ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় আ’লীগ ও বিএনপির দফায় দফায় সংর্ঘষ

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮

ভোলায় আ’লীগ ও বিএনপির দফায় দফায় সংর্ঘষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা ॥ দীর্ঘ ৮ বছর পর ভোলা-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ শনিবার ঢাকা থেকে তার নির্বাচনী এলাকায় গেলে ফের অশান্ত হয়ে উঠে লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলা। দুপুর থেকে বিএনপির হেলমেট বাহিনীর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । এসময় চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বিএনপির কর্মীরা লাঠিসোটা দিয়ে চ্যানেল আই’র ক্যামেরা ও ব্যাকপ্যাক ভাংচুর করা হয় এবং ঢাকার স্টাফ রিপোর্টার এমদাদ হোসেনসহ ৩ সাংবাদিককে মারধর করে। এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় ২টি মটর সাইকেল ভাংচুর ও একটি মটর সাইকেলে অগ্নি সংযোগ করা হয়। গুরুতর আহতদেরকে লালমোহন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে লালমোহন উপজেলা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে পাল্টা পাল্টি অভিযোগ করা হয়। বর্তমানে লালমোহন উপজেলা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় , পুলিশ ও নেতা-কর্মী বেষ্টিত হয়ে বিনা বাঁধায় মেজর হাফিজ বাসায় পৌছে। মেজর হাফিজকে লঞ্চ ঘাট থেকে বহনকারী গাড়ি ভাংচ প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে পায়ে হেটে পৌর শহরের বাসভবনে পৌছেন তিনি। চ্যানেল আই’র ভোলা প্রতিনিধি জানান,তারা দুপুর ২ টার খবরে লালমোহনে মেজর হাফিজের বাসার সামনে থেকে সরাসরি লাইভ সংবাদ পরিবেশন করছিলো। এ সময় মেজর হাফিজের বাসা থেকে কয়েক জনকর্মী এসএস পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের উপর হামলা চালিয়ে বেধরক মারধর করেন। এসময় কম্যামেরার ব্যাকপ্যাক ভাংচুর করা হয়। এছাড়াও ঢাকার স্টাফ রিপোর্টার এমদাদ হোসেন,ভোলা সাংবাদিক হারুন অর রশিদ,ক্যামেরাপার্সন ও ড্রাইভারকে এলোপাথারী মারধর করা হয়। এ ঘটনার আগে মেজর হাফিজের বাসার কাছে ২টি মটরসাইকেল ভাংচুর ও একটিতে অগ্নি সংযোগ করা হয়। শনিবার দুপুর ৩ টা থেকে বিচ্ছিন্নভাবে উপজেলা সদর ও স্বনির্ভর রোড এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটায় বিএনপির সন্ত্রাসীরা। এ সময় বিএনপির সন্ত্রাসীরা ফাকা গুলি বর্ষন করেছে বলে জানান গুরুতর আহত শাহ জামাল দুলাল। গুরুতর আহতরা হলেন, লালমোহন পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনম শাহ জামাল দুলাল, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মিজানুর রহমান আলমগীর মৃধা, ছালাউদ্দিন, উপজেলা যুবলীগ নেতা হারুন, মুরাদ, পৌর ছাত্রলীগের আহ্ববায়ক মুর্তজা সজিব, ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের, রনি, ইকবাল, কামাল হোসেন, জসিম, শামীমসহ ২৫ জন। গুরুতর আহত পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ জামাল দুলালকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আলহাজ্ব নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন হাসপাতালে ছুটে যান। এবং আহতদের খোঁজ-খবর নেন। এদিকে ভোলা-৩ আসনের আওয়ামীলীগ প্রার্থী নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন অভিযোগ করেন,লালমোহনে মেজর হাফিজকে আসতে কোন বাঁদা দেওয়া হয়নি। কিন্তু তিনি ঢাকা থেকে কয়েক মথ বিএনপি জামায়াতে হেলমেট বাহিনী নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করে ২০০১ সনের মতো ত্রাস সৃষ্টি করে। তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে এবং গুলি বর্ষন করেছে। তিনি নির্বাচন করতে আসেননি। মানুষ মারতে এসেছে। তাদের হামলা আওয়ামী লীগের ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে শাহ জামাল দুলাল নামে এক কর্মীর দুই হাত ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। অপর দিকে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপির প্রার্থী মেজর হাফিজ বলেন,তিনি এলাকায় আসার পর তার বাসা থেকে নেতাকর্মীরা বাড়ি ফিরার পথে আওয়ামী লীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। গুলি ছুড়েছে। এতে তাদের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে বলে দাবী করেন। বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। এব্যাপারে লালমোহন থানার ওসি মীর খায়রুল কবির জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে। তবে কেউ এখনো মামলা করেনি।
×