ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জুবায়ের বারি

পাখির সঙ্গে উড়বে মানুষ!

প্রকাশিত: ০৮:০১, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

পাখির সঙ্গে উড়বে মানুষ!

পরিযায়ী পাখিরা দূর-দূরান্তরে পাড়ি দিতে অভ্যস্ত। তবে খাঁচার পাখিদের সেই ক্ষমতা ও অভিজ্ঞতা নেই। ফ্রান্সের এক আবহাওয়াবিদ অত্যন্ত যতেœর সঙ্গে অভিনব কায়দায় লুপ্তপ্রায় পাখিদের আকাশে ওড়ার শিক্ষা দিচ্ছেন। পাখির মতো বাতাসে ভেসে বেড়ানো, তাও আবার পাখিদেরই সঙ্গেÑঅত্যন্ত হালকা এক উড়োজাহাজের কল্যাণে পর্যটকরা ফ্রান্সে এমন বিরল অভিজ্ঞতার স্বাদ পেতে পারেন। শৈশব থেকেই পাখি সম্পর্কে ক্রিস্টিয়াঁ মুলেক আবহাওয়াবিদের বিপুল আগ্রহ ছিল। পাখি সুরক্ষার লক্ষ্যে এক প্রকল্পের আওতায় এমন উড়ালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুলেক বলেন, ‘এই পাখিদের দূরে পাড়ি দিয়ে আবার প্রকৃতিতে বিচরণ করার কায়দা শেখানোর চেষ্টা করি। শিকারের কারণে তারা লুপ্তপ্রায় হতে বসেছিল। খাঁচায় থাকা নতুন প্রজন্মের পাখিদের পরিযায়ী পাখি হিসেবে প্রশিক্ষণ দেয়ার চেষ্টা করি, যাতে তারা জার্মানির দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে সংরক্ষিত এলাকায় শীতযাপন করতে পারে।’ ক্রিস্টিয়াঁ মুলেক-এর প্রায় ২০০ পাখির সঙ্গে অন্য প্রাণীও শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে। ফ্রান্সের ওরিয়াক এলাকায় তাঁর খামারে লুপ্তপ্রায় প্রাণী হিসেবে স্বীকৃত ১২টি প্রজাতি আশ্রয় পেয়েছে। দিনে কমপক্ষে একবার, প্রধানত সকালেই তিনি পাখিদের নিয়ে আকাশে ওড়েন। প্রত্যেক উড়ালের আগে হালকা বিমানটি ভালভাবে পরীক্ষা করা হয়। মুলেক বলেন, ‘অনেক বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হয়, যাতে পাখিদের কোন আঘাত না লাগে। অন্য পাইলটদেরও পাখিদের সঙ্গে ওড়ার প্রশিক্ষণ দিয়েছি, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই সেটা শিখতে পারে না। আমি পারি, কারণ আমার পাখিদের প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ আছে। তাদের আঘাত লাগতে দেই না। বিমান চালনার প্রতি আমার মনোযোগ কম থাকে।’ হাঁসগুলো পোষা হলেও তাদের নিজস্ব মর্জিমেজাজও কম নয়! উড়ালের আগে হাঁসগুলোও খুব উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তারপর উড়ালের পালা। মাটি ত্যাগ করার সময় কিছুটা ভয় পেলেও আকাশে উড়ে মেগিন নিজের অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে লাগলেন। ক্রিস্টিয়াঁ মুলেক তাঁর সহযাত্রীদের উড়ন্ত হাঁসের সাবধানে স্পর্শ করতেও উৎসাহ দেন। এত কাছে থাকায় তাদের স্পর্শ করাও সহজ। মেগিন লেই বলেন, ‘গুজবাম্প বা গায়ে কাঁটা দেয়া কাকে বলে, তা সত্যি বুঝতে পারছি। এমন রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা আমার কখনও হয়নি।’ প্রায় ৩৫ মিনিট ওড়ার পর আবার নিচে নামার পালা। সেই প্রক্রিয়া ওড়ার তুলনায় বেশি ভয়ানক মনে হয়। পাখিদের অবশ্য নিচে নামার কোন ইচ্ছে নেই। মেগিন লেই বলেন, ‘পাখিদের সঙ্গে উড়ে আবেগে চোখে পানি এসে গিয়েছিল। এমন অসাধারণ অভিজ্ঞতার জন্য ধন্যবাদ ক্রিস্টিয়াঁ।’ এভাবে দিন শেষ হলো। বাতাস ও ডানার নিচে ওড়ার অনুভূতির রেশ কিন্তু এখনও রয়ে গেছে। সূত্র : সায়েন্স ডেইলি, ডয়েচ ভেলে
×