ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ওয়ানডেতে ফিরেই ব্যাটিং ঝলক তামিমের, সিরিজে সেরা ব্যাটসম্যান হোপ আর বোলিংয়ে মিরাজ

বোলিংয়ে বাংলাদেশ, ব্যাটিংয়ে উইন্ডিজ এগিয়ে

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮

বোলিংয়ে বাংলাদেশ, ব্যাটিংয়ে উইন্ডিজ এগিয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে আবার ক্রিকেটে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। তিনি বাংলাদেশ দলের ওপেনিংয়ে অপরিহার্য ব্যাটসম্যান। তাই তামিম ফেরার পর তার অবর্তমানে ফর্মের তুঙ্গে থাকা লিটন দাস, ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারের মধ্যে কে ওপেনিংয়ে নামবেন তা নিয়ে ছিল আলোচনা। তামিমকে জায়গা দিতে গিয়ে ইমরুলকে দুই ম্যাচ ওয়ানডাউনে ও সৌম্যকে প্রথম দুই ম্যাচে ৬ ও ৭ নম্বরে নামতে হয়েছে। সেই তামিম নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছেন ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দেশের পক্ষে সর্বাধিক ১৪৩ রান করে। তবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ক্যারিবীয় ওপেনার শাই হোপ ২৯৭ রান করে ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। তামিম ব্যাটিং পারফর্মেন্সে দুইয়ে। অবশ্য বোলিং নৈপুণ্যে বাংলাদেশী বোলারদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ক্যারিবীয়রা। বোলিংয়ে সেরা অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ এবং পরের দুটি জায়গা মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মুস্তাফিজুর রহমানের। টেস্ট সিরিজে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেনি সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজে ভিন্ন ধারার দল তারা। সাম্প্রতিক সময়ে বলা হয়ে থাকে, ফরমেটের দৈর্ঘ্য যত ছোট ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলও তত শক্তিশালী। সেটার প্রমাণ পাওয়া গেছে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। ক্যারিবীয়দের শক্তির প্রমাণটা অবশ্য ২৫ বছর বয়সী তরুণ ওপেনার শাই হোপের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে পাওয়া গেছে। মিরপুরে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তার অপরাজিত ১৪৬ রানেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় ক্যারিবীয়রা। সমতাও আনে। সিলেটে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ ছিল সিরিজ নির্ধারণী। এ ম্যাচেও হোপ ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন এবং টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান। এবার ১০৮ রানে অপরাজিত থাকলেও দলের পরাজয় রুখতে পারেননি মূলত বল হাতে মিরাজের জ্বলে ওঠার কারণে। শেষ ম্যাচে তার দখল করা ৪ উইকেটেই ৮ উইকেটের সহজ জয় পায় বাংলাদেশ এবং সিরিজ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। ক্যারিয়ারসেরা এ বোলিংয়েই তিনি হয়ে যান সিরিজের সেরা বোলার। তিনি ৬ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১৬.৩৩ গড় ও ৩.৩৭ ইকোনমিতে। যা চলতি বছর ওয়ানডেতে বিশ্বের মধ্যে কোন বোলারের তৃতীয় সেরা ইকোনমি। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও ৬ উইকেট দখল করেছেন, তবে গড় ও ইকোনমিতে তিনি সিরিজের বোলিং নৈপুণ্যে একধাপ পিছিয়ে। তবে হোপ দুই সেঞ্চুরিতে সিরিজের সর্বাধিক রানের মালিক হয়েছেন এবং অসামান্য অবদানে হয়েছেন সিরিজের সেরা খেলোয়াড়। ওয়ানডে সিরিজে সবচেয়ে বেশি নজর ছিল তামিম, ইমরুল, লিটন ও সৌম্যর দিকে। প্রথম ওয়ানডেতে এ চারজনই বড় কোন স্কোর গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন। একটা সিরিজ ও পুরো এশিয়া কাপ ক্রিকেটের বাইরে থাকা তামিম তার ফিরে আসার ম্যাচে ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। তার ওপেনিং সঙ্গী হয়ে লিটন ৪১, ওয়ানডাউনে নেমে ইমরুল ৪ এবং ৬ নম্বরে নেমে সৌম্য ১৯ রান করেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই নিজের পুরনো ফর্ম ফিরে পেয়ে তামিম ৫০ রান করলেও লিটন ৮, ইমরুল ০ ও সৌম্য ৬ রান করে তাদের ব্যর্থতার অভিযান শুরু করেন। সিরিজ নির্ধারণী শেষ ম্যাচে ইমরুল একাদশ থেকে ছিটকে যাওয়াতে তিনে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে যান সৌম্য। এবারও লিটন বড় কোন স্কোরের দেখা পাননি ওপেনিংয়ে নেমে, আউট হন ২৩ রানে। তবে তামিম অপরাজিত ৮১ ও ওয়ানডাউনে নেমে সৌম্য ৮০ রানের দুর্দান্ত দুটি ইনিংস উপহার দেন। তামিম নিজের ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে টানা দুই ফিফটিতে বাংলাদেশের পক্ষে এ সিরিজে সর্বাধিক ১৪৩ রান করেছেন।
×