ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভোট ষড়যন্ত্র এবং নির্বাচন মনোনয়নের কাহিনী

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

ভোট ষড়যন্ত্র এবং নির্বাচন মনোনয়নের কাহিনী

নিউইয়র্ক নগরীতে বসে যখন ঢাকার অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ ও চিত্রাবলীতে দেখেছিলাম দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা তখনও মন যেন পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত হতে পারেনি। ২০১৪ সালের নিদারুণ হিংস্রতা অগ্নিকা-ের ঘটনায় আমরা ঘর পোড়া গরু বললেও যেন সামান্যই বলা হয়। এবারের আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে মাঝে মাঝে নানা অজুহাতে আকাশে লোহিত মেঘের আবির্ভাবে মনে জেগেছে শঙ্কা ও আশঙ্কা। কিন্তু নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর পরই দেখা গেল দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মনোনয়নপত্র কেনার হিড়িক। কেবল শাসক দল আওয়ামী লীগ নয়, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলও কতটা নির্বাচনমুখী তারই প্রমাণ ভোট উৎসবের আমেজ নিয়ে ঢল নামা জনতা। শুধু তাই নয়, আরও দেখলাম নয়া পল্টনে বিএনপি দলীয় অফিসের বাইরে হাজার হাজার কর্মী সমর্থকদের বিশাল ভিড়- হৈ হৈ রৈ রৈ উৎসব। কিন্তু পাশাপাশি আকাশের সিঁদুরে নাকি ঝড়ের লাল মেঘের নিশানাটা রয়েই গেল। নির্বাচন কমিশন আসন্ন নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর থেকে ঐক্যফ্রণ্ট তথা বিএনপি জোটের নির্বাচন পেছানোর দাবিতে দিচ্ছে ব্যাঘ্র হুঙ্কার। তারা বলছে নির্বাচনকে পেছাতে হবে কমপক্ষে তিন মাস। পরবর্তীতে অবশ্য সেটা দাঁড়িয়েছে এক মাসে। ড. কামাল হোসেনদের বলয় থেকে বেরিয়ে ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট দাবি তুলেছিল নির্বাচন কমপক্ষে অন্তত এক সপ্তাহ পেছানোর দাবি। সেটি মেনে নেয়ার পর তারা শুধু নির্বাচনে নামেননি উঠে পড়েছেন নৌকোতেও। কিন্তু এখন ঐক্যফ্রন্টের দাবি এত স্বল্প সময়ে মনোনয়ন কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। সেটা যে সম্ভব তার প্রমাণ তাদের নয়া পল্টন অফিসের সামনে নেতাকর্মীদের আনন্দময় সমাগম। ঐক্যফ্রন্টের দাবির বিষয়ে আরও বলা যায়, সংবিধানে পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান লিপিবদ্ধ থাকার ব্যাপারটি কি তারা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে চাইছেন? বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে দেশ থেকে আমার এক রসিক বন্ধু এক মজার মন্তব্য করে বললেন ‘পরীক্ষার তারিখ পেছাতে হবে’- এটা নিয়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রত্ব কালে বহু সময়ে কিছু ছাত্রছাত্রীকে তুমুল আন্দোলন করার কথা মনে আছে। অথচ সারা বছরজুড়ে এই আন্দোলনকারীরা ক্লাস করেছে এবং তাদের জানা ছিল পরীক্ষার ধার্যকৃত সময়ের কথা। যদিও এই অযৌক্তিক দাবিতে বৃহত্তর ছাত্রছাত্রীদের সায় থাকত না। একই রকমভাবে পাঁচ বছর সময় পাওয়ার পরও যারা পুনরায় নির্বাচন পেছানোর অযৌক্তিক দাবি করছেন সেটা মনে করিয়ে দেয় ছাত্রদের বাহানাবাজির কথা। এই রাজনৈতিক দলগুলো ভাল করেই জানে তাদের অযৌক্তিক দাবি মেটানোর সুযোগ ক্ষমতাসীন সরকার কিংবা নির্বাচন কমিশনের নেই। কারণ, বিষয়টি লিপিবদ্ধ আছে শাসনতন্ত্রে। যাই হোক, বিএনপির দাবি যে শুধু শুধু চিৎকারের মধ্যে সীমিত নেই সেটা ফুটে উঠল যখন তাদের নয়া পল্টন অফিসের সম্মুখে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনটি গাড়িতে অগ্নিকা- ঘটিয়ে ১২ জন পুলিশকে আহত করা হলো। