ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পকে ঝামেলায় ফেলতে পারবে কী ডেমোক্র্যাটরা

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮

ট্রাম্পকে ঝামেলায় ফেলতে পারবে কী ডেমোক্র্যাটরা

এবারের মার্কিন মধ্যবর্তী নির্বাচনে সিনেটে রিপাবলিকানদের প্রাধান্য বজায় থাকলেও প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। এতে করে ফেডারেল সরকারের কার্য পরিচালনার ধারা কিভাবে পরিবর্তিত হবে? ডেমোক্র্যাটরা কি ট্রাম্প প্রশাসনের সবকিছুতেই বাগড়া দিয়ে বসবে? তেমনটি না হওয়ারই সম্ভাবনা। ন্যান্সি পেলোসিÑ যিনি সম্ভবত পরিষদের স্পীকার পদে ফিরে আসবেন, তিনটি ক্ষেত্রে ট্রাম্পকে সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ক্ষেত্র তিনটি হলো অবকাঠামো উন্নয়ন, ওষুধের মূল্য হ্রাস এবং ওয়াশিংটনের পরিবেশে পরিচ্ছন্নতা আনা। বিগত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানের সময় ট্রাম্প এই তিনটি বিষয়ে কিছু করার প্রতিশশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং এ সংক্রান্ত নিজ নিজ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। কোন্ পরিকল্পনাটি ট্রাম্প অনুমোদন করেন সেটাই দেখার বিষয়। প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা মনে করেন অন্য যে কোন ইস্যুর চেয়ে স্বাস্থ্য সেবা ইস্যুটিই তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাইয়ে দিয়েছে। তাই তারা এফোর্ডেবল হেলথ্্ কেয়ার এ্যাক্ট রাখতে বিল উত্থাপন করতে পারেন এবং ট্রাম্প তাতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। তারা ড্রিম এ্যাক্ট পুনরুজ্জীবিত করতে পারেন। শিশু হিসেবে আমেরিকায় আসা বেআইনী অভিবাসীদের। বহিষ্কারের হাত থেকে রক্ষা করার এটা এক ব্যাপক জনপ্রিয় পদক্ষেপ। এই আইনটি পুনর্বহাল করা হলে রিপাবলিকানরা আবারও এমনভাবে এর বিরোধিতা করতে বাধ্য হবে যা বেশিরভাগ মানুষের কাছে অপ্রিয় বলে মনে হবে। এমনকি রিপাবলিকান সদস্যরা তাদের নিজ নিজ ঘাঁটি এলাকায়ও অজনপ্রিয় হয়ে দাঁড়াবেন। ভোটাধিকার রক্ষা কিংবা ফেডারেল ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির আইন পাসেরও উদ্যোগ নিতে পারেন ডেমোক্র্যাটরা। তবে প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার আসল মজাই হলো কংগ্রেসের বিভিন্ন কমিটি এবং এসব কমিটির তদন্ত করার ও সমন জারি করার ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা। রিপাবলিকানরা প্রশাসনের ওপর নজরদারির ব্যাপারে তেমন কোন আগ্রহ দেখায়নি। এবার ডেমোক্র্যাটরা প্রশাসনের ব্যাপারে বেশ কিছু তদন্ত শুরু করবে। প্রতিনিধি পরিষদের ওয়েস এ্যান্ড মিনস্্ কমিটি প্রেসিডেন্টের আয়করের রিটার্ন দেখতে চাইবে। ডেমোক্র্যাটরা আশা করেন যে এ থেকে প্রেসিডেন্টের ঘোলাটে কিছু বিষয়ের এমন সব দিকের ওপর আলোকপাত ঘটতে পারে যা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। কিছু বিব্রতকর তথ্যও বেরিয়ে আসতে পারে যেমন প্রেসিডেন্ট নিজেকে যতটা ধনী বলে দাবি করেন ততটা ধনী তিনি কী-না। আরও তিনটি কমিটি আছে সেগুলো অধিকতর গতানুগতিক বা প্রচলিত নজরদারির ভূমিকা পালন করবে। যেমন ওভারসাইট ও সংস্কার কমিটি, বিচার বিভাগীয় কমিটি এবং গোয়েন্দা কমিটি। ওভারসাইট কমিটির সম্ভাব্য চেয়ারম্যান এলিজা কামিংস বলেছেন তিনি সংখ্যালঘুর ভোটাধিকার দমন ও ওষুধের উচ্চ মূল্যের মতো অধিকতর জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর তদন্ত করতে চান। তা ছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা নানা স্ক্যান্ডালে জর্জরিত তাদের ব্যাপারেও তদন্ত করা হবে। বিচার বিভাগীয় কমিটির সম্ভাব্য চেয়ারম্যান জেরি নাদলার। রিয়েল এস্টেট ঘটিত বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তার দারুণ ঠোকাঠুকি। তিনিও নিজের ক্ষমতা জাহির করার চেষ্টা করবেন। অভিবাসী পরিবারগুলোকে পৃথক করার বিতর্কিত নীতি এই কমিটি তদন্ত করে দেখবে। গোয়েন্দা কমিটির পরবর্তী চেয়ারম্যান এডাম শিফ। নির্বাচনের সময়কার রুশ হ্যাকার এবং তাদের সঙ্গে ট্রাম্পের প্রচার টিমের সহযোগিতার অভিযোগ নিয়ে এই কমিটি প্রশাসনকে কত কঠিনভাবে চেপে ধরতে পারবে সেটা নির্ভর করছে রবার্ট মুয়েলারের ক্ষেত্রে কি ঘটবে তার ওপর। বিশেষ কৌঁসুলি মুয়েলার আরও বৃহত্তর পরিসরে এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। ট্রাম্প সেই তদন্ত কাজের পরিসর খর্ব করতে পারেন। যদি তাই হয় সেক্ষেত্রে শিফ অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আবির্ভূত হবেন। তখন তিনিই সম্ভবত হবেন ট্রাম্প ও রাশিয়া সম্পর্কিত প্রকৃত সত্য উন্মোচনের ব্যাপারে শেষ ভরসা। সূত্র : দি ইকোনমিস্ট
×