ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দেশ ছাড়ছেন ভেনেজুয়েলার সুন্দরীরা

প্রকাশিত: ০২:২৪, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

দেশ ছাড়ছেন ভেনেজুয়েলার সুন্দরীরা

অনলাইন ডেস্ক ॥ দেশের অর্থনীতি ক্রমশ দুর্বল হওয়ায় ভেনেজুয়েলা ছাড়ছেন দেশটির একাধিক নারী। ‘মিস ভেনেজুয়েলা’র মতো প্রতিযোগিতার হাত ধরে যে নারীরা এতদিন কর্মসংস্থান পেতেন, অর্থনীতির পতনের ফলে সেই সুযোগ হারিয়ে যাওয়ায় দেশ ছাড়ছেন তারা। খবর ডয়চে ভেলে। আসন্ন ‘মিস ইউনিভার্স’ প্রতিযোগিতায় চিলির প্রতিনিধিত্ব করবেন ২৬ বছর বয়সী আন্দ্রেয়া ডিয়াজ। আন্দ্রেয়ার জন্ম ভেনেজুয়েলার শহর ভালেন্সিয়াতে হলেও প্রথমে পানামা ও পরে মেক্সিকো হয়ে চিলি আসেন তিনি। আপাতত এখানেই তার বসবাস। কিন্তু যে দেশের মাটিতে প্রথম র্যাম্পে হাঁটেন আন্দ্রেয়া, সেই ভেনেজুয়েলায় মডেলের চাহিদা কমতে থাকায় দেশটি ছাড়েন তিনি। কারাকাস শহরের রেডিও সঞ্চালক রাফায়েল ব্রিসেনোর মতে, নব্বইয়ের দশক থেকে ‘মিস ভেনেজুয়েলা’ শিরোপায় অংশগ্রহণ বাড়ে অল্পবয়সী নারীদের। শুধু তাই নয়, ‘মিস ইউনিভার্স’, ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ বা ‘মিস আর্থ’র মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভেনেজুয়েলার জয়যাত্রা অব্যাহত থাকায় এই ধরনের প্রতিযোগিতা হয়ে ওঠে নারীদের কর্মসংস্থানের নির্ভরযোগ্য উপায়। এই প্রতিযোগিতার মঞ্চ থেকেই উঠে আসেন বহু মডেল, অভিনেত্রী, টেলিভিশন সঞ্চালিকা থেকে মেয়র বা রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীও। কিন্তু গত কয়েক বছরে ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ খাদ্যাভাব ও মুদ্রাস্ফীতি এড়াতে অন্য দেশে বাসা বাঁধছেন। অন্যান্য শিল্পের মতোই এতে ক্ষতিগ্রস্ত সৌন্দর্য জগতও। ফলে একের পর এক সুন্দরীরা পাড়ি দিচ্ছেন মেক্সিকো, কলম্বিয়া বা পর্তুগালে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে জানা গেছে, জীবিকার খোঁজে এই নারীরা পাড়ি দিয়েছেন তুরস্ক বা ভারতের মতো দূরের দেশগুলোতেও। আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে চলা ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায় পর্তুগালের হয়ে মঞ্চে নামবেন ভেনেজুয়েলার এক সুন্দরী। এই প্রবণতার চিত্র আগেও ‘মিস আর্থ’ প্রতিযোগিতায় দেখা গেছে; যখন পেরু ও স্পেন, দুই দেশেরই প্রতিনিধিত্ব করেন ভেনেজুয়েলার দুই নারী। পেরুর প্রতিনিধি, জেসিকা রুসো বলেন, দেশ ছেড়েছি বলে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার স্বপ্ন আমি ছাড়িনি। আমার বয়স কম। আমি ভবিষ্যতে সারাবিশ্বের ভালো হয়, এমন কোনও কাজ করতে চাই। অনেকে যদিও এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতাকে দেখছেন নারীর পণ্যায়ন হিসাবে। নারীদের রোজগারের নির্ভরযোগ্য উপায় হওয়ার কারণে এই সমালোচনা সেভাবে ভেনেজুয়েলার সাধারণ মানুষের কাছে গৃহীত হয় না। শুধু অর্থনৈতিক পতন নয়, সুন্দরী নারীদের দেশত্যাগের পেছনে আছে আরও একটি কারণ। ভেনেজুয়েলায় থাকাকালীন আন্দ্রেয়া একটি ত্বক পরিচর্যা কেন্দ্রে যান। পরে দেখেন তার মুখে দেখা দিয়েছে ফুসকুড়ি। ফলে কমতে থাকে মডেল হিসেবে ভেনেজুয়েলায় তার কাজের সুযোগ। নারীর সৌন্দর্য্যের মান কেমন হবে, সেই বিষয়ে ভেনেজুয়েলার সৌন্দর্য শিল্পের অন্দরমহলে বাস করে কিছু বাঁধাধরা চিন্তা বা স্টিরিওটাইপ, যা ভাঙতে অক্ষম হলে নারীরা অন্য দেশে আশ্রয় নেন। অবশ্য চিলিতে আসার পর আন্দ্রেয়ার এই সমস্যা সমাধান হয়েছে। এখানে উন্নত মেকাপের ফলে সহজেই ঢেকে নিতে পারেন তিনি ত্বকের সব খুঁত। দুর্বল অর্থনীতি বা সামাজিক চাপ– এরকম একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে ভেনেজুয়েলা ত্যাগ করছেন সেই দেশের উঠতি তারকারা। এতে সেই দেশের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শেষপর্যন্ত লাভবান হচ্ছে অন্যান্য দেশের সৌন্দর্য বাণিজ্য।
×