ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটারদের কাছে অন্তত পাঁচবার যাবে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮

ভোটারদের কাছে অন্তত পাঁচবার যাবে আওয়ামী লীগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতি ভোটারের কাছে অন্তত পাঁচ বার যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ভোটের প্রচারে রাজধানীতে গাছাড়া ভাব লক্ষ্য করা গেছে। সোমবার বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মহাজোট প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার চোখে পড়লেও দেখা যায়নি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের। তবে আবহাওয়ার বৈরী আচরণে বৃষ্টিতে ভিজে সব পোস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। ঢাকা-৯ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী সোমবার নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, প্রতিটি ভোটারের কাছে যেতে হবে। কমপক্ষে পাঁচবার ভোট চাইতে হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারের কাছে সিøপ দিতে হবে। যেন প্রতিটি ভোটারের মুখ চিনতে পারেন। কারণ ভোটারের মুখ চিনতে পাারলে কেউ জালভোট দিতে পারবে না। তিনি নেতাকর্মীদের সজাগ করে দিয়ে বলেন, নির্বাচনের দিন নৌকার ব্যাচ পরে ধানের শীষের লোকজন যেন কেন্দ্রে ঢুকতে না পারে তা খেয়াল রাখতে হবে। সিলেট সিটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বলেন, সিলেটে আমরা দেখেছি নৌকার ব্যাচ পরে ধানের শীষের লোকজন কেন্দ্রে ঢুকে দখল করে নেয়। এটি যেন এবার না হয়। এজন্য আওয়ামী লীগের কর্মী চিহ্নিত করতে হবে। প্রকৃত কর্মীকে কেন্দ্রের দায়িত্ব দিতে হবে। সভায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আধুনিক, উন্নত ও সমৃদ্ধশীল ঢাকা-৯ আসন গড়ার লক্ষ্যে সাবের হোসেনের পক্ষে নৌকা মার্কায় ভোট চান। মতবিনিময় সভায় মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বাহার, ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার বাচ্চু, মা-া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুল আলম শামীম, সাধারণ সম্পাদক খাইরুজ্জামান খাইরুলসহ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। নৌকার প্রচারে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে। সাংস্কৃতিক কর্মীরা ঢাকা দক্ষিণের প্রতিটি অলিতে গলিতে প্রবেশ করে গানে গানে ভোট চাইবেন। সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই প্রচারে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- গণমানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৮ নির্বাচনী এলাকায় ৮ পৃথক সাংস্কৃতিক প্রচার টিমের উদ্বোধন করেন সাঈদ খোকন। মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী আবুল হাসানাতের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনরঞ্জন ঘোষাল, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, নাট্যব্যক্তিত্ব ফালগুনি হামিদ, চিত্রনায়ক শাকিল খান, জাহিদ খান, নতুন, তারিন, সুইটি, এসডি রুবেল, জ্যোতিকা জ্যোতি, সায়মান প্রমুখ। এ সময় মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, আমরা জনগণের কাছে খালি হাতে যাচ্ছি না। আমরা সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছি অর্জন। কী সেই অর্জন? বিগত ১০ বছরে আমাদের সরকার নিম্নআয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ে নিয়ে গেছে। পদ্মাসেতু আর অল্প কিছুদিন পর দৃশ্যমান হবে। রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র দ্রুতগতিতে চলছে। মহাকাশে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রিয় পতাকা উড়ছে। দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে। বিদ্যুতের উন্নয়ন ঘটছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। মেয়র বলেন, আমরা আজ নৌকা ও আওয়ামী লীগের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমরা মানুষের দ্বারে দ্বারে যাব ভোট চাইতে। যাতে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসে। ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ সেলিম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকলেও ভোটের মাঠে তিনি সোচ্চার। পুরান ঢাকার প্রিয় মানুষটি কথা বলতে না পারলেও তার প্রতীক নৌকা নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন। সমর্থকদের সঙ্গে করে তিনি লিফলেট নিয়ে যাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। হাত-মাথা নেড়ে ভোট চাইছেন নৌকা প্রতীকে। এই আসনে এখনও বড় পরিসরে প্রচারে নামতে পারেননি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু। স্থানীয় বিএনপি নেতারা এজন্য হতাশা প্রকাশ করেছে। শেষ পর্যন্ত নৌকার বিপক্ষে এই আসনে ধানের শীষ দাঁড়াতে পারবে কি না তাই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। ঢাকা-৪ আসনের মহাজোটের প্রার্থী সৈয়দ আবু বাবলার পক্ষে পৃথক পৃথক বর্ণাঢ্য মিছিল করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও শ্রমিকলীগ। আওয়ামী লীগ ৫১ নং ও শ্রমিকলীগ ৫৭ নং ওয়ার্ডে মিছিল করে। সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা-৪ আসনের সব ওয়ার্ডে গণসংযোগে নামেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। দুপুর ২টায় ৫৩ এবং ৫৪ নং ওয়ার্ডে মহিলা লীগ ও মহিলা পার্টির নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন বাবলার স্ত্রী সালমা হোসেন। এসময় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ ও ছাত্রসমাজের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে ধোলাইপাড়ের আমির টাওয়ারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাপা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বাবলা। ঢাকা-৬ আসনের মহাজোটের প্রর্থী কাজী ফিরোজ রশিদ বলেছেন, অনেকে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিচ্ছেন। সে হুমকিতে আমরা বিচলিত নই। জনগণ আপনাদের সঙ্গে নেই। দেশবাসী তাদের আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের কথা ভুলে নাই। দেশবাসী সজাগ, কোন ষড়যন্ত্র করেই নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। সোমবার সকালে নির্বাচন প্রচারের সপ্তম দিনে ধূপখোলায় এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। পরে লোহারপুল, ডিস্টিলারি রোড, দীননাথ সেন রোডে গণসংযোগ করেন। বৃষ্টিতে ভিজে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী কাজী ফিরোজের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। দুপুরের পর এসকে দাস রোড, রজনী চৌধুরী রোড এবং কেবি রোডে গণসংযোগ করেন তিনি। গণসংযোগকালে ১৭টি পথসভায় বক্তব্য রাখেন কাজী ফিরোজ রশিদ। পথসভায় কাজী ফিরোজ এলাকাসীদের উদ্দেশে বলেন, শেখ হাসিনা এবং এরশাদের মার্কা লাঙ্গল। লাঙ্গলে ভোট দিলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন আর দেশ হবে স্বয়ং সম্পর্ণ। দেশে থাকবে না কোন জঙ্গীবাদ, অরাজকতা। চক্রান্তকারীরা দেশকে অস্থির রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তাই আগামীতে শেখ হাসিনা ও এরশাদের লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে ওদের প্রতিহত করতে হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল্লাহ মিনু, হাসান আসকারী, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হেলেনা আক্তার, জহিরুল ইসলাম এ্যাপোলো, জাপা কেন্দ্রীয় নেতা হাজী ফারুক, ইসহাক ভূইয়া, সারফুদ্দিন আহমেদ শিপু প্রমুখ।
×