ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন বছরে সোনালি স্বপ্ন কারবারের

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮

 নতুন বছরে সোনালি স্বপ্ন কারবারের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই বছর আগে টেনিস কোর্টে হঠাৎ করেই জ্বলে ওঠেন জার্মানির এ্যাঞ্জেলিক কারবার। ক্যারিয়ারের গোধূলি বেলায় এসে গোটা টেনিস দুনিয়াকেই চমকে দেন তিনি। ২০১৬ সালে বাঘা বাঘা খেলোয়াড়দের হতাশায় ডুবিয়ে দুটি গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট নিজের শোকেসে তুলার পাশাপাশি বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানও দখল করে নেন তিনি। পরের বছরে সেই কারবারকে আর পাওয়া যায়নি টেনিস কোর্টে। তবে নিভে যাননি জার্মান তারকা। এ বছরে আবারও দুর্দান্ত ফর্ম ফিরে পান তিনি। উইম্বলডন জিতে জানিয়ে দেন তিনি হারিয়ে যাওয়ার পাত্র নন। ভক্ত-অনুরাগীদের অগাধ বিশ্বাস নতুন মৌসুমেও জ্বলবেন এ্যাঞ্জেলিক কারবার। ব্রেমেন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী জার্মান-পোলীয় বংশোদ্ভূত এ্যাঞ্জেলিক কারবারের পেশাদার টেনিসে অভিষেক ঘটে ২০০৩ সালে। কিন্তু মাত্র তিন বছর বয়স থেকেই টেনিস খেলতে শুরু করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে কিশোরদের প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। জার্মানিতে খেলা শুরু করে ইউরোপের সর্বত্র অংশ নিতে থাকেন ধীরে ধীরে। কিন্তু ২০০৩ সালের পূর্বপর্যন্ত তিনি কোন শিরোপা লাভ করতে সক্ষম হননি। ১৫ বছর বয়সে পেশাদারী টেনিসের দিকে ধাবিত হন তিনি। আক্রমণধর্মী খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত কারবার আটটি এককের শিরোপাসহ ডবিব্লটিএ ট্যুরের প্রত্যেক মাঠে কমপক্ষে একটি শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছেন। ২০১৬ সালেই বিস্ফোরণ ঘটে এ্যাঞ্জেলিক কারবারের। অসাধারণ পারফর্মেন্সের সৌজন্যে নিজেকে নিয়ে যান অন্য এক উচ্চতায়। সে বছরের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং শেষ মেজর টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। শুধু তাই নয়, রিও অলিম্পিকেও মেলে ধরেন জার্মান টেনিসের এই প্রতিভাবান তারকা। সেই সঙ্গে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটিও দখল করে নেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। পারফর্মেন্সের সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি কারবার। ২০১৭ সালটা তো একেবারেই বাজেভাবে পার করেন কারবার। এই সময়টাতে কোন শিরোপাই জিততে পারেননি তিনি। বরং একের পর এক টুর্নামেন্ট থেকে লজ্জাজনকভাবে হেরে সমর্থকদের হতাশ করেন স্টেফিগ্রাফের এই উত্তরসূরি। যার ফলশ্রুতিতেই বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক শীর্ষ তারকা ছিটকে যান একুশে! তবে ২০১৮ সালে স্বরূপে ফেরার ইঙ্গিত দেন কারবার। বিশেষ করে উইম্বলডনের দুর্দান্ত পারফর্মেন্স নতুন করে আশা দেখাচ্ছে তাকে। কেননা ফাইনালে সেরেনা উইলিয়ামসকে পরাজিত করে যে ক্যারিয়ারের তৃতীয় গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট জেতেন তিনি? কেমন ছিল আমেরিকান তারকাকে হারানোর সেই অভিজ্ঞতা? কারবার বলেন, ‘এই খেলার সর্বকালের কিংবদন্তিদের মধ্যে সেরেনা উইলিয়ামসও একজন। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। উইম্বলডনের ফাইনালে তাকে হারানোর স্মৃতিটা আমার সারাজীবনই মনের মধ্যে গেঁথে থাকবে।’ এরপরই প্রশ্ন উঠে ২০১৯ সালের লক্ষ্য কী? কারবার বলেন, ‘আমার সবসময়ই প্রাথমিক লক্ষ্য থাকে নিজেকে খেলোয়াড় এবং ব্যক্তি হিসেবে উন্নত করা। প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়ার জন্য আমার মনে হয় এটাই সেরা কৌশল। এছাড়াও নতুন মৌসুমে আমার দৃষ্টি থাকবে ক্লে কোর্টের প্রস্তুতির জন্য। যেহেতু রোলাঁ গ্যারোর (ফ্রেঞ্চ ওপেন) শিরোপাটা এখনও আমার গ্র্যান্ডস্লাম কালেকশনে নেই।’ বয়সে ত্রিশকেও ছাড়িয়ে গেছেন কারবার। আগামী জানুয়ারিতে পা রাখবেন একত্রিশে। তবে জার্মান তারকার ক্যারিয়ারে ২৮তম বছরটাই সোনালি। সে বছর ইউএস ওপেনের ট্রফি আর ৩৫ লাখ ডলার প্রাইজমানির চেক হাতে নিয়ে কারবার বলেছিলেন, ‘এটা চমকপ্রদ ব্যাপার। আমার ক্যারিয়ারের সেরা বছর। আমি যখন ছোট ছিলাম, স্বপ্ন ছিল এক নম্বর খেলোয়াড় হওয়ার, গ্র্যান্ডস্লাম জেতার। এ বছরে আমি আমার দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা হাতে এখানে দাঁড়িয়ে আছি। আমার সব স্বপ্নই এ বছর সত্যি হলো।’ জার্মান মেয়েদের মধ্যে তার আগে সর্বশেষ ইউএস ওপেন জিতেছিলেন স্টেফিগ্রাফ ১৯৯৬ সালে। ২০ বছর পর আরও এক জার্মানকে দেখা গেল ফ্লাশিং মিডোতে শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে।
×