ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে মনোনয়ন বঞ্ছিতদের ক্ষোভে জ্বলছে বিএনপি

প্রকাশিত: ০০:১৭, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮

বরিশালে মনোনয়ন বঞ্ছিতদের ক্ষোভে জ্বলছে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ মনোনয়ন নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষের কারণে বরিশালে বিএনপির জন্য অশুভ সংকেত দেখা দিয়েছে। মনোনয়ন বঞ্ছিতরা নয়া পল্টনে তালা ঝুলানোর পরেও কোন সুফল না পেয়ে এবার তৃণমূল পর্যায়ে ধানের শীষের প্রার্থীর বিপক্ষে কিংবা মাঠে না নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফলে বিএনপির নির্বাচন ব্যবস্থাপনার সংকট প্রকাশ্যে বের হয়ে এসেছে। সূত্রমতে, বরিশালের যারা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন তারা দলের দুর্দীনের সঙ্গী। বিগত ওয়ান ইলেভেন থেকে শুরু করে একাধিকবার হামলা ও মামলার শিকার হয়েও তারা দলের হাল ছাড়েননি। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে তারা আন্দোলনের মাঠে থেকে কারাবরন করেও জনবিচ্ছিন্নদের কাছে মনোনয়ন বঞ্ছিত হয়েছেন। তাদের স্থলে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনও নির্বাচনী এলাকায় ঢুকতে পারেননি। বরিশালে উল্লেখযোগ্য মনোনয়নবঞ্চিতদের মধ্যে রয়েছেন ওয়ান ইলেভেনের পরীক্ষিত নেতা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বরিশাল-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহান। তারস্থলে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সংস্কারপন্থি নেতা জহির উদ্দিন স্বপনকে। বিএনপির একাধিক নেতৃবৃন্দরা জানান, বিগত এক যুগেরও অধিক সময় ধরে তিনি (স্বপন) দলীর নেতাকর্মীদের তোপের মুখে নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঢুকতে পারছেন না। জনবিচ্ছিন্ন জহির উদ্দিন স্বপনকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলেও অদ্যবর্ধি তিনি নির্বাচনী এলাকায় আসতে পারেননি। এজন্য নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতৃবৃন্দরা প্রার্থী পরিবর্তন করার দাবি তুলে দলের মহাসচিবের কাছে আবেদন করেও কোন সুফল পায়নি। বরিশাল-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন জেলা উত্তর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মেজবা উদ্দিন ফরহাদ। শরিকদের মধ্যে আসন বন্টন করার ক্ষেত্রে দলের শক্তিশালী প্রার্থী মেজবা উদ্দিন ফরহাদকে বাদ দিয়ে ওই আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে নুরুর রহমান জাহাঙ্গীরকে। একইভাবে পটুয়াখালী-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। পরীক্ষিত এ নেতাকে বাদ দিয়ে তারস্থলে দলের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেয়া গোলাম মাওলা রনিকে। ঝালকাঠী-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু। তাকে বাদ দিয়ে ওই আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে বিএনপি নেত্রী জেবা খানকে। বিএনপির নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, যারা মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তারা জেল-জুলুম ভোগ করা ও সংকটে দলের জন্য ত্যাগ শিকার করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। শরিকদের মধ্যে আসন বন্টন করার ক্ষেত্রেও দলের শক্তিশালী প্রার্থীদের কোরবানি করা হয়েছে। বিএনপির নির্দিষ্ট আসনের নিশ্চিত প্রার্থীকে বাদ দেয়া হয়েছে। সেখানে শরিক দলের ভুঁইফোড় ও সংস্কারপন্থি জনবিচ্ছিন্নদের মনোনয়ন দেয়ায় দলের তৃণমূলে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। নির্বাচনের আগেই মনোনয়ন নিয়ে বিএনপিতে বিরাজমান ক্ষোভ ও অসন্তোষ দলের জন্য অশুভ সংকেত বহন করছে। অতি দ্রুত এসব ক্ষোভ ও অসন্তোষ দূর করা না হলে নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
×