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো বলছে যে ড. কামালের নেতৃত্বে বিএনপির ঐক্যফ্রন্ট চিরপুরনো কায়দার ত্রাস সৃষ্টি করে গতবারের মতো মত্ত হয়ে চাইছে মানুষকে ভয় দেখানোর। বিগত নির্বাচনে হাস্যকরভাবে তারা বলেছিল যাবতীয় সন্ত্রাস সৃষ্টির পেছনে আওয়ামী লীগ। তবে যুগ্ম সম্পাদক রিজভী সাহেব এবার আওয়ামী লীগের নাম না নিয়ে বলেছেন এ কাজটি নাকি করেছেন প্রধান নির্বাচনী কমিশনার স্বয়ং। অবশ্য দলের মহাসচিব ফকরুল সাহেব এরপর সংশোধন করে বলেন, এটা করেছে ছাত্রলীগ। রাশেদ খান মেনন তার বক্তৃতায় এক মজার মন্তব্যে বললেন ‘তারা সন্ত্রাসী কাজও করে, আবার সাধুবাবাও সেজে বসে থাকে।’ বোঝাই যাচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ফ্রন্ট গণতন্ত্র নস্যাতের অশুভ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে সেটি রুখে দিতেই হবে। বিএনপি জোট যাদের উত্তরাধিকারী সেই পাকিস্তানী জমানাতেও নির্বাচন পেছানোর ধুয়া তোলা হয়েছিল ‘৭০-এর নির্বাচনের সময়কালেও। অথচ যে ইলেকশন ছিল একটি সুদীর্ঘ আন্দোলনের ফসল এবং পাকিস্তানের ২৪ বছরের ইতিহাসে শাসনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য প্রথম সাধারণ নির্বাচন। সে সময়ও কেউ কেউ নানা ছুতো নাতা নিয়ে ভোট পেছানোর আবদার তুলেছিলেন। এমন কি মজলুম নেতা ভাসানী পর্যন্ত দাবি নিয়ে বলেছিলেন. ভোটের আগে ভাত চাই। ‘এরপর কিছু দল মোক্ষম সুযোগ পেল যখন ’৭০-এর ১২ নবেম্বর এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় এবং মহাবিধ্বংসী প্লাবন তছনছ করে দিয়েছিল দেশের উপকূলীয় এলাকা। দশ লাখেরও ওপর মানুষ নিহত হয়েছিলেন সেই বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে। কিন্তু এমন সময়েও বঙ্গবন্ধু দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন ৭ ডিসেম্বর তারিখে নির্ধারিত নির্বাচন পেছানো যাবে না। কিন্তু যেসব অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে সেসব এলাকায় নির্বাচন স্থগিত রেখে- পরবর্তীতে পিছিয়ে নির্ধারণ করা হোক পরবর্তী নয়া তারিখ। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, সেই নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবার কারণে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। বিজয়ী দলের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে অসম্মত হয়ে পাকিস্তানীরা যে বর্বর আক্রমণ শুরু করে দেয় তখন জনগণের ম্যান্ডেট থাকার কারণেই আওয়ামী লীগের পক্ষে তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করা সম্ভব হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমাদের সে সময়কার মানুষদের দেখা এবং শোনার মধ্যে কত স্মৃতি জমা হয়ে আছে। ১৯৭৩ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচন নিয়ে কিছু কথা শুনেছিলাম শ্রদ্ধাভাজন রাজ্জাক ভাইয়ের কাছ থেকে। সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমাদানের প্রাক্কালে আজকের মতো এই রকম নানা উৎসাহ উদ্দীপনার দিন তখন। শোনা যায়, তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদ তাদের