ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

৩৫ শতাংশ রোগী হেড এ্যান্ড নেক ক্যান্সারে আক্রান্ত

প্রকাশিত: ০১:২১, ১৬ নভেম্বর ২০১৮

৩৫ শতাংশ রোগী হেড এ্যান্ড নেক ক্যান্সারে আক্রান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে বিপুল সংখ্যক হেড-নেক ক্যান্সারের রোগী থাকলেও এটি একটি প্রতিরোধ যোগ্য রোগ বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেন, দেশে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৩৫ শতাংশই হেড এ্যান্ড নেক ক্যান্সারে আক্রান্ত। এদের মধ্যে আবার ৩৭ শতাংশই মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্ত। মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যাই বেশি। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করতে পারলে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে রোগের বিস্তার ঘটলে এর চিকিৎসা অত্যন্ত কঠিন এবং ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। আজ শুক্রবার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ঢাকা হেড এ্যান্ড নেক ক্যান্সার সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। সম্মেলন কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ক্যান্সার অব হেড-নেক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী প্রমুখ। অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশের চিকিৎসা সেক্টরের অনেক উন্নতি হয়েছে। দেশের অনেক সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে হেড ও নেক ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে হেড ও নেক এর ক্যান্সার বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার। গণ সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। দেশে বিপুল সংখ্যক হেড-নেক ক্যান্সারের রোগী থাকলেও এটি একটি প্রতিরোধ যোগ্য রোগ। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করতে পারলে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে রোগের বিস্তার ঘটলে এর চিকিৎসা অত্যন্ত কঠিন এবং ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সারা শরীরের ক্যান্সারের মত হেড, নেক ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বাংলাদেশ এখন নাক কান গলা বিষয়ক বিষেশায়িত শাখার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। বুকের উপর থেকে মাথার উপর পর্যন্ত যে ক্যান্সার হয় তাকে হেড, নেক ক্যান্সার বলে। এর মধ্যে পড়ে ঠোঁট, জিহ্বা, নাক ও সাইনাস, খাদ্য নালীর উপরের অংশ এবং স্বরযন্ত্র, গলা এবং লালা গ্রন্থির ক্যান্সার। হেড, নেক শরীর সবচেয়ে জটিল অংশ, কারণ এখানে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ নার্ভ ও রক্ত নালী থাকে যারা ব্রেইনের সাথে শরীরের অন্য অংশের সংযোগ রক্ষা করে। তাছাড়া খাদ্য নালী ও শ্বাস নালীর উপরের অংশ এখানেই অবস্থিত। হেড, নেক ও ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন হেড নেক ক্যান্সার সার্জন, প্লাষ্টিক সার্জন পূর্নবাসন বিভাগ ও মনোবিজ্ঞানী। হেড নেক ক্যান্সার সার্জনরা শুধু হেড নেক এলাকার ক্যান্সারের সার্জারী করে থাকেন। আমাদের দেশে প্রতি কত সংখ্যক হেড নেক ক্যান্সারের রোগী পাওয়া যায় তার কোন সঠিক পরিসংখ্যায় জানা নেই। সম্মেলনে জানানো হয়, ভারতে প্রতি বছর ২ লাখের বেশী হেড নেক ক্যান্সারের রোগী শনাক্ত করা হয়। সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ ক্যান্সার হয় তার ৫৭.৫০ শতাংশ হয় এশিয়ার বিশেষ করে ভারতে। ৬০-৮০ শতাংশ রোগী এডভান্সড ষ্টেজে ডাক্তারের কাছে যায় যা উন্নত বিশ্বে ৪০ শতাংশ। বাংলাদেশের চিত্র ও ভারতের মতই। হেড নেক ক্যান্সার শরীরের মোট ক্যান্সারের ৫ শতাংশ এবং প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে নিরাময় সম্ভব। হেড নেক ক্যান্সারের ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান গুলি হলো, পান, সাবান, জর্দা, সুপারী, ধূমপান, এ্যাকোহল, মুখের অযতœ, কারখানার ধোঁয়া, ধূলা. রেডিয়েশন এবং ভাইরাস। এই সকল ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান সেল এর ডিএনএ-কে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং প্রিস্ক্যান্সারস জিন ক্যান্সার জিনে রুপান্তরিত হওয়াকে ত্বরান্বিত করে।
×