ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানলে নিখোঁজের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানলে নিখোঁজের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে হাজারেরও বেশি মানুষের খোঁজ মিলছে না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। উত্তরাঞ্চলের ‘ক্যাম্প ফায়ার’ অগ্নিকা-ে এরই মধ্যে অন্তত ৭১ জনের মৃত্যু ও কয়েক হাজার ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। বিবিসি। বুটে কাউন্টির শেরিফ কোরে হোনিয়া বলেছেন, ‘এটি একটি চলমান তালিকা। আমি আপনাদের যে তথ্য দিচ্ছি তা সুবিন্যস্ত নয়। এ তালিকায় একই ব্যক্তির নাম একাধিকবার এসেছে, এমনটাও হতে পারে।’ ক্যালিফোর্নিয়ায় এখন যে কটি দাবানল সক্রিয় তার মধ্যে ‘ক্যাম্প ফায়ার’ই সবচেয়ে আগ্রাসী। এ আগুনে শুক্রবার একদিনেই ৮ জনের মৃতদেহ মিলেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নিখোঁজের সংখ্যাও বেড়েছে চারশ’র বেশি। নিখোঁজ অনেকে ভাল আছেন বলেই ধারণা কর্তৃপক্ষের। কিন্তু আত্মীয়-স্বজনরা তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়ায় নিখোঁজের তালিকায় নামগুলো রাখা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এ অগ্নিকা- এক লাখ ৪২ হাজার একর এলাকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে, যার মধ্যে আছে ২৭ হাজার মানুষের প্যারাডাইস শহরও। ‘ক্যাম্প ফায়ার’ এরই মধ্যে প্রায় ৪৭ হাজার মানুষকে বাড়ি ছেড়ে সরে যেতে বাধ্য করেছে। যাদের অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন জরুরী সেবা কেন্দ্রে, কারও স্থান হয়েছে পরিবারের অন্য সদস্য বা বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে, বাকিরা নিরাপদ স্থানে তাঁবু খাটিয়ে থাকছেন। আগুনের ভয়াবহতা দেখতে ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলতে শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্যালিফোর্নিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার দমকল বিভাগ ‘ক্যাম্প ফায়ার’ অগ্নিকা-ের ৪৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি করছে। সম্পূর্ণ দাবানল নিয়ন্ত্রণে নিতে এ মাস লেগে যেতে পারে বলেও অনুমান তাদের। সান ফ্রান্সিসকোর কাছে কন্ট্রা কোস্টা কাউন্টির ‘মর্গান ফায়ার’, লস এ্যাঞ্জেলসের ভেনচুরা কাউন্টির কাছে ‘উলসি ফায়ার’ ও তুলনামূলক ছোট ‘হিল ফায়ার’ মোকাবেলায়ও দমকলকর্মীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ‘উলসি ফায়ারে’ এরই মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। হতাহতদের দেহাবশেষ ও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের উদ্ধারে ফরেনসিক দল ও কুকুরকে সহায়তা করছেন সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। কর্মকর্তারা বলছেন, কীভাবে অগ্নিকা-গুলোর সূত্রপাত হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছেন তারা। পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটির কয়েকজন নাগরিক এরই মধ্যে স্থানীয় একটি বিদ্যুত সরবরাহ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। তাদের অভিযোগ, ওই কোম্পানির হাইভোল্টেজ সরবরাহ লাইন থেকেই ‘ক্যাম্প ফায়ারের’ উদ্ভব। তদন্ত কর্মকর্তারা অবশ্য এখনি এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। সাধারণত গ্রীষ্ম থেকে শরতের শুরু পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ায় ‘দাবানল মৌসুম’ চলে। কম আর্দ্রতা, উষ্ণ বাতাস, বৃষ্টিহীন মাসের পর শুষ্ক মাটি দাবানলের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এখন সারাবছরই এ ঝুঁকি থাকবে বলে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন।
×