বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দন্ডিত ও পলাতক আসামি তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন কি-না, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এটা জাতির কাছেও বলতে পারি যে, একজন দন্ডিত, পলাতক আসামি এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারে কি-না? আমরা জাতির কাছেও এর বিচার চাইছি।
রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের
জবাবে তিনি আরও বলেন, দুটি মামলার একটিতে সাত বছর এবং আরেকটিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত, একজন বিদেশে পালিয়ে আছেন, তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কীভাবে অংশ নেন এ ব্যাপারে ইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এবার দলের কেউ বিদ্রোহ করলে খবর আছে। সঙ্গে সঙ্গে আজীবনের জন্য তাকে বহিষ্কার করা হবে।
জোট শরিকরা পাবেন ৬৫/৭০ আসন ॥ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের মনোনয়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন এ্যালায়েন্সের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। তারা তালিকা দিচ্ছেন। আগামীকালের (সোমবার) মধ্যে সেটা হয়ে যাবে। তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে বসতে পারি। তখন পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করব। এতে আরও ৪/৫ দিন সময় লাগবে। এবার একসঙ্গে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা মনোনয়নটা দিচ্ছি জরিপ রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে। জরিপ রিপোর্টে যাদের অবস্থা খারাপ ছিল তারা উন্নতি করেছেন। জরিপ রিপোর্টে যারা যারা এগিয়ে রয়েছেন তাদের মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নতুন মুখ আসছে, পুরান মুখও থাকছে। নবীন-প্রবীণ মিলিয়ে মনোনয়ন পাচ্ছেন। আর সব তো আমাদের থাকবে না, ১৪ দল আছে, জাতীয় পার্টি আছে, যুক্তফ্রন্ট আছে, কিছু কিছু ইসলামী দলও আছে। তারাও আমাদের জোটের পার্টনার। শরিক দলকে কতটি আসন দেয়া হবে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) যেটা এ্যাসেসমেন্ট করে বলেছেন, ৬৫/৭০টি। যদি এর মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে বিজয়ী প্রার্থী বেশি থাকলে সেটা আমরা অবশ্য অবশ্যই বিবেচনা করব। আমরাও আমাদের যারা বিজয়ী প্রার্থী না তাদেরকে বাদ দিতেও দ্বিধা করব না। যুক্তফ্রন্ট এলে জোটের আসন কমবে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ক্রিকেটার মাশরাফিকে মনোনয়ন দিলে ওখানে ওয়ার্কার্স পার্টির যিনি আছেন, সেটা হয়ত বাদ হবে। তবে ১৪ দলের যারা নির্বাচিত রয়েছেন তাদের বাদ দেয়ার চিন্তাভাবনা নেই। ১৪ দলের হোক আর জাতীয় পার্টি হোক কিংবা আর আমাদের হোক, বিজয়ী হতে না পারলে সেটি আমাদের বিবেচনা করতে হবে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। আওয়ামী লীগের এই ইশতেহার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা করার সম্ভাবনা বেশি। আওয়ামী লীগের লেজে গোবরে অবস্থা- বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তো শুনেছি এই নির্বাচনের জন্য এ্যালায়েন্স ফর্ম করে বিএনপি লেজে গোবরের মধ্যে আছে। তারা এখন কাকে কোথায় দেবে, কে সংস্কারবাদী, আমরা মাঠে ছিলাম আমরা কেন পাব না, তারা তো রোজ রোজ ঝগড়া করছে। তাই জগাখিচুড়ি ঐক্যফ্রন্ট, লেজে গোবরে ঐক্যফ্রন্ট।
রেজা কিবরিয়া কখনও আওয়ামী লীগ করেননি ॥ বিএনপি আমলে বোমা হামলায় নিহত সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার পুত্র ড. রেজা কিবরিয়া কখনও আওয়ামী লীগ করেননি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ধানের শীষে কেন তার (রেজা কিবরিয়া) সেটি তাকেই জিজ্ঞাসা করুন। আর রেজা কিবরিয়ার ধানের শীষে যাওয়াতে আমাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
ড. রেজা কেন ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যেমন ড. কামাল হোসেন আমাদের ছিলেন, যেমন সুলতান মনসুর, মাহমুদুর রহমান মান্না আমাদের ছিলেন, যেমন আ স ম আব্দুর রব ছিয়ানব্বইয়ে মন্ত্রিসভায় একসঙ্গে ছিলাম, যেমন কাদের সিদ্দিকী আমাদের সঙ্গে ছিলেন, এখন তারা ধানের শীষে। ঠিক সেই রকম এটাও। আর সে (ড. কিবরিয়া) তো আর উল্লেখযোগ্য এমন কেউ নন। আমাদের সঙ্গে তো সে কখনও ছিলেন না। তাই সে কোথায় গেল বা না গেল আর আওয়ামী লীগ করেছে তাদের অনেকে তো এখন ধানের শীষে। তাই এটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই।