ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৭ সৌদি নাগরিকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ১৯:০০, ১৬ নভেম্বর ২০১৮

১৭ সৌদি নাগরিকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক ॥ ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে সেচ্ছায় নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে দেশটির ১৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বহুল আলোচিত এই ঘটনায় এই প্রথম কার্যকর ব্যবস্থা নিল ট্রাম্প প্রশাসন। গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগ ও দুর্নীতি রোধে প্রণোদিত আন্তর্জাতিক ম্যাগনিট্স্কি মানবাধিকার দায় আইন অনুযায়ী এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বসবাস ও কর্মরত সাংবাদিককে পূর্ব পরিকল্পনা করে হত্যাকারীদের কঠোর ফল ভোগ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন- যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সাবেক ঘনিষ্ঠ সহচর সাউদ আল কাহতানি এবং তুরস্কের সৌদি কনসাল জেনারেল মুহাম্মদ আলতাইবি, কাহতানির ঘনিষ্ঠ সহযোগী মাহের মুতরেব, যিনি যুবরাজের মার্কিন ও ইউরোপে সফরসঙ্গী ছিলেন। এছাড়া সৌদি রাজকীয় নিরাপত্তার বাহিনীর সদস্যসহ আরো ১৪ জন এই নিষাধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন। মার্কিন রাজস্ব সচিব স্টিভেন নিউচিন এক বিবৃতিতে জানান, ‘যু্ক্তরাষ্ট্রে বসবাস ও কর্মরত সাংবাদিককে যারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে, তাদের নিজেদের কৃতকর্মের জন্য কঠোর ফল ভোগ করতে হবে। রাজনৈতিক মতবাদী ও সাংবাদিকদের হিংসার রুখতে সৌদি আরব সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে।’ সৌদির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এ যাবতকালের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত এটি। তবে ট্রাম্প প্রশাসন মূলত এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সৌদি যুবরাজকে রক্ষা করেছেন এবং আন্তর্জাতিক চাপও সামলেছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। খাসোগি হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সৌদির আদালতে অভিযুক্ত ১১ জনের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানিয়েছেন সৌদির সরকারি আইনজীবী। গত দুই অক্টোবর তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে প্রয়োজনীয় কাগজ আনতে গেলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশটির নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়। তুরস্ক প্রথমে সৌদির বিরুদ্ধে খাসোগিকে হত্যার অভিযোগ আনলে তা অস্বীকার করে সৌদি। তবে আন্তর্জাতিক চাপ ও হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন প্রমাণ গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে থাকলে একপর্যায়ে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করে বার্তা দেয় সৌদি। শুরুতে হাতাহাতিতে তার মৃত্যু হয়েছে এমনটি জানানো হলেও পরে বলা হয় যে তাকে উগ্র কিছু কর্মকর্তা হত্যা করেছে। তবে তাতে সৌদি যুবরাজ বা রাজপরিবারের কেউ জড়িত নয় বলে জানানো হয়। খাসোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করলেও এখনো তার মৃহদেহ কোথায় তা জানায়নি সৌদি। গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে তাকে টুকরো টুকরো করে হত্যার পর এসিড দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়া খাসাগি হত্যাকাণ্ডের অডিও রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের কাছে হস্তান্তর করেছে তুরস্ক। এ ঘটনায় তুরস্ক শেষপর্যন্ত কড়া পদক্ষেপ না নিলেও পরবর্তীতে ন্যাটো সদস্যভুক্ত কোনো দেশে এমন ঘটনা ঘটলে তার কঠিন পরিণতি হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
×