ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভারতের হিন্দু রাষ্ট্র হওয়া উচিত ছিল

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮

ভারতের হিন্দু রাষ্ট্র হওয়া উচিত ছিল

ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হওয়া উচিত ছিল: হাইকোর্টের এই রায় নিয়ে তীব্র বিতর্ক ভারতের মেঘালয় রাজ্যের হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, ধর্মের ভিত্তিতে যেহেতু দেশভাগ হয়েছিল, তাই ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। বিবিসি। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, কেউ যেন ভারতকে আরেকটি ইসলামিক দেশে পরিণত করার চেষ্টা না করে, তাহলে সেটা হবে ভারত আর বিশ্বের ধ্বংসের দিন। বিচারপতি সুদীপ রঞ্জন সেন নিজের রায়ে এই মন্তব্য করেছেন। এখনও পাকিস্তান, বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধসহ বেশ কয়েকটি জাতির মানুষের ওপরে অত্যাচার করা হয়, যাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। যদিও এই রায় নিয়ে ভারতে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতারা যেমন এই রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তেমনই আইনজীবীদের সংগঠন এই বিচারপতিকে সব বিচারসংক্রান্ত কাজ থেকে দূরে রাখার আর্জি জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি হয়েছে এই রায় নিয়ে। বিতর্কিত এই রায়টি দেয়া হয়েছে একটি রিট পিটিশনের মামলায়, যেখানে মেঘালয়ের এক পুরনো বাসিন্দা আমন রানা কোন প্রয়োজনে মেঘালয় সরকারের কাছ থেকে ডমিসাইল সার্টিফিকেট (রাজ্যে বসবাসের সার্টিফিকেট) চেয়েও তা পান নি। সেই মামলাটির রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি সেন লিখেছেন, এ ধরনের সার্টিফিকেট পেতে নাগরিকদের সমস্যা হচ্ছে ‘ভারতবর্ষের জন্মলগ্ন’ থেকেই। তাই দেশ ও দেশভাগ নিয়ে সঠিক অবস্থাটা রায়ের মাধ্যমে জানাতে চেয়েছেন তিনি। বিচারপতি সেন তার রায়ে লিখেছেন, ‘একটা সময়ে পুরো দেশটাই হিন্দু রাজত্বের অধীনে ছিল। কিন্তু মুঘলরা এসে ভারতের বিভিন্ন অংশ দখল করে যখন শাসন করতে শুরু করল, তখন অনেককে বলপূর্বক ধর্মান্তরও করা হয়েছে।’ দেশভাগের সময়ে যে লাখ লাখ হিন্দু ও শিখদের হত্যা করা হয়েছে, অত্যাচার চালানো হয়েছে এবং তাদের জোর করে পিতৃপুরুষের জমিজায়গা ছেড়ে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে যারা ভারতে এসেছেন, তাদের তথ্য নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। রায়ের চার নম্বর অনুচ্ছেদে বিচারপতি লিখেছেন, পাকিস্তান নিজেদের ইসলামিক দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। যেহেতু ভারতকে ধর্মের ভিত্তিতেই ভাগ করা হয়েছিল, তাই তারও উচিত ছিল হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করা, তবে সেটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবেই রয়ে গেছে। এখনও, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান, পার্সি, খাসি, জয়ন্তিয়া ও গারোরা অত্যাচারিত হচ্ছে এবং এদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। যেসব হিন্দু দেশভাগের সময়ে এসেছেন, তাদের এখনও বিদেশী বলে গণ্য করা হয়। এটা আমার বিচারে অত্যন্ত অযৌক্তিক, অন্যায় ও স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও সংসদের মাননীয় সদস্যদের কাছে অনুরোধ, তারা যেন একটি আইন পাস করে পাকিস্তান, বাংলাদেশ আর আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি, খ্রীস্টান, খাসি, জয়ন্তিয়া ও গারোদের এদেশে নিশ্চিন্তে থাকার ব্যবস্থা করেন। এদের ভারতে আসার কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা যেন বেঁধে না দেয়া হয়, কোনও নথিপত্রও যেন না চাওয়া হয়। এরপরেও যারা ওইসব দেশ থেকে আসবেন, তাদেরও যেন নাগরিকত্ব দেয়া হয়। আমার বিশ্বাস শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদিজীর নেতৃত্বাধীন এই সরকারই বিষয়টার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন এবং আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতাজীও জাতীয় স্বার্থে সেটা সমর্থন করবেন। রায়ের কপি সরাসরি মেঘালয়ের গবর্নর, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সেন। এই রায়টি জনসমক্ষে আসার পরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। লোকসভার সদস্য আসাউদ্দিন ওয়াইসি সংবাদ সংস্থা আই এএনএসের কাছে মন্তব্য করেছেন, ‘এটা কী ধরনের রায়! বিচার বিভাগ ও সরকারের উচিত এই রায়টির দিকে নজর দেয়া। ভারত কোনদিনই ইসলামিক রাষ্ট্র হবে না।
×