মনোনয়নপ্রত্যাশী নিজস্ব লোকদের একটি লিস্ট পকেটে করে নিয়ে গেলেন বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাসভবনে। নির্বাচন নিয়ে এটা সেটা আলোচনার পর দু’জনেই বিনীতভাবে বঙ্গবন্ধু মুজিবকে জানালেন তাদের কিছু কথা আছে। সবাই জানেন বঙ্গবন্ধু মানুষের মনের কথা পড়তে পারতেন সহজেই। যারা তার হাত ধরে গড়ে উঠেছে সেই সব নেতাদের মনের কথা পড়ার বিষয় তো বলাই বাহুল্য। তিনি তাদের কথা শোনার আবদার থামিয়ে দিয়ে বললেন- আমি জানি তোদের পকেটে কি আছে। এবার তোরা নিশ্চয়ই বের করবি নমিনেশন দেয়ার জন্য তোদের নিজস্ব পছন্দের তালিকা। কিন্তু শোন এবার নমিনেশন হবে তোদের কারও নয় আমার লিস্ট থেকে। এতদিন ধরে যারা আমার সঙ্গে থেকে সহ্য করেছে জেল জুলুম নির্যাতন- স্বাধীন দেশে এবার তাদের পালা।’ এবার একটু ঘুরে যাই নির্বাচনের জন্য সবচাইতে যেটা প্রয়োজন সেই টাকা কড়ির দিকে। বাংলা প্রবাদে আছে টাকা থাকলে বাঘের চোখ মেলে। সেটা মেলে কিনা জানি না তবে অতীতে অনেকেই টাকা দিয়ে ভোট কিনেছেন এমন কথা সবাই জানেন। কিন্তু ইংরেজী প্রবাদ বলে মানি ক্যান্ট বাই এভরিথিং- টাকা দিয়ে সব কিছু কেনা যায় না। আমেরিকায় বসবাস করে নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি টাকা দিয়ে যা যা কেনা যায় না তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভোট। নইলে এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ইউএস সিনেটর পদে নিউ জার্সি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী অবশ্যই জিতে যেতেন। বব হিউগণ হলেন ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির বিলিওনিয়ার মালিক। তিনি ৩৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেও হেরেছেন ডেমোক্র্যাট পার্টির বব মেন্ডেজের কাছে। কিন্তু টাকা ছাড়া নির্বাচন করা সম্ভব নয় এই কথাটা মূলত: কেবল বাংলাদেশের বেলায় নয়, এটি সত্য আমেরিকার মতো দেশের ক্ষেত্রেও। কারণ, একটি নির্বাচন করতে গিয়ে সেখানেও এত বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হয় সেটা কোন দরিদ্র তো নয় মধ্যবিত্ত এমনকি স্বল্প ধনী ব্যক্তির পক্ষে বহন করা দুঃসাধ্য। কিন্তু আমেরিকায় রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও তার সার্থক গোষ্ঠী বৈধভাবে চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে ফান্ড সংগ্রহের বিধান রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বল্প কিছুদিন আগে যে মধ্যবর্তী নির্বাচনটি হয়ে গেল তার ব্যয় সংক্রান্ত প্রাথমিক হিসেবে দেখা যাচ্ছে সেখানে প্রার্থীরা ব্যয় করেছেন পাঁচ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। শুধু ভোট কেনা নয়, আমাদের দেশে একটা চিরকালীন অভিযোগ আছে যে প্রার্থী নমিনেশন দেয়ার ক্ষেত্রে পয়সাওয়ালা প্রার্থীদেরই অগ্রাধিকার দেয়া হয়ে থাকে। সেটি নিয়ে আজকে বলতে চাই এক মজার কাহিনী। ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদের নির্বাচন উপলক্ষে ক্ষমতাসীন জেনারেল জিয়ার নবগঠিত দল বিএনপির প্রাথী বাছাইয়ের সাক্ষাতকার চলছিল। সেই বোর্ডের চেয়ারম্যান স্বয়ং জিয়াউর রহমান। