ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

১২ হাজার রানের মাইলফলক পেরোলেন তামিম

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

১২ হাজার রানের মাইলফলক পেরোলেন তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চার মাস আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রভিডেন্সে স্বাগতিক বোলারদের ভুগিয়েছিলেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহীম। ক্যারিবীয় সফর শেষে আর বাংলাদেশের এ দুই অপরিহার্য তারকাকে একসঙ্গে দেখা যায়নি। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে যান তামিম, সুপার ফোরে ইনজুরির কারণে ক্রিকেটের বাইরে চলে যান সাকিব। তবে আবার সেই ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দু’জনই ফিরে এসেছেন দলে। প্রথম ওয়ানডেতে দল জিতলেও দু’জন আহামরি কিছু করতে পারেননি। কিন্তু মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দু’জনের ব্যাটেই দেখা গেছে ফিফটি। ক্যারিয়ারের ৪৩তম অর্ধশতক হাঁকানোর পথে তামিম প্রথম বাংলাদেশী এবং ইতিহাসের ৫৫তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরমেট মিলিয়ে ১২ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন। আর বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের তালিকায় এক্ষেত্রে তার অবস্থান এখন ১৮ নম্বরে। তবে এশিয়ার ওয়ানডে ইতিহাসে যত বাঁহাতি ওপেনার এসেছেন তার মধ্যে সনথ জয়সুরিয়া ও সাঈদ আনোয়ারের পরই তৃতীয় স্থানে এখন তামিম। ম্যাচে সাকিব ক্যারিয়ারের ৪০তম অর্ধশতক হাঁকিয়ে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৫ রান করেন। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টানা ৬ ওয়ানডে পর একাদশে খেলতে নেমেছিলেন তামিম ও সাকিব। গত জুলাইয়ে প্রভিডেন্সে প্রথম দুই ওয়ানডেতে এ দু’জন দুর্দান্ত ফর্ম দেখিয়েছিলেন। ওয়ানডাউনে ব্যাট করেছেন সাকিব। কিন্তু এবার প্রথম ম্যাচেও জুটি হয়নি দু’জনের, যেহেতু সাকিব নেমেছিলেন ৫ নম্বরে এবং ৩০ রান করেন। আর তামিম সাজঘরে ফেরেন মাত্র ১২ রান করেই। মঙ্গলবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও জুটি বাঁধা হয়নি দু’জনের ব্যাটিং পজিশন একই থাকার কারণে। তবে ক্যারিবীয় বোলারদের ভিন্ন ভিন্ন পজিশনে নেমে ঠিকই ভুগিয়েছেন। তামিম দ্রুতই দুই সঙ্গী লিটন দাস ও ইমরুল কায়েসকে হারিয়ে ফেলে দ্বিতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে ১১১ রানের জুটি গড়ে দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন। ক্যারিয়ারের ৪৩তম ফিফটি হাঁকিয়ে তিনি ৬৩ বলে ৪ চার, ১ ছক্কায় ৫০ রানে সাজঘরে ফেরেন। এর মাধ্যমে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ৩ ফরমেটের ক্রিকেটে ৩১৩ ম্যাচ খেলে ১২ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান তিনি। ওয়ানডেতে তামিমের রান ১৮৫ ম্যাচে ৬৩৬৯, ৫৬ টেস্টে ৪০৪৯ এবং ৭২ টি২০ ম্যাচে ১৫৮৫। সবমিলিয়ে ৩৪.২৯ গড়ে ২০ সেঞ্চুরি, ৭৪ হাফ সেঞ্চুরিসহ এখন তামিমের ৩ ফরমেট মিলিয়ে মোট রান ১২ হাজার ৩। বিশ্বের ৫৫তম ব্যাটসম্যান হিসেবে এ কীর্তি গড়েছেন তামিম। তবে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে তার অবস্থান মাত্র ২১ নম্বরে। বাঁহাতি হিসেবে সবার ওপরে শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা। তিন ফরমেট মিলিয়ে ৫৯৪ ম্যাচ খেলে তিনি ২৮ হাজার ১৬ রান করেছেন। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রায়ান চার্লস লারা ৪৩০ ম্যাচে ২২ হাজার ৩৫৮, শ্রীলঙ্কার সনথ জয়সুরিয়া ৫৮৬ ম্যাচে ২১ হাজার ৩২ ও আরেক ক্যারিবীয় শিবনারায়ণ চন্দরপল ৪৫৪ ম্যাচে ২০ হাজার ৯৮৮ রান করে পরবর্তী অবস্থানগুলোয় আছেন। এশিয়ার ব্যাটসম্যানদের মধ্যেও এখন ২১ নম্বরে তিনি। অবশ্য বাঁহাতি ওপেনার হিসেবে বিশ্বের মধ্যে ৯ নম্বরে উঠে এসেছেন। কিন্তু এশিয়ার বাঁহাতি ওপেনারদের তালিকায় তামিমের অবস্থান এখন জয়সুরিয়া ও পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ারের পরেই তিন নম্বরে। তামিমের পরেই রান করার দিক থেকে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় অবস্থানে সাকিব ৩১৮ ম্যাচে ৩৪.০২ গড়ে ১২ সেঞ্চুরি, ৭১ হাফ সেঞ্চুরিসহ ১০ হাজার ৭৫২ রান নিয়ে। দেশের পক্ষে তৃতীয় সেরা হিসেবে ১০ হাজার আন্তর্জাতিক রান আছে শুধু মুশফিকের। তিনি ৩৩৭ ম্যাচে করেছেন ১০ হাজার ৪৬৭ রান। ৩২.৬০ গড়ে ১২ সেঞ্চুরি ও ৫৫ হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। তামিম ৫০ রানে সাজঘরে ফেরার পর সাকিব ৫ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে দারুণভাবে হাল ধরেন। তিনি চতুর্থ উইকেটে মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে ৬১ রানের জুটি গড়েন। ব্যক্তিগত ৪৬ রানে ক্যারিবীয় পেসার ওশান টমাসের বলে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান নো-বলের কারণে। তারপরই ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের ৪০তম ওয়ানডে অর্ধশতক পেয়ে যান। মাঝে ৬ ওয়ানডেতে ফিফটি দেখেননি সাকিব। প্রভিডেন্সে গত ২৫ জুলাই করেছিলেন ৫৬ রান। শেষ পর্যন্ত সাকিব থেমেছেন ৬২ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় ৬৫ রানে। ততক্ষণে বাংলাদেশ দলও একটা ভাল অবস্থানে চলে গেছে। আর তিনিই এদিন বাংলাদেশ ইনিংসের সর্বোচ্চ রানটি করেছেন।
×