ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মরে গেলেও ভোট বর্জন করব না ॥ ড. কামাল

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮

মরে গেলেও ভোট বর্জন করব না ॥ ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই উল্লেখ করে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন মন্তব্য করেছেন ‘মরে গেলেও ভোট বর্জন করব না।’ সোমবার তিনি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করে বলেন, ১০ ডিসেম্বর থেকে তাদের জোটের নেতাকর্মীদের ওপর হয়রানির মাত্রা বেড়ে গেছে। এই আট দিনে ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে ৯৫ মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় তাদের ২ হাজার ২৪১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমাদের ওপর জঘন্যভাবে হামলা করে সরকার এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে যেন আবেগে ভোট বর্জন করতে বাধ্য হই। দরকার হলে ভোটকেন্দ্রে লাশ যাবে। তবু ভোট বর্জন করব না। তিনি বলেন, ধানের শীষের প্রার্থীরা জনসংযোগ চালানোর সমান সুযোগ পাচ্ছে না। কোথাও ধানের শীষের প্রার্থীরা নামতে পারছে না। প্রার্থীরা মাঠে নামলেই তাদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে। ঢাকা শহরের কোথাও ধানের শীষের পোস্টার নেই। কেন পোস্টার নেই বিষয়ে কমিশনকে খোঁজ খবর নেয়ার অহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের অভিযোগ সম্পর্কে জেনে সিইসি বিব্রত হয়েছে। আমরা বলেছি, শুধু বিব্রত হলে চলবে না। এগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি ৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলাম। গত ৫৫ বছরে নির্বাচন নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রত্যেকটি নির্বাচনেই আমি কমবেশি ভূমিকা রেখেছি। কিন্তু এইরকম নির্বাচন কখনও কোথাও হতে দেখিনি। কোথাও নির্বাচনের ন্যূনতম পরিবেশ নেই। ন্যূনতম পরিবেশ ৃষ্টির জন্য ইসিকে আহ্বান জানাই। বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন সময়ে সব দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তারা রুটিন ওয়ার্ক ছাড়া অন্যসব কাজ করার এখতিয়ার রাখে না। সংবিধান অনুযায়ী এখন সকল ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে। কিন্তু তারা কেন এই ক্ষমতার প্রয়োগ করছে না সেটা আপনারা (সাংবাদিক) ইসিকে জিজ্ঞাসা করেন। সারাদেশে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমরা বলেছি, আজকেই আপনারা চিঠি দেন যেন আগামীকাল থেকে এটা বন্ধ করা হয় উল্লেখ করেন। এর আগে দুপুর ২টা থেকে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে করেন। এ সময় সারা দেশের ৩১ জেলায় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ কমিশনে দাখিল করা হয়। এতে আচরণবিধি বহির্ভূত পুলিশী অভিযানের নামে বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার তল্লাশির নামে বাসাবাড়িতে তা-ব, গুরুতর জখম বন্ধ করাসহ পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানান। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে ড. কামাল বলেন, আমাদের প্রার্থীদের ওপর কোথায় কোথায় হামলা চালানো হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তরিত তথ্য, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ও ছবি দিয়েছি। সংবিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশন অনেক ক্ষমতার অধিকারী। তারপরও নির্বাচন কমিশন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সেটাই তো বুঝতে পারছি না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকার চায় না আমরা নির্বাচন করি।
×