্ধান্ত নেয়াটা বেশ কঠিন ছিল তার। এ প্রসঙ্গে রাদওয়ানস্কা বলেন, ‘দুর্ভাগ্যক্রমে এখন আমি আর দীর্ঘ সময় অনুশীলন করতে পারি না। যেভাবে খেলে অভ্যস্ত সেই খেলাটাও আর খেলতে পারি না। এখন আমার শরীর প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে পারে না।’
র্যাকেট তুলে রাখলেও টেনিসকে ছাড়ার কোন ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছেন রাদাওয়ানস্কা। বিদায়ের ঘোষণা দিলেও নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে তিনি প্রস্তুত বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত বছর ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হবার পর থেকে আর পুরো সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। যে কারণে চলতি বছর প্রায় পুরোটা সময়ই ফর্মহীনতায় ভুগেছেন। শীর্ষ ৩০ থেকে বছর শুরু করার পর বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের ৭৫তম স্থানে নেমে যান তিনি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতা ও পেশাদার টেনিসের প্রচ- চাপকে মাথায় রেখে আমি বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ ২০১২ সালে সেরেনা উইলিয়ামসের কাছে তিন সেটের লড়াইয়ের পর উইম্বলডনের ফাইনালে পরাজিত হয়েছিলেন রাদাওয়ানস্কা। এছাড়া ২০১৫ সালে ডব্লিউটিএ ট্যুর ফাইনালসের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিলেন তিনি।
টেনিস কোর্টে গত একযুগেরও বেশি সময় ধরে আলোচনায় ছিলেন রাদওয়ানস্কা। এখন থেকে আর কোর্টে দেখা যাবে না তাকে। তার সময়ে বিশ্ব টেনিসে রাজত্ব করেছেন সেরেনা উইলিয়ামস, মারিয়া শারাপোভা, ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা, ভেনাস উইলিয়ামস, পেত্রা কেভিতোভা এবং আনা ইভানোভিচের মতো তারকা খেলোয়াড়দের। রাদওয়ানস্কার আগে ২০১৬ সালে টেনিস থেকে বিদায় নেন সার্বিয়ার আনা ইভানোভিচও। এছাড়া সেরেনা-শারাপোভা-কেভিতোভা-ভেনাসরাও এখন ক্যারয়ারের গোধূলি-লগ্নে। এ বছর তো কোন গ্র্যান্ডস্লামই জিততে পারেননি তাদের কেউ। সেরেনা উইলিয়ামস টানা দুটি মেজর টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছেন ঠিকই। কিন্তু শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে পারেননি বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান এই তারকা। সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ২৩টি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের স্বাদ পেয়েছেন সেরেনা। এই মুহূর্তে তার বয়স ৩৭। নতুন মৌসুমে পারবেন কী স্বরূপে ফিরতে? টেনিসপ্রেমীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার।
সেরেনা উইলিয়ামস ছাড়া শারাপোভা-ভেনাস-কেভিতোভার পারফর্মেন্স তো আরও বাজে। নতুন বছরে তারা কতটুকু পারবেন ভক্ত-অনুরাগীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে? অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার। তবে তাদের উত্তরসূরি হিসেবে এই মুহূর্তে টেনিস কোর্টে তেমন কোন খেলোয়াড়দেরও দেখা যাচ্ছে না। কেননা সিমোনা হ্যালেপ, এ্যাঞ্জেলিক কারবার, স্লোয়ানে স্টিফেন্স, ক্যারোলিনা পিসকোভা, গারবিন মুগুরুজা কিংবা জেলেনা ওস্টাপেঙ্কোদের কেউই ধরে রাখতে পারছেন না তাদের পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: