ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবন্ধী হাফেজ সাইদুরের জীবন সংসার

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৭ নভেম্বর ২০১৮

 প্রতিবন্ধী হাফেজ সাইদুরের জীবন সংসার

কুড়িগ্রাম জেলার ৪১ইঞ্চি উচ্চতা সম্পন্ন হাফেজ মো. সাইদুর রহমানের জীবন সংসার চলছে পান বিক্রি করে। তার সংসার চলছে খুবই কষ্টে। ১৯৭৪ সালে ডিসেম্বর মাসে রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের জন্দিরকান্দা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত সিরাজুল ইসলাম এবং মায়ের নাম মৃত সহিতন খাতুন। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ৪৫ শতক জমির উপর তাদের বসতবাড়ি। অন্য ভাইয়েরা জমির অংশ বণ্টন করে নেওয়ায় কোন রকমে একটি ঘরে ঠাঁই করে আছেন হাফেজ সাইদুর রহমান। ২০০৯ সালে একই উপজেলার রতনপুর গ্রামে শাহানাজ বেগমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পাঁচ সদস্য নিয়ে তার সংসার। তাদের ঘরে পাঁচ বছর বয়সের কন্যা সন্তান সুমাইয়া আকতার সুমা ও ৮মাস বয়সের সানাউল্লাহ আহমেদ নামের ছেলে সন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় বোন শিরিনা খাতুনও প্রতিবন্ধী। তার উচ্চতাও ৪২ ইঞ্চি। শিরিনার জন্ম ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে। গত কয়েক বছর আগে উলিপুর উপজেলার এনজিওর এক কর্মীর সঙ্গে বিবাহ হয়। সেখানে বেশিদিন সংসার টিকেনি। পরে শিরিনা তার ছোট ভাই প্রতিবন্ধী হাফেজ সাইদুর রহমানের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পাঁচ জনের সংসারে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে সাইদুরের পরিবার। তিনিপঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। পরে রৌমারীতে এক হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। সেখান থেকে কোরানের হাফেজ হন। এর কিছু দিন পর তার বাবা-মা মারা যায়। বড় বোনকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি। অন্য ভাইয়েরা কিছু দিন পরেই পৃথক হয়। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে তাদের। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জেলা পরিষদের একটি দোকানের জায়গা বরাদ্দ দেন। সে জায়গায় ঘর তুলে পানের দোকান দেন তিনি। পুঁজি না থাকায় দোকানে অন্যান্য মালামাল তুলতে না পারায় সামান্য টাকার বেচাকেনা হয়। এর থেকে দৈনিক যা আয় হয় তা দিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার চলে কোন রকমে। স্থানীয় সমাজসেবা অফিসে বার বার প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য দরখাস্ত করেও কোন লাভ হয়নি তার। -রাজুমোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম থেকে
×