ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২০১৯ সালে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

২০১৯ সালে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট মোকাবেলায় তাদের প্রত্যাবাসন ও স্থানান্তর কর্মসূচি ২০১৯ সালে শুরু করার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ আবুল কালাম। রবিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তার বরাত দিয়ে একথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত বছর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলার জবাবে দেশটির সেনাবাহিনী পরিচালিত অভিযানের মুখে সাত লাখ ২০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মতে, মিয়ানমারের সৈন্যরা এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছে, অনেক গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে এবং অনেক নারীকে গণধর্ষণ করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। জাতিসংঘের তদন্তকারীরাও দেশটির সেনাবাহিনীকে ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ এবং রোহিঙ্গাদেরকে জাতিগতভাবে নির্মূল করতে অভিযান পরিচালনার দায়ে অভিযুক্ত করেছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার জানিয়েছে, সন্ত্রাসীদের দমন করতেই এই অভিযান চালানো হয়। গত অক্টোবরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করতে সম্মত হয়। কিন্তু মিয়ানমারে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা জানিয়ে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এবং বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা এর প্রতিবাদ করে। গত ১৫ নবেম্বর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার প্রথম দফায় দুই হাজার ২০০ রোহিঙ্গাকে আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই তালিকাভুক্ত এবং শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের প্রতিবাদের মুখে শেষপর্যন্ত তা স্থগিত করা হয়। মিয়ানমারে তাদের ওপর হামলার বিচার ও নাগরিকত্বের দাবি জানিয়ে তারা বলে, নিজেদের গ্রাম ও জমি ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত দেশটিতে যাবে না। মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, আমার মনে হয় তারা এগুলো না পাওয়া পর্যন্ত ফিরে যাবে না। তার মতে, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের উচিত আরও স্পষ্ট উপায়ে প্রস্তাব করা। আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় প্রত্যাবাসন বিষয়ক পরবর্তী দ্বিপক্ষীয় সভায় তিনি এই বিষয় তুলে ধরবেন বলেও উল্লেখ করেন। এসব বিষয়ে জানার জন্য মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জাউ তায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বার্তা সংস্থাটি। বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার জানান, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচন হবে। তাই এ বছর আর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বা তাদেরকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে না। তিনি বলেন, সামনেই নির্বাচন। তাই নির্বাচনের পরেই এ সংক্রান্ত ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ চূড়ান্ত হবে। তবে এখন যদি কোনও রোহিঙ্গা শরণার্থী স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়, তবে তাকে ফিরিয়ে দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, রোহিঙ্গাদের রাখার জন্য ভাসানচরকে প্রস্তুত করার কাজ প্রায় শেষ। আমি আশা করি কিছু শরণার্থী সেখানে যেতে রাজি হবে। কারণ এই দ্বীপে তারা জীবিকা অর্জনের সুযোগ পাবে। তবে ভাসানচরে বন্যার ঝুঁকি আছে বলে সতর্ক করেছে বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা।
×