ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়ার রিটের ফের শুনানি আজ

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮

 খালেদা জিয়ার রিটের ফের শুনানি  আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে খালেদা জিয়ার তিনটি রিট আবেদনের শুনানি আজ সোমবার আবার শুরু হচ্ছে। ১৩ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতির ঠিক করে দেয়া তৃতীয় বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জানান তার আইনজীবীরা। পরে আদালত আজ সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করে আদেশ প্রদান করে। বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ১১ ডিসেম্বর বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহম্মেদ ও বিচারপতি মোঃ ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে খালেদা জিয়ার রিট আবেদনে বিভক্ত আদেশ দেন। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ রুলসহ মনোনয়নপত্র গ্রহণের আদেশ দিলেও বেঞ্চের অপর বিচারপতি মোঃ ইকবাল কবির তা নাকচ করেন। হাইকোর্টের দেয়া ওই বিভক্ত আদেশের কপি এবং সংশ্লিষ্ট নথি প্রধান বিচারপতির কাছে ওই দিনই পাঠানো হয়। পরে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ১২ ডিসেম্বর বিচারপতি জে বি এম হাসানের একক তৃতীয় বেঞ্চ গঠন করে দেন। ১৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় ওই বেঞ্চে মামলা তিনটির শুনানি শুরু হলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী মৌখিকভাবে অনাস্থা জানান। শুনানির শুরুতেই এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে আপনার আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা নেই। এর পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, উনারা এ কথা আদালতে বলতে পারেন না। প্রধান বিচারপতিকে বলতে পারতেন। কালক্ষেপণের কৌশল থেকে এই অনাস্থা জানিয়েছেন। এ পর্যায়ে মোহাম্মদ আলী বৃহস্পতিবার বিষয়টির শুনানি না করার আরজি জানালে আদালত তাতে সম্মতি দিয়ে আজ সোমবার পর্যন্ত মুলতবি রাখেন। খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসন থেকে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে তিন আসনের মনোনয়নপত্রই বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এর বিরুদ্ধে করা আপীলও গত ৮ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করে ইসি। পরে ইসির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে পৃথক তিনটি রিট করেন খালেদা জিয়া। দুদকের দায়ের করা দুর্নীতির দুই মামলায় মোট ১৭ বছরের কারাদন্ড নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। ৩০ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কারাবন্দী দুই আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের ১০ বছরের কারাদন্ড বহাল রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান পলাতক থাকায় নিম্ন আদালতের দেয়া ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড বহাল রয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেন। অন্যদিকে ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকা আত্মসাত করার অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়াসহ চার আসামির সবাইকে সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে আদালত। একই সঙ্গে খালেদা জিয়াসহ প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। মামলার অপর তিন আসামিকেও ৭ বছরের কারাদন্ডসহ প্রত্যেককে ১০ লাখ জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া ট্রাস্টের নামে কেনা ৪২ কাঠা জমি বাজেয়াফত করে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে নেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এটিই সর্বোচ্চ শাস্তি। একই সঙ্গে দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় আসামিদেরকে শাস্তি দেয়া হয়। বিচারক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
×