মোয়াজ্জেমুল হক ॥ ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনের ১৩ দিন আগে সোমবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারে এমন কোন প্রতিশ্রুতি খুঁজে পাওয়া যায়নি যেখানে বড় কোন চমক রয়েছে। ঘোষিত ইশতেহারে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলা হয়েছে বর্তমান কোন উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হবে না, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলবে। এতে বলা হয়েছে আগামীতে একদলীয় শাসন যাতে ফিরে না আসে সেই ব্যবস্থা চালু। অন্য যেসব দফা উল্লেখ করা হয়েছে তাতে প্রাদেশিক সরকার গঠন, পুলিশ ও সামরিক বাহিনী ছাড়া সরকারী চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন ছাড়া অন্যান্য দফা নতুন কোন বিষয় নয়। ঐক্যফ্রন্টের এ ইশতেহার প্রকাশের পর এ নিয়ে নির্বাচনী বিশ্লেষকরা বিভিন্ন সূত্রে অভিন্ন সূরে কথা বলতেন, ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার গত ওয়ান-ইলেভেন সরকারের আমলে কথিত সংস্কারবাদীদের চিন্তা ভাবনার প্রতিফলন ছাড়া আর কিছুই নয়, যা বহু আগেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
সূত্র মতে, ঘোষিত ইশতেহারে প্রতিহিংসা থেকে মুক্ত থাকার কথা বলা হলেও ইশতেহারজুড়ে যা রয়েছে তা বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসারই এক জ্বলন্ত প্রতিচ্ছবি। শুধু তাই নয় এ ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কার্যক্রম চলমান রাখার কথা বলা হলেও মূলত যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের সঙ্গে কারা জড়িত তা স্পষ্ট করা হয়নি। এর মূল কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে যারা এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নেমেছে তাদের মধ্যে যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতের জন্য ধানের শীষের ব্যানারে ২৩টি আসন ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনা দেশের সচেতন মহলকে বড় ধরনের আঘাত দিয়েছে। বিষয়টি ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বুঝতে পেরেও ক্ষমতায় যাওয়ার অলিক স্বপ্নে বিভোর হয়ে এ অপকর্ম থেকে ফিরে আসতে পারেনি বলে আলোচিত হচ্ছে।
সূত্রসমূহে বলা হচ্ছে, বর্তমান মহাজোট সরকার মহাকাশ থেকে সমুদ্রসীমা ও দেশের ল্যান্ড বাউন্ডারি মামলা নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যে জয় ছিনিয়ে এনেছে সেটি দেশের জন্য একটি মহা অর্জনের ঘটনা হলেও এ জাতীয় সফলতার কোন উল্লেখ তাদের বিবেকবোধকে জাগ্রত করেনি। যা একটি সম্পূর্ণ প্রতিহিংসার প্রতিচ্ছবি বলেই বিশ্লেষকদের অভিমত।