ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জানা-অজানা ॥ বন্ধু ছাড়া মানুষের জীবন কি খুব কঠিন?

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮

জানা-অজানা ॥ বন্ধু ছাড়া মানুষের জীবন কি খুব কঠিন?

ব্রিটিশ রেড ক্রসের এক গবেষণা অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে লাখ লাখ মানুষ একাকীত্ব কিংবা সামাজিক বিচ্ছিন্নতায় ভুগছেন। যাদের ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে তাদের মধ্যে প্রায় চার হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বলেছেন তাদের কোন ঘনিষ্ঠ বন্ধু নেই। আবার এক-তৃতীয়াংশও বলছেন কথা বলার মতো কেউ নেই বলে প্রায়শই তারা একা বোধ করেন। যদিও অনেকে মনে করেন একাকীত্বের মতো বিষয়টি আসলে বয়স্কদের ওপরই প্রভাব ফেলে কিন্ত এই গবেষণা বলছে তরুণ প্রাপ্তবয়স্করাও এখন এ ধরনের সমস্যা অনুভব করেন। হ্যাজেল নামে একজন বলেছেন তিনি নতুন এ৩কটি এলাকায় আসার পর অন্তত তিন বছর কোন বন্ধু তৈরি করতে পারেননি। মাত্র বিশ বছর বয়সে বার্মিংহামে বড় হওয়া এ তরুণী অন্য একটি এলাকায় যান যেখানে তার স্বামী বাস করেন। ‘অনেকেই আমাকে বলেছেন বন্ধু তৈরি করা সহজ কিন্তু আমি আসলে অনেক লড়াই করেছি।’ তিনি বলেন, ‘সব সময়ই এটা কঠিন মনে হয়েছে আমার কাছে। শৈশবে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে আমাকে। আমি আসলে আমার সহোদরদের মতো ছিলাম না এবং সামাজিকভাবে মেশার বিষয়গুলো আমি ততটা শিখে উঠতে পারিনি।’ হ্যাজেল বলেন, তিনি মনে করেন কিছু মানুষের মধ্যে এ বিষয়গুলো আসলে প্রাকৃতিকভাবে হয়ে ওঠে আর কিছু মানুষকে সংগ্রাম করতে হয়। হ্যাজেল বিষয়গুলো নিয়ে তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তাতে কোন সমাধান আসেনি। ‘মানুষকে বিশ্বাস করাই কঠিন হয়ে উঠেছিল। ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলো হারাতে শুরু করলে আপনি আসলে আত্মবিশ্বাসটাই হারাতে শুরু করবেন।’ সব সময় এক ধরনের উদ্বেগের মধ্যে থাকতেন তিনি কিন্তু কখনই চিকিৎসকের কাছে যাননি। পরে অবশ্য তিনি যখন গর্ভবতী হয়ে পড়েন তখন এ অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। হ্যাজেলের জন্য মাতৃত্ব তাকে একাকীত্বের চক্র ভাঙতে সহায়তা করেছে। আবার সিমোনা ভারানিউট যখন লিথুনিয়া থেকে বেলফাস্টে যান এবং প্রথম ছয় মাস তার ভালই কেটেছে। ‘এটাই ছিল আমার প্রথম কোন দেশে যাওয়া। আমি ভাবলাম এসেছি এবং কয়েক সপ্তাহ থেকে বাড়ি ফিরে যাবো। বিষয়টা আমি পছন্দ করেছিলাম।’ তবে একাকীত্ব বিষয়টা অনুভব করেছিলাম পরে। ‘আমি যেখানে থাকতাম সেখানকার লোকজন বন্ধুবৎসল। কিন্তু ঠিক বিশ্বাস করার মতো নয়’ এবং তার সন্তান সেবাস্তিনের ছেলে জন্ম নেয়ার পর এটা আরও কঠিন হয়ে যায়। সিমোনা অবশ্য বলছেন ছেলের সঙ্গে সময়টা তার দারুণ কেটে যায়। কিন্তু দিনের লম্বা সময়টা কাটানো ততটা সহজ ছিল না। ‘মনে হতো চার দেয়ালের মধ্যে আটকে আছি। আমি বসে না থেকে বাইরে যেতে চেয়েছি।’ পরে চ্যারিটি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হলে একটি কমিউনিটির সঙ্গে তার যোগসূত্র গড়ে ওঠে। এখন তার পরামর্শ হলো, কোন নতুন পরিবেশে ভয় পাওয়া বা সাহায্য চাইতে লজ্জিত হওয়া উচিত নয়। সূত্র : বিবিসি
×