ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুমন্ত গুপ্ত

মঞ্জুর ভাই চলে গেলেন

প্রকাশিত: ০৭:০১, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

 মঞ্জুর ভাই চলে গেলেন

জন্ম নিলে চলে যেতে হয় বুঝি! এমন নির্মম সত্য জেনেও আমরা আগামীর পথে হাঁটি, কারণ চলতে হয়। এটাই বোধহয় জীবনের নিয়ম। জীবন তো ছুটে চলে বহতা নদীর মতো। ঠিক তেমনি ছুটে চলতেন বর্ষীয়ান অভিনেতা মঞ্জুর হোসেন। মঞ্জুর হোসেন একাধারে অভিনেতা, পরিচালক এবং প্রযোজক ছিলেন। তাঁর জন্ম ১৯৩৭ সালে। তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনাও করেছেন। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা- ‘রাজধানীর বুকে’, এরপর তিনি ‘হারানো দিন’, ‘পয়সে’, ‘ধারাপাত’, ‘সাত রং’, ‘তালাশ’, ‘শীত বিকেল’, ‘বন্ধন’, ‘মিলন’, ‘কাজল’, ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’, ‘কাঞ্চন মালা’, ‘ছোট সাহেব’, ‘বাজানা’, ‘রূপবান’, ‘নয়ন তারা’, ‘তুম মেরে হো’, ‘কুলি’, ‘মুক্তি’, ‘সংসার’, ‘নোলক’, ‘শাহজাদী গুলবাহার’সহ আরও অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার প্রযোজিত পরিচালিত দুটি সিনেমা হচ্ছে ‘সমাপ্তি’ ও ‘দুটি মন দুটি আশা’। চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান এই অভিনেতা গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। প্রায় দুই বছর ধরে অভিনয়ে অনিয়মিত ছিলেন মঞ্জুর হোসেন। এই সময়ে তিনি ব্যবসাতে সময় দিতেন তিনি। রাজধানীর নবাবপুরে তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে অভিনয় না করলেও প্রায় সময়ই তিনি বিএফডিসিতে আসতেন। তিনি ছিলেন শিল্পী সমিতির আজীবন সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। মঞ্জুর হোসেনের প্রয়াণে তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে গণমাধ্যমে নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমার জীবনে এ রকম মানুষ দেখিনি, যে কখনও বেদনাহত হয়েছে। সব সময় সব পরিস্থিতিতে একটা আনন্দমুখর জীবনযাপন করতেন। তার মানে জীবনটাকে উদ্যাপন করতেন।’ নাট্যনির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘অভিনয় জগতের কারও কোন বিপদের কথা শোনা মাত্রই তিনি ছুটে গেছেন। একটি পা নিয়ে তিনি জীবনযাপন করেছেন। এই পা ছাড়া অবস্থায় তাঁর কাজের যে গতি ছিল, তা আমাদের ভীষণভাবে মুগ্ধ করেছে। মঞ্জুর ভাই এক বটবৃক্ষ। আরিফুল হক বলেন মঞ্জুর হোসেন আর নেই শুনেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। কত কাজ করেছি আমরা একসঙ্গে এর কোন হিসাব নেই। মঞ্জুর হোসেন ছিলেন সদা হাস্যোজ্জ্বল একজন মানুষ। তিনি অভিনয় করতে গিয়ে তাঁর একটা পা হারিয়ে ছিলেন। জিজ্ঞাসা করলে, হাসিমুখে বলতেন,’ ফিলিম ইন্ডাস্ট্রিকে একটা পা দান করে দিয়েছি।
×