ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় চাই

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮

 স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় চাই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় স্বাধীনতাবিরোধী কোন ব্যক্তি, তাদের সহযোগী, মদদদাতা এবং স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তানদের আমরা দেখতে চাই না। আমরা স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চাই। আমাদের প্রত্যাশা, দেশের নাগরিক বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এমন কাউকে সমর্থন করবেন না, যারা স্বাধীনতাবিরোধী এবং তাদের মদদ দেয়। সবাই জাতীয় নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে ভোট দেবেন।’ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা বুদ্ধিজীবীর সন্তানরা দেশবাসীর কাছে এমনই আবেদন জানিয়েছেন। সময়ের ব্যবধানে বাঙালীর স্লোগান-দাবিও পাল্টে গেছে। স্বাধীনতার পর দেশবাসীর প্রতিটি অনুষ্ঠানেই ছিল একই দাবি- তা হচ্ছে একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা বিচারের পরিবর্তে যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী-উপদেষ্টা বানিয়ে করেছে পুরস্কৃত, লাখো শহীদের রক্তস্নাত জাতীয় পতাকা গণহত্যাকারীদের হাতে তুলে দিয়ে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে। বর্তমান অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। ২০১৩ সালে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে কলঙ্কমোচনের প্রক্রিয়া। এরপর বাঘা বাঘা সব নরহন্তারক যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়েছে, ফাঁসির রায়ও কার্যকর হয়েছে। তাই এবার স্বজন হারানোর বেদনা আর বুদ্ধিজীবী হন্তারকদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকরের স্বস্তি- এই ভিন্ন আবহেই শুক্রবার জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করল কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি। সর্বত্র স্বাধীনতাবিরোধীদের নির্বাচনে পরাজিত করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে বিজয়ী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা স্বাধীনতার পক্ষের সব মানুষ। জাতির মেধাবী সন্তানদের হত্যার দায়ে বদর বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতাদের ফাঁসি কার্যকরের পর এবার তৃতীয় বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করল বাংলাদেশ। দীর্ঘ চার দশকের বিচারহীনতার সংস্কৃতি আর দেশী-বিদেশী নানা ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদের হন্তারকদের বিচারের রায় কার্যকরের তৃপ্তি নিয়েই গোটা জাতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় পালন করেছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। তবে দিবসের প্রতিটি কর্মসূচীতে আসন্ন নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের মদদতাতাদের আসন্ন নির্বাচনে বয়কট এবং ব্যালটের মাধ্যমে বিজয়ের মাসে আরেকবার পরাজিত করতে দেশবাসীর প্রতি আবেদন ছিল সর্বত্র। জঙ্গীবাদ-মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে নির্মূল করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার অঙ্গীকার আর স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীমুক্ত দেশ বিনির্মাণে এবার দিবসটিতে নতুন প্রজন্মের জোয়ার নেমেছিল সর্বত্র। রাজাকার-আলবদর-আলশামস ও তাদের দোসরদের আগামী নির্বাচনে পরাজিত করার দীপ্ত শপথে যেন একাত্তরের মতোই জেগে উঠেছিল দেশের মানুষ। পথে পথে ছিল নতুন প্রজন্মের গণজাগরণ। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানিয়ে ‘সচেতন নতুন প্রজন্ম’ গড়ে তুলতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তানরা। শহীদদের শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সর্বস্তরের জনগণও। জাতীয় জীবনের বেদনাঘন দিনটিতে রাজধানীতে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন লাখো মানুষ। তাদের হাতে ছিল ফুল, কণ্ঠে ছিল আগামী নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধীদের মোকাবেলার দৃপ্ত শপথ। বুদ্ধিজীবী হন্তারক যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি প্রবল ঘৃণা-ধিক্কার জানানোর পাশাপাশি দেশে-বিদেশে পালিয়ে থাকা সব যুদ্ধাপরাধীকে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকরের দাবিও ছিল প্রচন্ড। বেদনায় আচ্ছন্ন মন, শোকে মুহ্যমান হৃদয়- এমনই এক বেদনাবিধুর পরিবেশে জাতি স্মরণ করেছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের। তবে ছিল না কোন আক্ষেপের সুর কিংবা হতাশার বাণী। শোক যেন এখন পরিণত হয়েছে শক্তিতে। একের পর এক যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করতে পারায় এবং দেশ দ্রুত এগিয়ে যাওয়ায় এবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে লাখো মানুষের কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের ধ্বনিও উচ্চারিত হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী চ্যালেঞ্জের নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নামে স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী-অগ্নিসন্ত্রাসীদের নির্বাচনী জোটকে ব্যালটের মাধ্যমে মোকাবেলা করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে বিজয়ী করার শপথ নিয়েছেন স্বাধীনতার পক্ষের সকল মানুষ। সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বিউগলে করুন সুর বাজানো হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন। এরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুক্ষণ নরীবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম জানান। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং উচ্চ পর্যায়ের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের নেতাদের নিয়ে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাত করে তাদের খোঁজখবর নেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ধানম-িতে যান এবং দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে দলীয় প্রধান হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হয়েছে। অন্যদেরও বিচার প্রক্রিয়া চলছে। তাইতো এবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শহীদদের স্মরণ করতে আসা সাধারণ মানুষ স্বপ্ন দেখছেন স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীমুক্ত একটি আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আসা সব বয়সী শ্রেণী-পেশার মানুষের কণ্ঠে ছিল এমনই সুর। শুক্রবার দিনভর আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লাখো মানুষ জড়ো হয়েছিল মিরপুর আর রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধে। তাদের হাতে ছিল ফুল, কণ্ঠে ছিল সব যুদ্ধাপরাধীকে বিচারের রায় কার্যকরের দাবি। নতুন প্রজন্মসহ দেশমাতৃকার সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অমর স্মৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে আসা লাখো শোকার্ত মানুষের কণ্ঠে ছিল অভিন্ন আওয়াজÑ ‘আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে পরাজিত করে রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ চাই।’ মানুষের বিনম্র শ্রদ্ধায় ফুলে ফুলে ভরে উঠেছিল মিরপুর ও রায়েরবাজার শহীদ বৃদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। শোকার্ত মানুষ মিরপুর এবং রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুলে ফুলে নিবেদন করেছেন তাদের প্রাণের অর্ঘ্য। এ দুটি স্থানে একটি বা দুটি ব্যানার নয়, পাক হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসর হায়েনাদের দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যার পর বধ্যভূমিতে ফেলে রাখার অসংখ্য নিষ্ঠুর ও ভয়াবহ আলোকচিত্র শ্রদ্ধা জানাতে আসা হাজারও বাঙালীকে শিহরিত করে তুলেছিল। বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত আল বদরনেতাসহ কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার পথ আরও মসৃণ হওয়ার আশা বুকে ধারণ করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে একাত্তরে দেশের মেধাবী সন্তানদের হত্যার প্রতীকী চিত্র তুলে ধরে শিশু সংগঠন খেলাঘর। সকালে কলো পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন, শোক শোভাযাত্রা, শ্রদ্ধা নিবেদন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছিল। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই হাজারো মানুষ ভিড় করে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সামনে। এ সময় সবার হাতে ছিল ফুলের তোড়া, কালো ব্যানারে আর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে লেখা ‘বুদ্ধিজীবীর স্মরণে ভয় করি না মরণে’ বুদ্ধিজীবীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ ‘জামায়াত, শিবির, রাজাকার এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’। আর কণ্ঠে একাত্তরের ঘাতক রাজাকার, আলবদর যুদ্ধাপরাধী ও তাদের মদদদাতাদের পরাজিত করার প্রত্যয় সেøাগান; দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে স্মৃতিস্তম্ভের বেদিমূলে যাওয়ার অপেক্ষা। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর জাতীয় স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে একে একে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানায় কেন্দ্রীয় চৌদ্দ দল, শহীদ পরিবারের সন্তান ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা। জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, জাসদ, গণফোরামসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান আগামী নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে পরাজিত করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে বিজয়ী করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। দিবসটি উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পবিত্র কুরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দেশের জন্য আত্মদানকারী শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। মিলাদ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী। প্রজন্ম-৭১’র ব্যানারে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তানরা রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে এক মানববন্ধনে অংশ নেন। এতে শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছোট ছেলে তৌহিদ রেজা নূর বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আমরা দেশের নাগরিকদের অনুরোধ জানাচ্ছি, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এমন কাউকে সমর্থন করবেন না, যারা স্বাধীনতাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেয়। শহীদ পরিবারের সদস্য হিসেবে নয়, একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেই বলবো- রক্তের বিনিময়ে এই দেশ সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্যই এ দেশের রাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণ করবে- মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। তরুণ সমাজ এই নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলেই আমরা প্রত্যাশা করি। শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছোট ছেলে আসিফ মুনীর বলেন, যারা স্বাধীনতাবিরোধী আমরা তাদের বিরুদ্ধে। এ জায়গায় কোনও আপস নেই। শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাঃ এএফএম আবদুল আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডাঃ নুজহাত চৌধুরী বলেন, সামনে নির্বাচন। আমরা জনগণের কাছে আপীল রাখতে চাই- যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের সহযোগী ও সন্তানদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করুন। তাদের যেন ভোট না দেন। আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশটি গড়ে উঠবে। যুদ্ধাপরাধীদের যে অপরাজনীতি তা নির্মূল করতে হবে।
×