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি হলেন এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। প্রার্থী বাছাইয়ের প্রশ্নে তিনি জানিয়েছিলেন যে, ইতোপূর্বে তিনি কখনও রাজনীতিও করেননি। বিড়ি প্রস্তুতের জন্য বিখ্যাত রংপুরের হারাগাছ অঞ্চলে তিনি একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। সাক্ষাতকারে যখন প্রশ্ন করা হলো- তিনি কেন বর্তমানে রাজনীতি করতে চান? এর উত্তরটি ছিল- এবার আমি জনগণের সেবা করতে চাই। আর পলিটিক্স হচ্ছে এই সেবা করার সহজ উপায়। এই কারণে আমি এমপি হতে ইচ্ছুক। যাই হোক, জিয়াউর রহমান সব শুনে তাকে বলেছিলেন আপনি এবার আসতে পারেন। এই নমিনেশন প্রার্থীর পরনে ছিল পাজামা ও পাঞ্জাবি। সরাসরি না বাচক সিদ্ধান্ত শুনে তিনি সামনের চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন হাতে ব্রিফকেস নিয়ে। যে দরজা দিয়ে ভাগ্যের খেলায় জিততে প্রবেশ করেছিলেন সে দরজা দিয়ে ফিরে যাবার আগে তিনি একটি স্বগতোক্তি করলেন। ইতোমধ্যে যারা তার মতো প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন সেসব প্রার্থীর কেউ আর পিছু ফিরে তাকাননি। কোন মন্তব্য করার দুঃসাহস না দেখিয়ে সরাসরি মাথা নিচু করে চলে গেছেন। কিন্তু এই মনোনয়ন প্রার্থীর. কিছুদূর চলে গিয়ে কালো চশমা পরা সর্বময় কর্তার সামনে রংপুরিয়া আঞ্চলিক টানে উচ্চারণ করলেনÑ -পাইসা থাকলে এমন নমিনেশন কত পাওয়া যাইবে! মানুষটির দুঃসাহস দেখে নেতার মিলিটারি কণ্ঠ- কি কি বললেন আপনি! শুধু দেশের বহু মানুষ কেন যার ভয়ে দলের ছোট থেকে বড় অবধি ভয়ে তটস্থ যাকে লক্ষ্য করে কথা বলা? প্রতিথযশা সাহিত্যিক সৈয়দ সামসুল হক তার এক উপন্যাসে একটি ডায়ালগ লিখেছিলেনসেটাও রংপুরিয়া ভাষায়- কালো চশমা পরা জিয়া সাহেবোক চেনেন? ডাঙ্গের চোটে তোমার টেংরি কিন্তু ভাঙি দিবে। অথচ কিছুদূর চলে গিয়ে কালো চশমা পরা সর্বময় কর্তার দিকে তাকিয়ে তীর্যক মন্তব্য করলেন- পইসা থাকলে এমন নমিনেশন কত পাওয়া যাইবে! মানুষটির দুঃসাহস দেখে নেতার মিলিটারি জেনারেল কণ্ঠ ঘরের ছাদ ছুঁলো- কি কি বললেন আপনি! ব্যক্তি আবার উচ্চারণ করলেন একই কথা।-স্যার, কইতেছিলাম পাইসা থাকলে এমন নমিনেশন কত পাওয়া যাইবে! এরপর জিয়া সাহেব গম্ভীর স্বরে বললেন, -শুনুন। আপনার অনেক টাকা নাকি? তা কত টাকা আছে? প্রার্থী এবার বিনয়ের ভঙ্গিতে বললেন -তা আছে কিছু! -কিন্তু কত? - সেটা অবশ্য জানি না, তবে আছে। ইলেক্শন উপলক্ষে পার্টি ফান্ডে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে পারবেন? তিনি হ্যাঁ সূচক ঘাড় নাড়লেন। ব্যাস, হয়ে গেল নমিনেশন। ‘আমি তখন শ্রম ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রীর পিআরও হিসেবে কাজ করি। এই ঘটনাটি হুলুস্থূল ফেলে দিয়েছিল সচিবালয়ে। তবে এইটুকু বললে এ কাহিনীর শেষটুকু জানা হবে না। উক্ত ব্যবসায়ী একদল কর্মী সমর্থকসহ এবার চলে গেলেন পুরানা পল্টনের মোটরসাইকেলের এক দোকানে। সেখানে গিয়ে প্রশ্ন করলেন- আপনাদের মোটর সাইকেলের ডজন কত? এমন প্রশ্নে দোকানের লোকজন তাকে পাগল ভেবে জবাব দেয়নি প্রথমে। কিন্তু তার কর্মীরা বারবার ইশারা দিয়ে যাচ্ছেন দাম বলার জন্য। অবশেষে অনিচ্ছুক হয়ে তারা কথা বললেন। রংপুরের একটি আসনে নমিনেশন লাভকারী ব্যবসায়ী সাহেব সেই দোকান থেকে একই সঙ্গে কিনলেন ‘দুই’ ডজন মোটরসাইকেল। তারপর কর্মীদের দিকে তাকিয়ে বললেন, আমি ইলেকশনে জিতলে এগুলো তোমাদের আর হারলে আমার। তবে তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন। লেখক : আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
×