ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পহেলা ডিসেম্বর আসবে

দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার হংস বলাকা আজ আসছে না

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২০ নভেম্বর ২০১৮

 দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার হংস বলাকা আজ আসছে না

আজাদ সুলায়মান ॥ দশ দিন পিছিয়েছে দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার হংস বলাকার আগমন। এটি এখন আসছে পহেলা ডিসেম্বর। আসার সিডিউল ছিল আজ মঙ্গলবার। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দ্বিতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ হংস বলাকা ঢাকায় আনার সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এ নিয়ে বিমান বহরের মোট উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩টি। নিজস্ব ৪টি ৭৭৭, ২টি ৭৩৭, ও ২টি ড্রিমলাইনার, লিজের রয়েছে ৩টি ড্যাশ-৮ ও ২টি ৭৩৭। এ ছাড়া লিজে থাকা ইজিপ্ট এয়ারের অপর দুটো ৭৭৭ মেরামত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ভিয়েতনামে। বিমান এ দুটোকে না পারছে ঠিক করতে, না পারছে ফেরত দিতে। কিন্তুু মাশুল গুণতে হচ্ছে নগদ ডলারে। এদিকে দুটো ড্রিমলাইনার দিয়ে কোন কোন রুট অপারেট করা হবে তা ঠিক করতে পারেনি বিমান। সেপ্টেম্বরে যোগ হওয়া প্রথম ড্রিমলাইনার দিয়ে শুধু মালয়েশিয়া আর সিঙ্গাপুর ছাড়া অন্য কোন রুটে অপারেট করা সম্ভবপর হয়নি। যদিও আকাশবীণা দিয়ে লন্ডনের ফ্লাইট অপারেট করা হচ্ছে। দীর্ঘ এ রুটে সাধারণত সুপরিসর ৭৭৭ উড়োজাহাজের লোড ফ্যাক্টর সন্তোষজনক। সেখানে ড্রিমলাইনার অপারেট করা হলে বাণিজ্যিকভাবে কতটা লাভবান হবে সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে বিমানের মার্কেটিং পরিচালক আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, দুটো ড্রিমলাইনার দিয়ে আপাতত লন্ডন ফ্লাইট অপারেট করা হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে সপ্তাহে ৬টি ফ্লাইট। এ সম্পর্কে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ বলেছেন, আপাতত মনে হতে পারে যে, নতুন রুট ছাড়া এ দুটো ড্রিমলাইনার দিয়ে কি করা হবে। বাস্তবতা হচ্ছে- ড্রিমলাইনার দুটো বিমানবহরে যোগ হলেও ক্যাপাসিটি না বেড়ে কমেছে। কারণ বিমানে লিজে থাকা ইজিপ্ট এয়ারের দুটো ৭৭৭-৩০০ ইআর ছেড়ে দিতে হচ্ছে। বিশালাকারের দুটো ছেড়ে দিয়ে মধ্যম সারির দুটো যোগ হয়েছে। কাজেই এগুলো অলস থাকার কারণ নেই। এ সম্পর্কে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ আশীষ রায় চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, ড্রিমলাইনারের মতো নিউ জেনারেশনের এয়ারক্রাফট দিয়ে শুধু মালয়েশিয়া আর কুয়ালালামপুর ফ্লাইট অপারেট করাটা মোটেও ব্যবসায়িকভাবে নির্ভরযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে বিমানকে নতুন নতুন রুট খুলতে হবে। এক্ষেত্রে বিমান মিড র‌্যাঞ্জের ঝুয়াংজু, রোম, অস্ট্রেলিয়া, বার্লিন, নারিতা, হংকং, দিল্লী, কলম্বোর মতো রুট চালু করতে পারে। কিন্তু বিমানের তো এ ধরনের কোন পরিকল্পনাই নেই। আগামী দুতিন বছরেও যে সে সম্ভাবনা রয়েছে তেমন কোন লক্ষণও দেখছি না। তৃতীয় ও চতুর্থ ড্রিমলাইনার গাঙচিল ও রাজহংস বিমানের বহরে যুক্ত হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ। তখন এ চারটি ড্রিমলাইনার দিয়ে কি করা হবে সেটাই দেখার বিষয়। বিমান জানিয়েছে, প্রথম দিকে সিডিউল ছিল ২০ নবেম্বর আসার। পরে বোয়িং কোম্পানিই তাদের সুবিধা অনুযায়ী সময়সূচী কিছুটা পরিবর্তন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে ৩০ নবেম্বর উড়োজাহাজটি বোয়িং কোম্পানি বিমানের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করবেন। ওইদিন দুপুর ১টায় এটি ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে। দ্বিতীয় ড্রিমলাইনারটি বিমানের নিজস্ব বৈমানিকই পরিচালনা করে বাংলাদেশে নিয়ে আসবেন। এটি বিমানবহরে যোগ হওয়ার পর কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, উড়োজাহাজের রেজিস্ট্রেশনসহ কিছু প্রক্রিয়া শেষ করতে ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগবে। এসব প্রক্রিয়া শেষে হংসবলাকা বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য উপযুক্ত হবে। উল্লেখ্য, গত ১৯ আগস্ট রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সে যুক্ত হয় প্রথম ড্রিমলাইনার আকাশবীণা। ওই সময়ও বিমানের বৈমানিক উড়োজাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল পেনফিল্ড থেকে কোন যাত্রা বিরতি ছাড়া টানা সাড়ে ১৪ ঘণ্টা উড়ে ঢাকায় নিয়ে আসেন। জ্বালানি সাশ্রয়ী বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক এই উড়োজাহাজ চালনার জন্য বিমান ১৪ জন ক্যাপ্টেনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এর বাইরে সহ-বৈমানিক হিসেবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে আরও ১০ জন ফার্স্ট অফিসারকে। ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ বলেছেন, ড্রিমলাইনার দুটো দিয়ে লন্ডন ফ্লাইট চালু করা হবে। সপ্তাহে ৬টি ফ্লাইটের অনুমতি মিলেছে এডহক ভিত্তিতে। অর্থাৎ তিন মাসের জন্য প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বিমান কতটা নির্ভরযোগ্যতার সঙ্গে ৬টি ফ্লাইট চালু করতে সক্ষম।
×