ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলে নতুন প্রার্থীদের এলাকা গোছাতে সময় মাত্র ১৮ দিন

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮

টাঙ্গাইলে নতুন প্রার্থীদের এলাকা গোছাতে সময় মাত্র ১৮ দিন

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলে বিগত বছরগুলোতে যারা নিজ সংসদীয় আসনে যাতায়াত করেননি, নিজ দল বা জোট সংগঠিত করেননি, দল-জোটের নেতা-কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা তৈরী করেননি এবং যারা নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের জন্য এবারের ভোট বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে, যারা দলের রাজনীতিতেও সম্পৃক্ত ছিলেন না, কিন্তু কোনো কারণে অনেকটা হঠাৎ দল-জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের জন্য নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া এবার দুষ্কর হতে পারে। কারণ, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সিডিউল অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া হয় গত (১০ ডিসেম্বর)। সেইদিন থেকে আগামী (৩০ ডিসেম্বর) ভোট গ্রহণের আগে আগামী (২৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত তারা নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ পাবেন। কার্যত এই ১৮ দিনের মধ্যেই নতুন প্রার্থীদের এলাকা গোছাতে হবে। এই স্বল্প সময়ে এলাকায় দলীয় নেতাকর্মী, ভোটার ও স্থানীয় সাধারণ মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং দল-জোট গুছিয়ে ভোটের ফল নিজ ঘরে নেয়া কতটা সম্ভব- এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে টাঙ্গাইল জেলার রাজনৈতিক দল-জোটগুলোতে। টাঙ্গাইল জেলার আটটি আসন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ এবার টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে তানভীর হাসান ছোট মনির, টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে আতাউর রহমান খান এবং টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের। এদেরকে নতুন প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপি আটটি আসনের মধ্যে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে ঐক্যফন্ট্রের প্রার্থী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের লিয়াকত আলী, টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে ঐক্যফন্ট্রের প্রার্থী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবং বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকী। এছাড়া টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন পীরজাদা শফিউল্লাহ আল মুনীর। জেলার আটটি আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সাতজন নতুন প্রার্থী রয়েছেন। তারা প্রতিক পেয়ে এরই মধ্যে প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। জানা যায়, এদের অতীতে কখনও সংসদ নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা নেই। দলীয় বা জোটগত যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাদের হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া বাকিরা গত পাঁচ বছরে কতবার নিজ এলাকায় যাতায়াত করেছেন সেটির হিসাব সহজেই হাতের কর গুনে বের করা সম্ভব। জাতীয় নির্বাচনে একাধিকবার সরাসরি অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং দীর্ঘসময় রাজনীতিতে যুক্ত এমন অনেকের মতে, রাজনীতিতে নিয়মিত সক্রিয় থাকা এবং বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে যারা বছরজুড়ে এলাকায় যাতায়াত করেন, সুখে-দুঃখে এলাকাবাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করেন এবং নানা কাঠখড় পুড়িয়ে এলাকায় রাজনীতিতে টিকে থাকেন তাদেরই প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ভোটে পার হয়ে আসতে হিমশিম খেতে হয়। সেখানে যারা এলাকায় যাননি, ভোটের রসায়ণ জানেন না, ভোটার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই- তারা কোন যাদুকরী কায়দায় বৈতরণী পার হবেন এটা কোটি টাকার প্রশ্ন। যেখানে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্য রেখে পাঁচ বছরেও এলাকা গোছাতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে, সেখানে একেবারে নতুন প্রার্থীরা মাত্র ১৮ দিনে কীভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করবেন? তাছাড়া যারা রাজনীতিতেই সম্পৃক্ত ছিলেন না, নির্বাচন করবেন বলে এলাকার মানুষও কখনও আগে থেকে জানতেন না তারা মনোনয়নই পেয়েছেন কোন মানদন্ডে সেই প্রশ্নও উঠছে।
×