ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে ছুটির দিনে জমজমাট প্রচার

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮

 রাজশাহীতে ছুটির দিনে  জমজমাট প্রচার

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ভোটের মাঠে ততই সরব হচ্ছেন প্রার্থীরা। এরইমধ্যে প্রার্থীদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। রাজশাহীর প্রার্থীরা কাকডাকা ভোরেই শীত আর কুয়াশা ভেদ করে ছুটছেন ভোটারদের ঘরে ঘরে। দিনভর প্রচারে সোচ্চার এখন সব প্রার্থী। রাজশাহীর ৬টি আসনে ক্রমেই সরগরম হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। পোস্টার, ব্যানারে ঢাকা পড়েছে রাজশাহী অঞ্চল। শুক্রবার ছুটির দিনে প্রার্থীরা ছুটেছেন ভোটারদের ঘরে। তাদের কর্মী-সমর্থকদের ঘুমও হারাম হয়ে গেছে। গত ১০ বছর পর বিএনপির প্রার্থীরাও মাঠে সোচ্চার রয়েছেন। তবে বেশি সোচ্চার আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। দলীয় অভ্যান্তরীণ বিভেদ সব মিটিয়ে এখন নৌকার পক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন ভোটের মাঠে। তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই মনোনয়ন নিয়ে রাজশাহীর কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে কোন্দল তীব আকার ধারণ করলেও এখন সবায় ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার জন্য মাঠে নেমেছেন। রাজশাহী-১, রাজশাহী-৩ ও রাজশাহী-৪ আসনে সবচেয়ে দলীয় কোন্দল বেশ থাকলেও এ ক’টি আসনে এখন সবাই ঐক্যবদ্ধ। সবার টার্গেট নৌকার জয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে বিভেদ মিটিয়ে এক হয়েছে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ। বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হকের সঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন দলের ভেতর তার এত দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু ও তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ। ২০০১ সাল থেকেই এই আসনে নৌকা নিয়ে লড়াই করে আসছেন এনামুল। বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এলাকায় ২০০৮ সালে বড় ব্যবধানে জিতেনও তিনি। ২০১৪ সালেও হন সংসদ সদস্য। কিন্তু এনামুলকে গত কয়েক বছর ধরেই দলের ভেতরের বিভেদ মোকাবেলা করতে হয়েছে। সান্টু ও আজাদের নেতৃত্বে দলে তৈরি হয় আলাদা বলয়। আর তারা বিরোধিতা করলে এনামুল ভোটের ময়দানে সুবিধা করতে পারবেন কি না, এই বিষয়টি নিয়ে সংশয় ছিল। তবে ভোটের প্রচার শুরুর পর নৌকাকে জেতাতে প্রতিদ্বন্দ্বী সব বলয়ের নেতারা এক মঞ্চে উঠেছেন। বৃহস্পতিবার বাগমারার ভবানীগঞ্জের একটি কোচিং সেন্টারে দলীয় একটি সভা করেন উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন এনামুল হক ও আবুল কালাম আজাদ। এদিকে শুরু থেকেই রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে সক্রিয় ছিল তৃণমূূল আওয়ামী লীগের সাত নেতার জোট ‘সেভেন স্টার’। এ গ্রুপ মাঠে ছিল বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরোধিতায়। তার দলীয় মনোনয়ন ঠেকাতে একাট্টা ছিল গ্রুপটি। কিন্তু এখন সেই বরফ গলেছে। ফারুক চৌধুরীকে জেতাতে মাঠে নেমেছেন ‘সেভেন স্টার’ খ্যাত এ সাত নেতা। নৌকার উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন হাতে হাত রেখে। বৃহস্পতিবার বিকেলে গোদাগাড়ীর ফিরোজ চত্বরে আয়োজিত নির্বাচনী সভায় নৌকাকে জেতানোর শপথ নেন তারা। এখানে উপস্থিত ছিলেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মু-ুমালা পৌরসভার মেয়র গোলাম রাব্বানী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বদরুজ্জামান রবু মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন, প্রচার সম্পাদক ও গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু, গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান এবং জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট আবদুল ওহাব জেমস। এদিকে শুক্রবার রাজশাহীর সবক’টি আসনের প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন। রাজশাহী-১ আসনের ওমর ফারুক চৌধুরী, সদর আসনে ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনে আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনে প্রকৌশলী এনামুল হক, রাজশাহী-৫ আসনে ডাঃ মনসুর রহমান ও রাজশাহী-৬ আসনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উন্নয়নের জন্য ভোট প্রার্থনা করেন। বিএনপি প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় দিনভর প্রচার করেছেন।
×