ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয়ের রঙে রাঙা দিন

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

বিজয়ের রঙে রাঙা দিন

বিজয়ের মাস মানে লাল সবুজের প্রকৃত ভালবাসার মাঝে দেশপ্রেম ভাবকে ফুটিয়ে তোলা সবুজের বুকে লাল বা সবুজ ও লালের নিবিড় আলিঙ্গন। বিজয়ের এই মাসে ফ্যাশন হাউসগুলো একটু ভিন্ন রূপের আয়োজন করে থাকে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস বিভিন্ন ক্যাটাগরির পোশাক দিয়ে তাদের হাউসগুলো সজ্জিত করে। ক্রেতারাও ভিড় করছে এই ফ্যাশন হাউসগুলোতে, বৈচিত্র্য পূর্ণ ডিজাইন আর লাল সবুজ রং দেখে তরুণ দেশপ্রেমিকরা কিছু না কিছু কিনছেই। জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউসগুলোর মধ্যে রয়েছে অজ্ঞনস, নগরদোলা, কে-ক্রাফট, নবরূপা, চরকা, বাংলার মেলা, বুনো, ১৯৭১, পৌষ, আড়ং ইত্যাদি। এইসব ফ্যাশন হাউসগুলো সম্পর্কে ও এর দরদাম সম্পর্কে একটু জেনে নিতে পারেন। ফ্যাশন হাউসগুলো বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশীর কাপড় দিয়ে তৈরি করেছে শাড়ি, থ্রি পিচ, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও শিশুদের পোশাক বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস বিভিন্ন দামে তাদের পণ্য বিক্রি করছে, প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ধরন করেছে। নগর জীবনের দিকে দৃষ্টি রাখলেই এর প্রতি বিশ্বটা চোখে পড়বে। সব বয়সের বাঙালী নারী-পুরুষে মধ্যেই বিজয় দিবসের ছাপটা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। শাড়ি, থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, টিশার্টসহ সব ধরনের পোশাকেই বিজয় দিবসে বাংলার প্রতিকৃতি লাল সবুজের পতাকা অঙ্কিত হয়ে যেন প্রতিটা ড্রেসই হয়ে ওঠে এক একটি পতাকা। ইতিহাসের এই অবিস্মরণীয় দিনটিকে মহিমান্বিত করে তোলার লক্ষ্যে ফ্যাশন ডিজাইনারও কবিতার পঙ্ক্তিমালা থেকে শুরু করে নানা বিষয় তুলির আঁচড়ে উৎকীর্ণ করেন। পোশাকের বুকে উদ্ভাসিত হয় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের অবিনশ্বর পঙ্ক্তি গাথা এবং মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতিসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নানা চিত্র। সব মিলিয়ে বাঙালীর স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটা মুহূর্তকে ফ্যাশন ধারায় এক অন্য মাত্রায় চিত্রিত হতে দেখা যায় বিজয় দিবসের ফ্যাশনে। যা বাঙালীর চির স্বাধীনচেতা বৈশিষ্ট্যেরই প্রতিচ্ছবি। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে যে নির্মমতা দেখিয়ে ছিল পাকহানাদার বাহিনী সেই নির্মমতার গহনে যেমন লিপিবদ্ধ হয়েছে অজস্র এলিজিঃ। রচিত হয়েছে মন খারাপ করা এপিটাফ। পাশাপাশি নয় মাস যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জনের পর একইভাবে রচিত হয়েছে অসংখ্য অজস্র বিজয় গাথাও। আর এই বিজয় গাথার মুকুটে আরও একটি স্বর্ণোজ্জ্বল পারক গুঁজে দিয়েছে বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির মন্ত্রে সিক্ত ফ্যাশন ধারা। ফ্যাশন হাউস নবরূপা রাজধানীতে যতগুলো ফ্যাশন হাউস রয়েছে তার মধ্যে নবরূপা একটি। নবরূপা ও সেজেছে লাল সবুজের রঙ্গে, যতগুলো নবরূপা শো-রুম রয়েছে প্রায়। প্রত্যেকটিতেই পাবেন শাড়ি, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, সালোয়ার কামিজ, ওড়না ইত্যাদি। বিজয়ের মাসে প্রায় সব প্রদর্শিত পোশাকই বিজয়ের রঙে রাঙানো। এই ফ্যাশন হাউস তাদের পণ্যের দাম নির্ধারণ করেছে শাড়ি ৭৫০ টাকা থেকে ১৫শ’ টাকা, ফতুয়া ৪৫০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা, সেলোয়ার কামিজ ৮৫০ টাকা থেকে ১২শ’ ৫০ টাকায়। ফ্যাশন হাউস কে-ক্রাফট্ বছরের শেষ মাস কিন্তু আনন্দের, মহান এই বিজয়ের মাসে অন্য সব ফ্যাশন হাউসের মতো কে-ক্রাফট ফ্যাশনে যুক্ত করেছে বিজয়ের পোশাক। প্রত্যেক ফ্যাশন হাউসগুলো তাদের নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি কাপড়ের ধরন ও মূল্যের আকর্ষণ রাখছেই। কেউ সুতি, আবার কেউ বা খাদি, তাঁত, কটনের ওপর বেশি প্রধান্য দিচ্ছে। কে-ক্রাফট তাদের এক্সক্লুসিভ সব পণ্যের এবারে যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তা আপনাদের জানিয়ে দিচ্ছি পাঞ্জাবি ১ হাজার ৩শ’ টাকা, ফতুয়া ৭শ’ থেকে ১২শ’ টাকা, সালোয়ার কামিজ ২ হাজার ৬শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার ২শ’ টাকা, শাড়ি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকা। ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’স বিজয়ের এই মাসে অঞ্জন’স সকল শো-রুম লাল সবুজে সাজিয়েছে। ফ্যাশন জগতে অঞ্জন’স এক পরিচিত নাম। এবার বিজয়ের মাসে অঞ্জন’স আয়োজন করছে বিশাল ফ্যাশন। বাচ্চাদের জন্য ও অঞ্জন’স দিচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক। বরাবরই ক্রেতারা বলে আসছেন অজ্ঞনসের মূল্য তালিকা ক্রেতা সাধারণ ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই থাকে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেচ্ছে অঞ্জন’স পাঞ্জাবি দাম নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ২শ’ টাকা থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। ছোটদের পাঞ্জাবি ৪শ’ থেকে ২৫শ’ টাকায় এবং ফ্রক ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে, টি-শার্ট ৩শ’ থেকে ১ হাজার টাকায়। ফ্যাশন হাউস চরকা অন্য সব ফ্যাশন হাউস থেকে পিছিয়ে নেই ফ্যাশন হাউস চরকাও বিজয় দিবস কে সামনে রেখে লাল সবুজের মিশ্রণে চরকা তৈরি করেছে ফতুয়া, পাঞ্জাবি, শাল ও শাড়ি। ফ্যাশন হাউসগুলোর প্রতিযোগিতার কথা মাথায় রেখে চরকা তাদের বিভিন্ন তালিকা ক্রেতা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রেখেছে চরকার বিশেষ আকর্ষণ কুর্তা। এই ফ্যাশন হাউসটি কুর্তার দাম নির্ধারণ করেছে ৮শ’ থেকে ১২শ’ টাকার মধ্যে, শাড়ি সালোয়ার তো রয়েছেই। কামিজের দাম ৬৫০ থেকে ৮ হাজার ৫শ’ টাকা পাঞ্জাবি ৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা শার্ট ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা আর শাল ২৫০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং এই ফ্যাশন হাউসে ২০ হাজার টাকারও বেশি মূল্যের পোশাক পাবেন। ফ্যাশন হাউস বাংলার মেলা বাংলার মেলা নামক ফ্যাশন হাউসটি বিজয় দিবস উপলক্ষে এনেছে দেশীয় কাপড়ের তৈরি শাড়ি, ফতুয়া, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস ইত্যাদি। প্রতিটি পোশাকে ফুটিয়ে তুলেছেন বিজয়ের ছাপ। এই ফ্যাশন হাউসে পাঞ্জাবি পাবেন ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাাজর ২শ’ টাকায়। ছোটদের পাঞ্জাবি ৬৫০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা ছোটদের ফতুয়া ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা। মেয়েদের ফতুয়া ৭৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা। টি-শার্ট ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, সুতি শাড়ি ১৬৫০ টাকা ১৭৫০ টাকা, সালোয়ার কামিজ ২ হাজার ৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪৫০ টাকার মধ্যে। বাংলার ঐতিহ্য আর আনন্দ উপভোগ করার মতো দিবসগুলো আরও বেশি মনে রাখার জন্য পছন্দের পোশাক পরে সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর জায়গায় ভ্রমণ করতে পারেন। স্মৃতিকে ধরে রাখতে চাইলে সুন্দর মুহূর্তের কিছু ছবি তুলে রাখতে পারেন। লাল সবুজের মিশ্রিত রঙের পোশাক আপনাকে আরও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করুক, আপনাদের মনে আরও বেশি বেশি দেশপ্রেম জাগ্রত হোক। দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবাসুন। বাঙালী এখন উৎসব প্রিয় এক জাতি। বিজয় দিবসও তেমনি এক উৎসব। এ উৎসবের প্রভাব ফ্যাশন হাউসগুলোতে বেশ ভালোভাবেই লক্ষণীয়। লাল সবুজকে প্রাধান্যদিয়ে পোশাক তৈরির প্রস্তুতি বেশ আগে থেকেই নিয়ে থাকে ফ্যাশন হাউসগুলো। এবারের বিজয় দিবসের উৎসব ভিন্ন এক মাত্রায় উপস্থিত হয়েছে ফ্যাশন প্রিয় বাঙালীর জীবনে। এরই মধ্যে বিজয় দিবসের ড্রেস কালেকশনের লক্ষ্যে তরুণ-তরুণীসহ সবার মধ্যেই বিপুল আগ্রহের ছাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং বুটিক শপগুলোতে চলছে কেনাকাটার ধুম। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে টিশার্ট এবং ফতুয়ার চাহিদা বেশি হলেও পাঞ্জাবি, থ্রিপিস, শাড়ি, উত্তরীয় শোপিস, রুমালের চাহিদাও কম নয়। তবে প্রতিটা ড্রেসেই থাকছে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনে লাল-সবুজের ছোঁয়া। প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন হাউসগুলো বিজয় দিবসের ড্রেসে আউটলেটগুলো ইতোমধ্যে সাজিয়ে তুলেছে। ড্রেসের সঙ্গে থাকছে নানা রকম শোপিসও। বাঙালী জাতির জীবনে ২৬ মার্চ একটি অমোঘ দিন। যে দিনটিকে ঘিরে সমগ্র বাঙালীর জাতি হয়ে ওঠে আবেগাপ্লুত। আবেগের এই স্পন্দিত আবহটা এবারের ১৬ ডিসেম্বরেও থাকবে বর্ণোজ্জ্বল গুঞ্জনে মুখর। মডেল : সাইফ, রুশনিলা, জেসমিন মৌসুমি পোশাক : ফড়িং ও মেঘ
×