ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গী মদদদাতাদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান ঘাতক দালাল নির্মূণ কমিটির

প্রকাশিত: ২২:২১, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮

যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গী মদদদাতাদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান ঘাতক দালাল নির্মূণ কমিটির

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গী মদদদাতা ও সন্ত্রাসীদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূণ কমিটি। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতৃবৃন্দ এ আহ্বান জানান। ভাষা সৈনিক আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাজশাহী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রাজকুমার সরকার। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা প্রক্রিয়ার শুরুতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবারের নির্বাচনে একটি জোট বা দল, সন্ত্রাসী, জঙ্গীবাদ ও রাজাকারদের সহযোগি-দোসরদের সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জঙ্গী মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত ব্যারিস্টার আমিনুল হক, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মিজানুর রহমান মিনু, নাদিম মোস্তফা, নাশকতার মামলার আসামী আবু সাঈদ চাদকেও এবার মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এছাড়া যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতের অনেক নেতাকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে দেশে বিভিষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলো তারাও এখন প্রার্থী হয়েছে। এবারের নির্বাচনে তাদের বয়কটের আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যারা ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোর হত্যা, গুম, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণের কাহিনীগুলো ঘটিয়েছিলো। বাংলা ভাইয়ের উত্থানের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলের সন্ত্রাসের রাজত্ব যেমন কায়েম করেছিলো। যারা দেশের প্রতিষ্ঠিত বিচার ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনে-দুপুরে নিজেরাই বিচার করে নির্যাতন করেছিল তাদের জনগন ভোট দেবে না। তাদের বয়কট করতেই হবে। এজন্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি মাঠে নামবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। সংবাদ সম্মেলনে এ অঞ্চলে বাংলাভাইয়ের সন্ত্রাস, নিযাতন ও হত্যাকান্ডের বর্ণনা তুলে ধরে জানানো হয়, ২০০৪ সালের ৩১মার্চ বাগমারায় জেএমবি নামে বাংলা ভাই অভিযান শুরু করে। এরপর তারা ওসমান বাবু, দীপঙ্কর, শহীদুল, আব্দুল কাইয়ুম বাদশা, খেজুর আলীসহ ৭ জনকে হত্যা করে এবং পরবর্তি এক বছরের মধ্যে তারা ৩২ জনকে হত্যা করে। এদের সবাইকে চরম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। যাদের মদদে এসব নির্যাতন হত্যাকান্ড, বিভিষিকাময় পরিস্থিতি তারা আবার প্রার্থী হয়েছে। তাদের বয়কট করতে হবে। এবারো বিএনপি ও তাদের জোট জঙ্গি মমদতাদা, সন্ত্রাসীদের মনোনয়ন দিয়েছে। জাতিকে সেই সব প্রার্থীদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখান ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। এছাড়া আগামীতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সম্পর্কে সতর্ক হয়ে এসব মদদদাতা, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে রাজশাহী অঞ্চলসহ বাংলদেশকে শান্তি, সৌহার্দ্য, সমৃদ্ধির উন্নত দেশ গড়তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের প্রার্থীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান, নির্বাহী সম্পাদক ড. সুজিত সরকার, লেখক-সাহিত্যিক প্রশান্ত কুমার শাহা, কবি আরিফুল হক কুমার, রাবির সাবেক উপ উপাচার্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের জেলা সভাপতি মো. নূরুল্লাহ, নাট্য ব্যাক্তিত্ব কামারুল্লাহ সরকার, মহিলা পরিষদের সভাপতি কল্পনা রায়, মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগারের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মহানগর সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×