সর্বজননীর সর্বগর্ভ
মুহম্মদ নূরুল হুদা
মা, মা গো আমার;
এই ক্ষুদ্র আমি
এই বৃহৎ আমি
চিরঅনন্তগামী;
মা, মা গো আমার;
আমি চির-অচির
সন্তান তোমার।
মা, মা গো আমার;
মানবজননীর নাড়ির বন্ধন ছিন্ন করে
হামগুড়ি দিতে দিতে বেড়ে উঠেছি আমি।
মুহূর্ত দিন মাস বছর যুগ পার হয়ে
না-শিশু না-যুবক না-প্রৌঢ় না-বৃদ্ধ
আমিও কি ছুটে চলিনি অনিত্যের দিকে?
অনন্তর মাটি-মা আমাকে আবার
পুনর্জন্ম দিয়েছে তার জলআগুনের গর্ভে।
সূর্য-জননীর নাড়ির বন্ধন ছিন্ন করে
হামাগুড়ি দিতে দিতে বেড়ে উঠেছে
জননীর জননী এই মাটির পৃথিবীও। তার
গর্ভে এখনো জল-আগুন-মাটি-বায়ু আর
আকার নিরাকারের মূর্ত-বিমূর্ত হাহাকার।
অনন্তর মা-সূর্য
মহাসৌরপ্রলয়ের পর তার অগ্নিগর্ভে
সেই আমাকেই ধারণ করেছে আবার।
এই ঘর ছেড়ে সেই ঘরে
বিশ্বমহামাতার মহানাড়ির
মহাবন্ধন ছিন্ন করে
হামাগুড়ি দিতে দিতে
বেড়ে উঠেছে সূর্য-জননী।
তার মহাগর্ভে মহাকু লীকৃত
পরিমেয় অপরিমেয় মহাবিশ্বের তাবৎ
সদৃশ্য ও অদৃশ্য বস্তু-অবস্তুর মহাখনি।
অনন্তর বিশ্বমহামাতা
আদিবিস্ফোরণের পর
শূন্যতা-ও-পূর্ণতার
দ্বৈতগর্ভে ধারণ করবে
সেই সর্বজননীকেই পুনর্বার।
সেই সর্বজননীই আমার
সর্বগর্ভের আনন্দ-আধার।
তখন আমার বয়স কত?
তখন তোমার বয়স কত?
মাতা ও গর্ভ পরিবর্তনে
আমরাও বিবর্তিত অনবরত।
মুখোমুখি তুমি-আমি তখনো
শ্রমে-প্রেমে যুদ্ধরত।
মহারণ শেষে মহাপ্রজনন।
আমরাই পরস্পরের আশ্রয়ের ধন।
মহাসুখে আমি মুখ লুকাই
তোমার বুকে, তুমিও আমার।
মহাদুখে আমরা কি কেঁদে উঠবো না
বেদনায় বারবার পেয়ে হারাবার?
কাঁদবো-হাসবো;
প্রতিবার মহাবিশ্বের মহাজন্মে
আমরাই ভালবাসবো।
** শব্দের সঙ্গিনী
রুনু আঞ্জুমান
যথেচ্ছ মিথ্যার ভিড়ে সত্যেরা লুকায়
কুয়াশা-ঘাসের বুকে রোদেতে শুকায়
মানুষ মানুষে কেন হারায় বিশ্বাস
চলার পরতে ফেলে প্রতিটি নিঃশ্বাস
হতাশা আগুন পুড়ে ছাই হয়ে যায়
গভীর গভীরে তবু কুড়ে কুড়ে খায়
বাস্তব আমর শুধু আঙ্গিনাকে জুড়ে
সান্তনা সুখের ভাঁজে বেদনাকে ছুড়ে
বিশাল আকাশে খুঁজি নীল নীল সুখ
আঁচল পাতিয়া দেব ফেরাবে না মুখ
শীতের একাকী রাতে আঁধারে বন্দিনী
ঘরের ছাদের চোখে শব্দের সঙ্গিনী
এভাবে আমিতে আর স্বপ্নের ছায়ায়
পাতানো খেলাতে মাতি মোহের মায়ায়।
** জার্নাল – ২
আতিক আজিজ
আমার চোখের রৌদ্রে থাক এ আকাশ
আমার চোখের অন্ধকারে থাক খ্যাত নীলশাড়ি।
অন্ধকার সমুদ্রেই অতীত স্থানের অবকাশ
এবং যে কোন রৌদ্রে সেই শাড়ি মেলে দিতে পারি!
তুমি ছিলে অথবা ছিলে না
পাওয়া না পাওয়া সেইসব লেনদেন।
রৌদ্রের হিসেব নেই, রৌদ্রই আকাশ!
একটি নদীর মতে ফেলুক বা না ফেলুক শাড়ি মৃদুশ্বাস।
** প্রতিক্ষা
এইচআই লুৎফর রহমান খান
মেঘলা দিনের সন্ধ্যা বেলায় ভাবছি তোমায় যত
ঝরছে আমার চোখের পানি বৃষ্টি ধারার মত।
তুমি আমার সূর্য্য-তারা, চাঁদনী রাতের আলো
বসবে পাশে হিমেল হাওয়ায় লাগবে কত ভালো।
তোমার গায়ের সুগন্ধিতে হব মাতোয়ারা
এলোচুলের পরশ নিয়ে হব পাগলপারা।
শীর্ষ সংবাদ: