ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এখনও কোন চ্যালেঞ্জ দেখছেন না যোশি

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮

এখনও কোন চ্যালেঞ্জ দেখছেন না যোশি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেস্ট সিরিজে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নাস্তানাবুদ করেছে বাংলাদেশের স্পিনাররা। সে সময় দলের পেসারদের নিয়ে শুরু হয়েছিল শঙ্কা। বিশেষ করে দ্বিতীয় টেস্টে কোন স্বীকৃত পেসার না খেলার কারণে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে বিষয়টি নিয়ে কানাকানি হয়েছে। কিন্তু যখনই ফরমেটে পরিবর্তন এসেছে, ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করেছেন পেসাররা। স্পিনারদের অবদানটাই ছিল কম। দেশের মাটিতে স্পিনবান্ধব উইকেটে যখন এমন পরিস্থিতি, উপমহাদেশের বাইরে স্পিনাররা কেমন করবেন? তখন পেসবান্ধব উইকেটে চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে হবে বাংলাদেশী স্পিনারদের। তবে বোলিং কোচ সুনীল যোশি এখনও দেশের মাটিতে তেমন কোন চ্যালেঞ্জ দেখছেন না স্পিনারদের সামনে। দলে রিস্ট স্পিনারের ঘাটতিটা নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ জানালেও যোশিঅবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন দেশের বাইরে চ্যালেঞ্জটা আসবে। সেক্ষেত্রে তিনি খেলোয়াড়দের মনোভাব পরিবর্তন বিষয়টি নিয়েই বেশি কাজ করছেন বলে দাবি জানিয়েছেন। সফরকারী ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে ৪০ উইকেটই নিয়েছেন স্পিনাররা। পেসাররা ছিলেন অপাংক্তেয়। সেই পেসাররাই জ্বলে উঠেছেন ওয়ানডেতে। প্রথম ম্যাচে পেসাররা দখল করেছেন ৭ উইকেট, আর স্পিনারদের ঝুঁলিতে গেছে মাত্র দুটি। এ বিষয়ে যোশিবলেন, ‘আমার মনে হয় সাদা বল ওয়ানডে ফরমেটে এটাকে বেশ কঠিন করে তোলে কারণ ৫০ এর মধ্যে ২০ ওভারই তারা (স্পিনাররা) করেছে। আর অবশ্যই উভয় প্রান্ত থেকে দুই স্পিনারকে দেখে তারা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটাও লক্ষ্যণীয় ছিল। তাই বোলিং বিভাগে অবশ্যই কিছু কৌশলী পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হয়। আমার মনে হয় মানসিকভাবে আমাদের ইতিবাচক মনোভাবে থাকা জরুরী। আমরা যেমনটা করে যাচ্ছি সেভাবেই নেমে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে হবে। আমার মনে হয় যখনই দেশের বাইরে যাবেন কন্ডিশন সবসময়ই কঠিন থাকে। বিশেষ করে স্পিনারদের জন্য। আপনাকে কন্ডিশনগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেয়াটা জরুরী, নিজের মনোভাবটাও বদলানো জরুরী। প্রতিটি ফরমেটেই আপনার মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। যখন আপনি লাল বলে খেলবেন তখন আপনার মনোভাব ভিন্ন হবে এবং সাদা বলের ক্রিকেটে হবে অন্যরকম। বাংলাদেশের হয়ে এখনও আমার চ্যালেঞ্জ আসেনি। আমাদের চ্যালেঞ্জটা শুরুই হয়নি। আমি স্পিনারদের নিয়ে সময়টা উপভোগ করছি এবং তারা অনেক ভাল করছে। আমরা নাঈমকে খেলিয়েছি এবং নাঈম টেস্ট ক্রিকেটে ভাল করেছে। পাকিস্তানেও ইমার্জিং দলের সঙ্গে ভাল করছে এবং গতকাল কয়েকটি উইকেটও পেয়েছে। তাই আরও স্পিনার পাওয়াটা আমাদের জন্য বেশ ভাল।’ একের পর এক নতুন স্পিনার উঠে আসছেন, তারা ভালও করছেন। তবে যোশীর আক্ষেপ এরপরও বাংলাদেশ দলে নেই কোন রিস্ট স্পিনার। এ বিষয়ে যোশিবলেন, ‘আমাদের যদি খুব ভাল রিস্ট স্পিনার থাকত, অবশ্যই আমরা তাকেও নিয়ে খেলতাম। কারণ, সেটাই সমন্বয় হতো এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দলের মধ্যে সব ধরনের বৈচিত্র্য থাকাটা জরুরী। আপনাকে চলতি ধারায়, আপনার কন্ডিশন অনুসারে দলগত কৌশলে দলের সমন্বয়ের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। যেকোন দলের দিকে তাকিয়ে দেখবেন যে এই দলটি অনেক ভালভাবে বেড়ে উঠছে। আপনি সর্বশেষ দুই বছর দেখুন আমরা দলগতভাবে কি অর্জন করেছি। সাদা বলের ক্রিকেটে আমরা সামনে এগিয়ে চলেছি এবং ভারতের কাছে তিনটি টুর্নামেন্টে শেষ বলে গিয়ে হেরেছি। তাই, আমরা যদি সর্বশেষ দুই বছরে দলের সার্বিক পারফর্মেন্সের দিকে তাকাই গ্রাফটা ক্রমেই উঠছে। তাই আমাদের ধারাবাহিকতা জরুরী। সবাই বুঝতে পারছে যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম করার জন্য কি করতে হবে। তাই তারা সবাই অনেক কাজ করছে।’ তবে যোশীর কাছে দলের জয়টাই আসল। সেক্ষেত্রে অবশ্য তিন বিভাগেই ক্রমান্বয়ে উন্নতির ধারাটা বজায় রাখতে হবে। যোশি বলেন, ‘আমার মনে হয় আমাদের জেতাটা জরুরী। জয় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং যেটাই হোক, যখন আমরা জিততে চাইব তখন এ তিনটির দিকেই মনোযোগ দিতে হবে। আমরা মিরাজকে দেখছি। হয়তো সর্বশেষ দুই বছরে তিনি খুবই ধারাবাহিক। আমরা নাঈমকেও দেখছি আর অবশ্যই সাকিবকে। আপনারা জানেন তিনিই এক্ষেত্রে হর্তাকর্তা। তাই আমাদের খুব বেশি চ্যালেঞ্জ নেই। চ্যালেঞ্জটা শুধু তখনই আসবে যখন আমরা দেশের বাইরে যাব। আমরা যখন ঘরের বাইরে যাব তখন হয়তো আমাদের মনোভাবে পরিবর্তন আনার দিকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে, সেই ব্যাটসম্যানগুলোর মনোভাবের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। সেটাই চ্যালেঞ্জ হবে। এটাই আমি খেলোয়াড়দের জানানোর চেষ্টা করছি।’
×