ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের বাড়িতে যাচ্ছেন প্রার্থীরা

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮

 উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের বাড়িতে যাচ্ছেন প্রার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার রাজধানীর প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন। আর মাত্র ১২ দিন বাকি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। শেষ সময়ে এসে ভোটারদের ভাল রাখা আর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। যদিও নির্বাচনী প্রচারে ঢাকায় হাত পাখা আর কোদালের যতটা প্রচার রয়েছে ধানের শীষের তাও নেই। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় ধানের শীষের কিছু পোস্টার চোখে পড়লেও রাজধানীর অন্য কোথাও তেমন প্রচার দেখা যাচ্ছে না। রাস্তার মোড়ে মোড়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রচারের অফিস খুললেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে কোথাও এমন অফিস খোলা হয়নি। বিএনপি রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে নির্বাচনী প্রচার করছে না। যদিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলছেন, তাদের নির্বাচনী প্রচারে নামতে দেয়া হচ্ছে না। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস গ্রিন রোড-কলাবাগান এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। তিনি এ সময় প্রতিটি দোকান ও অফিসে প্রবেশ করে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। এ সময় তিনি ভোটারদের হাতে নৌকা প্রতীকের স্টিকার ও গত ১০ বছরে তার এলাকার উন্নয়নসংক্রান্ত লিফলেট দেন। গ্রিন রোড স্টাফ কোয়ার্টার ও কলাবাগানের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভোট চান তাপস। গ্রিন রোড স্টাফ কোয়ার্টারের মানুষ অনেকেই ভবন থেকে নিচে নেমে আসেন। তারা নিজেদের সংসদ সদস্য তাপসের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বৃদ্ধ মহিলারা তাপসের মাথায় হাত রেখে দোয়া করেন। দুপুর ১২টা থেকে এ গণসংযোগ শুরু হয়। দুপুরে বিরতি দিয়ে রাত পর্যন্ত ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভোট চান। অন্যদিকে ঢাকা-১০ আসনে বিএনপি প্রার্থী আবদুল মান্নানের কোন প্রচার দেখা যায়নি। ঢাকা-৬ ॥ আসনটির মহাজোটের প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশিদ বলেছেন, বর্তমান মহাজোট সরকার দেশের যে উন্নয়ন করেছে এবং অগ্রগতির দিকে নিয়ে গেছে তাতে সুষ্ঠু ভোট হলে দেশবাসী পুনরায় মহাজোটকে ক্ষমতায় বসাবে। মনে রাখতে হবে মহাজোটের পরাজয় মানে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পরাজয়। দেশবিবোধী শক্তিরা চায় দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হোক। তাই মহাজোট ও নির্বাচন নিয়ে নানান ধরনের কুৎসা রটাচ্ছে। রবিবার কাজী ফিরোজ দিনব্যাপী নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন পথসভায় এসব কথা বলেন। সকালে তিনি পুরান ঢাকার পাতলাখান লেনে নিজের জন্য লাঙ্গলে ভোট চান। এসময় স্থানীয় যুবলীগ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এরপর সেন্ট্রাল গার্লস স্কুলে এক মহিলা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। পরে লক্ষীবাজার ও ধোলাইখালে লাঙ্গলের পক্ষে প্রচার মিছিলের নেতৃত্ব দেন তিনি। বিকেলে ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কে যুবলীগ আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে তিনি বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তব্য রাখেন যুবলীগের ঢাকা মহানগরের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়াতুল ইসলাম স্বপন, আইয়ুব আলী খান, স্থানীয় কাউন্সিলর আরিফ হোসেন ছোটন, জাপা নেতা হাজি ফারুক, তরুণ বসু, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। ঢাকা-৪ ॥ ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করার কথা জানিয়ে ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-কদমতলী) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ সালাহ্উদ্দিন আহমেদ এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়েছেন। এ সময় তিনি ৩০ ডিসেম্বর ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজের রায় দিতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। দিনভর নিজের সংসদীয় আসনে শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে প্রচার চালান বিএনপির এই হেভিওয়েট প্রার্থী। সকালে ৫৪ নং ওয়ার্ড বিক্রমপুর হাউজিং থেকে দিনের প্রচার শুরু করেন সালাহ্উদ্দিন আহমেদ। এ সময় এলাকার অলি-গলিতে গিয়ে প্রচারপত্র বিলি করেন এবং ভোটারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোট ও দোয়া চান। পরে শ্যামপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, গ্লাসপট্টি রোড, শ্যামপুর পালপাড়া, বড়াইতলা, মুরাদপুর মাদ্রাসা রোড, জুরাইন রেলগেট, বিক্রমপুর প্লাজাসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালান ধানের শীষের বিএনপি প্রার্থী। দুপুরে এলাকার মুরাদপুরের জিরো পয়েন্ট মসজিদে যোহর নামাজে অংশ নেন সালাহ্উদ্দিন আহমেদ। এ সময় মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও ভোট প্রত্যাশা করে তাদের বুকে টেনে নেন। নামাজের পর ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ধানের শীষে ভোট চান তিনি। এলাকার সবচেয়ে বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা দূর ও রাস্তাঘাট উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সালাহ্উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত কয়েক বছরে জলাবদ্ধতায় মানুষ কিভাবে কষ্ট করেছে, তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। এবার সুযোগ এসেছে আপনাদের ধানের শীষে ভোট দেয়ার। এলাকার উন্নয়নের জন্য ধানের শীষে ভোট চাই। এদিকে প্রচারের পাশাপাশি এলাকায় ধানের শীষে ভোট চেয়ে মিছিলও করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে রাস্তায়, অলিগলিতে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারপত্র বিলি করেন। ঢাকা-৪ ॥ আসনের মহাজোটের প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার পক্ষে রবিবার দিনভর নির্বাচনী প্রচার চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন। রবিবার দুপুরে ছাত্রলীগ বিপুলসংখ্যক মোটরসাইকেল নিয়ে বাবলার পক্ষে প্রচার মিছিল করে। মিছিলটি ধোলাইপাড় থেকে শুরু করে জুরাইন, মীরহাজীরবাগ হয়ে জুরাইন রেলস্টেশন গিয়ে শেষ হয়। একই সময়ে ৫৭ এবং ৫৮ নং ওয়ার্ডে প্রচার মিছিল করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। নির্বাচনী প্রচারের ষষ্ঠ দিনে সকাল সাড়ে ১০টায় শ্যামপুর বালুর মাঠ থেকে প্রচার শুরু করেন ঢাকা-৪ আসনের মহাজোটের প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। সেখানে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাপা নেতাদের নিয়ে লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চেয়ে মিছিল করেন। দুপুরে তিনি ধোলাইপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সেখানে সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, ইব্রাহিম মোল্লা ও কাউসার আহমেদ বক্তব্য রাখেন। এরপর তিনি ৫৮ ও ৫৯ ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। বিকেল ৩টার সময় আলমবাগে এক পথসভায় বক্তব্য রাখেন বাবলা পত্নী আসমা হোসেন। বিকেলে কদমতলী এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা লীগ ও জাপা নেতাদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচার মিছিল করেন এবং মুন্সীবাড়ী এলাকায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন বাবলা। বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় সন্ত্রাসের কোন স্থান নেই। মাদকের স্থান নেই। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অপশক্তিকে রোধ করতে হবে। তথাকথিত ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারবে না জেনে অন্ধকার পথে ক্ষমতায় আসতে চায়।
×