ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

তৌফিক অপু

উইন্টার টপস্

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ১৬ নভেম্বর ২০১৮

উইন্টার টপস্

ক্যাম্পাস থেকে ফিরেই নাদিয়া ব্যস্ত হয়ে পড়ল বান্ধবীর বিয়েতে যাওয়ার জন্য। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, কিন্তু কিভাবে পার্টিতে যাবে সে নিয়ে পড়ে গেল ভীষণ ভাবনায়। শাড়ি পরবে, সে সময়টা হয়ে উঠবে না। তাছাড়া শাড়িতে খুব বেশি কমফোর্ট ফিল করে না। গর্জিয়াস সালোয়ার কামিজও পরতে নারাজ। কারণ এর সঙ্গে ম্যাচ করে অনেক কিছু মেলাতে হবে। হাতে সময় একেবারেই কম। কারণ তাকে একটু আগে আগে যেতে হবে। হঠাৎ করে চোখ আটকে গেল আলমিরাতে সাজানো টপস্গুলোর দিকে। বেশ কিছু কালার ফুল টপস্ বের করে বাছাই করতে লাগল। পছন্দ হয়ে গেল ডিপ পার্পেল কালারের টপস্টিÑযা সহজেই মানিয়ে যায় পার্টির সঙ্গে। কথামতো ব্ল্যাক জিন্সের সঙ্গে টপস পড়ে ছোট্ট একটা পার্টস হাতে নিয়ে বেরিয়ে যায় নাদিয়া। বাঙালী নারীদের ক্ষেত্রে বারো হাত শাড়ির কথাটি প্রযোজ্য হলেও ফ্যাশন ট্রেন্ডে যোগ হয়েছে নিত্য নতুন অনেক পোশাক। টপস্ বর্তমান সময়ের একটি জনপ্রিয় পোশাক। বিশেষ করে কলেজ, ভার্সিটির ছাত্রীদের কাছে। গ্লোবালাইজেশনের যুগে বিশ্ব যেমন এগিয়েছে ঠিক তেমনি এগিয়েছে ফ্যাশন ট্রেন্ড। লেগেছে যুগের হাওয়া। পশ্চিমা বিশ্বের হাওয়া বললেও ভুল হবে না। যদিও টপস্ এখন দেশীয় ফ্যাশনে বেশ মানানসই। তথাপি এর সূত্রপাত পশ্চিমা বিশ্ব থেকেই। ফ্যাশন হাউসগুলোতেও এখন দেখা মেলে প্রচুর পরিমাণের কালারফুল টপস্। প্রকৃতির পালাবদলে বইছে হিমেল হাওয়া। সে ব্যাপারটি মাথায় রেখে ফ্যাশন হাউসগুলোও তৈরি করছে ঋতুভিত্তিক টপস্। এ ব্যাপারে ডিজাইনার অরূপ জানান, বর্তমান সময়ের তরুণীদের প্রথম পছন্দের পোশাক হচ্ছে টপস্। যে কারণে দিন দিন বাড়ছে টপস্রে চাহিদা। আমরাও সবসময় চেষ্টা করি ক্রেতাদের রুচিকে প্রাধান্য দিতে। তাছাড়া স্থান-কাল-পাত্র ভেদে টপসের ডিজাইন হয়ে থাকে। যেমন ভার্সিটি যে টপস্টি মানানসই তা কিন্তু পার্টিতে মানানসই নয়। আবার বন্ধুদের আড্ডায় আরেক ধরনের টপস্ ডিমান্ড করে। যে কারণে চাহিদানুযায়ী টপসের ডিজাইন করতে হয়। তাছাড়া আবহাওয়াগত একটা ব্যাপার তো থেকেই যায়। যে কারণে আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এবং স্থান ভেদে পোশাকের ডিজাইন করা হয়। বিশ্ব দ্রুত পরিবর্তনশীল। এই পরিবর্তনের হাওয়ায় বদলায় ডিজাইন এবং প্যাটার্ন। সবকিছু মাথায় রেখে টপস্গুলো হাজির করতে হয় ক্রেতাদের সামনে। এই শীতে বেশিরভাগ টপস্গুলোই ফুলসিøভের করা হয়েছে। কাপড়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে খাদি, উল এবং গেঞ্জির কাপড়কে। এছাড়াও সিনথেটিক কিছু কাপড়ও রয়েছে। তিনটি প্যাটার্নে ভাগ করা হয়েছে। এক পার্টি টপস্, দুই ক্যাজুয়াল, তিন এক্সিকিউটিভ। এখন অনেক কর্পোরেট অফিস নারীকর্মীদের টপস্ পরে কাজ করতে দেখা যায়। এতে তারা বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং অফিসমুখী হওয়ার প্রস্তুতি নিতেও কম সময় লাগে। যে কারণে দিনে দিনে করপোরেট বা এক্সিকিউটিভ টপস্ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পার্টি টপসের ক্ষেত্রে হাতায় এবং গলায় স্টোন বেজ কাজ করা হয়েছেÑযা বেশ আকর্ষণীয়। তাছাড়া হাতের এবং এম্ব্রয়ডারির কাজও দ্যুতি ছড়ায় আপন মহিমায়। রাতের পার্টির জন্য ব্ল্যাকসহ ডিপ কালারের কাপড়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তাছাড়া দিনের পার্টির জন্য পিংক, ব্লু, ইয়েলো কালার বেশ মানিয়ে যায়। সাদা এবং ক্রিম কালারের টপস্ ব্যবহার করা হয়েছে ক্যাজুয়াল টপসের ক্ষেত্রে। ভার্সিটিতে অনেকেই এখন জিন্স টপস্ পরেই যাতায়াত করেন। রুচিশীল টপস্ তৈরিতেও এগিয়ে ফ্যাশন হাউসগুলো। এই টপসে আবার দুই ধরনের প্যাটার্ন রয়েছে। এক দেশীয়, দুই ওয়েস্টার্র্ন। দুই ধরনেরই টপস্গুলো শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন আউটলেটে। তার মধ্যে দেশীয় টপস্গুলো মিলবে আড়ং, দেশী দশ, আজিজ সুপার মার্কেট, নিউমার্কেট,গাউছিয়াসহ অনেক জায়গায়। ওয়েস্টার্ন টাইপের টপস্গুলো পাওয়া যাবে এ্যাক্সট্যাসি, রেক্স, ক্যাটস্ আই, ইয়েলো, আর্টিস্টি, মনসুন রেইনসহ বিভিন্ন ওয়েস্টার্ন প্যাটার্নের ফ্যাশন হাউসগুলোতে। দামও হাতের নাগালে। পার্টি টপস্ মিলবে ১২৫০ থেকে ৩২০০ টাকায়, এক্সিকিউটিভ টপস্ ৮৫০ থেকে ২৫০০ টাকা। ক্যাজুয়াল টপস্ ৫৫০ থেকে ১৮০০ টাকা। টপস্ দেশীয় ফ্যাশন ট্রেন্ডে নতুন সংযোজন হলেও তা দ্রুত তারুণ্যদীপ্ত মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে। ফ্যাশন অঙ্গনে ছড়িয়েছে নতুন রঙ। ছবি : রাহুল চৌধুরী মডেল : লিসা ও সুমী সাবা
×