ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গৃহবধূ ফাতেমা হত্যা মামলা প্রত্যাহারে হুমকি

প্রকাশিত: ০১:১৪, ১৭ নভেম্বর ২০১৮

গৃহবধূ ফাতেমা হত্যা মামলা প্রত্যাহারে হুমকি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া ॥ গৃহবধূ ফাতেমা হত্যার প্রায় এক মাস পরও মূল আসামি স্বামী মোসলেম সিকদারসহ কেউ ধরা পরেনি। উল্টো এ মামলা প্রত্যাহারে নিহতের বোন কাজলসহ বাবাকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। ২০ অক্টোবর দুপুরে এক সন্তানের মা ফাতেমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পরে লাশ ঝুলিয়ে রাখে পাষন্ড স্বামী মধ্যবয়সী মোসলেম সিকদার। নীলগঞ্জের নাওভাঙ্গা গ্রামের মানুষ এসব জানতে পারলে ফাতেমার ঝুলন্ত মরদেহ নামিয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছে এমন প্রচার চালায় মোসলেমসহ নিহত ফাতেমার সতীন ও সতীনের ছেলে। প্রথম দফায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ইউডি মামলা করে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ফাতেমার বোন কাজল কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ২৩ অক্টোবর একটি মামলা করেন। যেখানে ফাতেমার স্বামী মোসলেম সিকদার, সতিনের ছেলে আবু সায়েক সিকদার, সতীন হাজেরা বেগম, মোসলেমের বোন রওশনারা বেগমসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এরপর থেকে এ মামলা প্রত্যাহার করতে খুনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। মোসাম্মৎ কাজল এ ঘটনায় পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে কলাপাড়া থানায় একটি জিডি করেছেন। কাজল জানান, তার বোনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলানো হয়। এ ঘটনা জানার পরে মৃতদেহ হামপাতালে নিয়ে বলা হয় স্ট্রোকে মারা গেছে ফাতেমা। পাষন্ড ৫৮ বছর বয়সী মোসলেম সিকদার সম্পর্কে চাচা হয়েও কিশোরী ফাতেমাকে দ্বিতীয় বিয়েতে বাধ্য করে। এরপরেও মোসলেমের কুকীর্তির অন্ত ছিলনা। এসব প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে ফাতেমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। মামলায় বলা হয়েছে একাধিক মামলার আসামি মোসলেম সিকদার ফাতেমাকে নাবালক থাকা অবস্থায় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বিয়ে করেন। এরপর পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত। ঝগড়া ছিল নিত্যঘটনা। আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ফাতেমাকে (২৫) হত্যা করে। ফাতেমার আট বছর বয়সী শিশু সন্তান ফাহিম এখন মা হারা, নির্বাক হয়ে গেছে। শুধু এদিক-ওদিক ফিরে খুঁজে বেড়ায় মাকে। ফাতেমার বাবা আব্দুর রব সিকদারও অসহায়ের মতো চোখের পানি ঝরাচ্ছেন। বর্তমানে ফাতেমার হত্যার বিচারে মামলা করে মোসলেম সিকদার গংদের অব্যাহত হুমকিতে পরিবারের সবাই নিরাপত্তাহীন হয়ে আছেন। কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ফাতেমার গোটা পরিবারের নিরাপত্তার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে। গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
×