বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা এখনও ব্যর্থ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দুর্নীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। যারা ব্যাংক লুট করেন, যারা উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতিবাজ, তাদের বিরুদ্ধে দুদকের তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করার দৃষ্টান্ত নেই। এ কারণে আমরা উদ্বিগ্ন।
রবিবার সকালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)-তে ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত এক মানববন্ধনে টিআইবি-এর প্রধান নির্বাহী ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আফগানিস্তান ছাড়া বাকি দেশগুলো আমাদের চেয়ে এগিয়ে। এছাড়া দেশের প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা দুর্নীতিতে জড়িত। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের কাছে দাবি জানাই। এছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণস্থানে দুর্নীতির সহায়ক পরিবেশ রয়েছে। দুর্নীতি বিষয়ক সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তা পালন করা হয়নি।
তিনি বলেন, ৫৭ ধারা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে দেশের মানুষের বাক-স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। তিনি এসব কালো আইন বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
মানববন্ধনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দুর্নীতি প্রতিরোধে ১০ দফা সুপারিশ করে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হলো : আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো কর্তৃক গণতন্ত্র ও সুশাসনের বিদ্যমান ঘাটতি পূরণে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার থাকতে হবে এবং কিভাবে বাস্তবায়িত হবে তার সুনির্দিষ্ট রূপরেখাও থাকতে হবে, নির্বাচনে কালো টাকার প্রভাব কমাতে প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসেব পর্যবেক্ষণ করতে হবে, সরকারী খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে ‘সরকারী চাকরি আইন’ এর বিতর্কিত ধারাসমূহ বাতিল করা, ঋণ খেলাপীতে জর্জরিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও জালিয়াতি এবং বেসরকারী ব্যাংকের নজিরবিহীন আর্থিক কেলেঙ্কারিতে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা; বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় পেশাদারী উৎকর্ষ ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সমন্বিত ও পরিপূরক কৌশল গ্রহণ করা, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ও সদস্যদের নিয়োগে যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, তথ্য অধিকার আইনে ব্যবসায়িক, রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং আইনের বাস্তবায়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তথ্য প্রকাশকারী এবং তথ্য চাহিদাকারী উভয় ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদককে শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।