ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে ২০ চরমপন্থীর যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

 মাদারীপুরে  ২০  চরমপন্থীর  যাবজ্জীবন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১২ ডিসেম্বর ॥ রাজৈর থানা পুলিশের বিশেষ শাখার এসআই আবুল হাসনাইন আজম খান এবং জেলা বিশেষ শাখার প্রধান সহকারী কামরুল আলম ঠাকুরকে গলা কেটে টুকরো টুকরো করে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সর্বহারা ও চরমপন্থী দলের ২০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। রায়ে আরও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা বা অর্থদ-, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদ-াদেশ দেয়া হয়েছে। মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছয় আসামিকে খালাস দিয়েছে আদালত। বুধবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মনির কামাল এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পরে মাদারীপুর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ৩ এপ্রিল বিকেলের দিকে এসআই আবুল হাসনাইন আজম খান ও জেলা বিশেষ শাখার প্রধান সহকারী কামরুল আলম ঠাকুর অফিসের কাজে মোটরসাইকেলে রাজৈরের শাখারপাড় এলাকায় যান। এ সময় চরমপন্থীরা তাদের পরিচয় জানতে চায়। তারা পুলিশ পরিচয় দিলে আসামিরা তাদের মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে মোটরসাইকেলসহ শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী অধ্যুষিত এলাকায় নিয়ে যায়। রাতে মোটরসাইকেলসহ ওই দুই পুলিশ অফিসারকে একটি ট্রলারে উঠিয়ে প্রথমে মোটরসাইকেল নদীর মধ্যে ফেলে দেয় চরমপন্থীরা। এরপরে কামরুল আলম ঠাকুরকে গলা কেটে হত্যার পর শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে কাটা মাথা হাসনাইনের হাতে ধরিয়ে দেয়। এরপর কামরুলের দেহ টুকরো টুকরো করে নদীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে দেয়। পরে একই কায়দায় হাসনাইনকে হত্যা করে তার লাশও টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয় চরমপন্থীরা। ২০০৭ সালের ৬ আগস্ট মাদারীপুরের রাজৈর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত অফিসার একরাম মোল্লা ৩২ জনকে আসামি করে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন। ২০০৮ সালের ৪ মে ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে। মামলার ৩২ আসামির মধ্যে চারজন বন্দুকযুদ্ধে এবং দুজন বিচারকার্য চলাকালীন মারা যায়। বাকি ২৬ জনের মধ্যে ১৩ জন পলাতক রয়েছে। এরা হলো দাদন ফকির, আমির হোসেন শেখ, জসিম শেখ, মাছিম শেখ, ফয়েজ শেখ, মজনু মাতুব্বর, উজ্জ্বল হাওলাদার, জাফর মাতুব্বর, কুব্বাস মাতুব্বর, হালিম আকন, মিরাজ সিকদার, এমে মোল্লা ও সুমন বাঘা। দীর্ঘ শুনানি শেষে বুধবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মনির কামাল এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত ২০ আসামির মধ্যে সাতজন আদালতে উপস্থিত ছিল। এরা হলো মোশাররফ শেখ, আশরাফ শরীফ, বজলু আকন, আজাদ মোল্লা, দবির মোল্লা, সৈকত মোল্লা ও দীপু বিশ্বাস। তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরা এতদিন জামিনে ছিল। এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোঃ বদরুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও চাঞ্চল্যকর ও মর্মান্তিক এ হত্যাকা-ের মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে। রায়ে ২০ আসামির যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়েছে। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হয়েছি। সাজাপ্রাপ্ত যে ১৩ আসামি পলাতক রয়েছে তাদের গ্রেফতারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাব।
×