ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নয়াপল্টনের ঘটনা ফৌজদারি অপরাধ ॥ ইসি

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২০ নভেম্বর ২০১৮

 নয়াপল্টনের ঘটনা  ফৌজদারি  অপরাধ ॥ ইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা নিয়ে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনাকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে বলে ইসি সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তবে এই ঘটনায় নিরপরাধ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতেও পুলিশকে বলা হয়েছে। গত ১২ নবেম্বর থেকে বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নয়াপল্টন অফিসে জমায়েত হয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের তৃতীয় দিনে পুলিশের সঙ্গে হঠাৎ সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপি ক্যাডাররা। বিএনপি ক্যাডাররা এ সময় অফিসের সামনে থাকা পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, ভাংচুর চালায়। এতে পুলিশসহ অনেকে আহত হয়। পুলিশ এ ঘটনায় বাদী হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ৭২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে নির্বাচন সামনে রেখে এই ঘটনায় পুলিশের কাছে তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে বসে নির্বাচন কমিশন। রবিবার রাতে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ইসিতে কমিশনে পাঠানো হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে বিষয়টি পর্যলোচনার জন্য সোমবার বিকেলে কমিশনের বৈঠক ডাকা হয়। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, অন্য চার কমিশনার ও কমিশন সচিব উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, পল্টনের ঘটনার বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয় ইসির সভায়। মিটিং শেষে ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, নয়াপল্টনে ফৌজদারি অপরাধ হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলবে। তবে এক্ষেত্রে নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য আইজিপিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কমিশন নির্বাচনে সকলের সহযোগিতা চেয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য সকলের সহযোগিতা চেয়েছে কমিশন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে ভোটার, প্রার্থী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তিনি বলেন, পর্যালোচনা করে ইসি দেখেছে, নয়াপল্টনে যে ঘটনা হয়েছে তা ফৌজদারি অপরাধ, যার ফলে এটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে আমরা বলেছি। ইসি সচিব বলেন, গত ১৪ নবেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে যে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের আইজিপির কাছ থেকে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিরবণ চেয়ে একটি প্রতিবেদন তলব করেছিল কমিশন। গত রবিবার আইজিপি মহোদয় অডিও-ভিডিও, স্থিরচিত্রসহ আমাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করে। সেই প্রতিবেদন কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকে এ বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়। তিনি বলেন, এই ঘটনার কারণে কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে যাতে অহেতুক হয়রানি করা না হয় সেজন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর আগামীতেও যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ যাতে ক্ষুণœœ না হয় সে বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের সহযোগিতা কামনা করেছে ইসি। পুলিশের ওপর হামলা আর সেই হামলার তদন্ত তাদেরই ওপর কেন- এই প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত করার একমাত্র এখতিয়ার পুলিশের। তবে আমরা পুলিশকে বলেছি, নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে। কমিশনে জমা দেয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলার তালিকার বিষয়ে বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মামলার যে তালিকা দেয়া হয়েছে, তা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক মামলাই তফসিল ঘোষণার আগে হয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। তবে যেগুলো তফসিল ঘোষণার পর হয়েছে, সেগুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশন আবার বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
×