ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বেগম জিয়ার রিটের আদেশ আজ

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮

বেগম জিয়ার রিটের আদেশ আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আদেশ প্রদান করা হবে। আজকের এই আদেশেই জানা যাবে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা। এদিকে বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে নির্বাচনে অংশ নিতে ইসিকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আদেশ প্রদান করা হবে। বিচারপতি সৈয়দ রেফায়েত আহমেদ ও মোঃ ইকবাল কবীরের সমন্বয়ে হাইকোর্টের দ্বৈতবেঞ্চ সোমবার আদেশের জন্য এ দিন নির্ধারণ করেছে। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ইলেকশন এক্সপার্ট মিশনের’ আইনজ্ঞ ইরিনি-মারিয়া গোনারি। শুনানির শুরুতে এজলাস কক্ষের শেষ সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাকে দেখে বসার ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। তখন শেষ সারির একটি বেঞ্চে আইনজীবীরা তাদের পাশে বসান গোনারিকে। শুনানি চলাকালে তাকে নোট নিতেও দেখা যায়। গত রবিবার ফেনী ১, বগুড়া ৬ ও ৭ আসনে খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা বাতিলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট দায়ের হয়। প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়া বগুড়া ৬ ও ৭ এবং ফেনী ১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু দুর্নীতি মামলায় দ-িত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা তার মনোনয়ন বাতিল করে দেন। হাইকোর্টের আদেশের পর খালেদার অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন বেআইনীভাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছিল। আমরা আশা করছি, বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন এবং জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের দ- নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। টুকু ও দুলুর মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ ॥ বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, নিজ দলের বিকল্প প্রার্থী থাকলে, তারা যদি তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে চায় তাদের সেই সুযোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এএফ হাসান আরিফ, ফিদা এম কামাল, আমিনুল হক হেলাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ মোখলেছুর রহমান। পরে আজমালুল হোসেন কিউসি বলেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর দুর্নীতির মামলায় সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপীল করে জিতেছি। পরে দুদক আপীল করার পর আপীল বিভাগ পুনঃশুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগে পাঠায়। যখন হাইকোর্টে ২০০৯ সালে এসেছিলাম তখন ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারা অনুসারে কনভিকশন ও সেন্টেন্স সাসপেন্ড করেছিল হাইকোর্ট। অর্ডারটা এখনও বহাল আছে। আজকে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আর্গুমেন্ট করলেও আপীলের কোন নির্দেশনা দেখাতে পারেনি। আমরা ভারতসহ বিভিন্ন দেশের নজির দেখিয়েছি। পরে আদালত শুনানি নিয়ে মনোনয়ন গ্রহণে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে। এ আদেশের প্রেক্ষিতে এখন তার নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই। রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর আইনজীবী সৈয়দ আল আশাফুর আলী রাজা বলেন, আজকের আদেশের ফলে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই। ওনার (দুলুর) দ-বিধি ও বিস্ফোরক আইনে দ- হয়েছিল। যেটা হাইকোর্টে সাসপেন্ড হয়ে আছে। হিরো আলম নির্বাচন করতে পারবেন ॥ বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে নির্বাচনে অংশ নিতে ইসিকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়। হিরো আলমের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন মোঃ কাউছার আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন তার মনোনয়ন বাতিলের ঘোষণা করেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, হিরো আলম ভোটারদের স্বাক্ষর সংবলিত যে তালিকা জমা দিয়েছেন তা যাচাই করে দেখা গেছে, তিনি ভুয়া ভোটারদের তালিকা জমা দিয়েছেন। পরে হাইকোর্টে গেলে হিরো আলমকে নির্বাচন করার জন্য আদেশ দেয়া হয়। উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন হিরো আলম। মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম ) আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন। আদেশের পর হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমি এখন খুব খুশি। হাইকোর্টে যে ন্যায়বিচার পাওয়া যায়, তা প্রমাণ হলো। ইসি যে বলছিল আমার ভোটার তালিকা ভুয়া, তা আজ মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। ইসিকে হাইকোর্ট দেখিয়ে দিলাম।
×