ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল নির্বাচনী প্রচারে সবচেয়ে বড় সমস্যা পুলিশ

প্রকাশিত: ০৭:৩৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮

সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল নির্বাচনী প্রচারে সবচেয়ে বড় সমস্যা পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুলিশের ভ‚মিকার সমালোচনা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনী প্রচারে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ। তারা অতিমাত্রায় আক্রমণাত্মক আচরণ করছে। এতে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ফখরুল বলেন, সরকারের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। এ জন্যই এখন পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টের ১৪ জন প্রার্থীকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে। ভোটের মধ্য দিয়ে জয় লাভে এসব প্রার্থী ও নেতাকর্মীকে মুক্ত করে আনা হবে। ঐক্যফ্রন্ট মুখপাত্র বলেন, বাধার কারণে নির্বাচনের মাঠে কোন নেতাকর্মী নামতে পারছেন না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। প্রেসগুলোতে বলে দেয়া হয়েছে যাতে ধানের শীষের পোস্টার কেউ না ছাপে। মাইক সরবরাহও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে একাধিকবার নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) অবহিত করা হলেও তাদের কোন উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি। সরকারী কর্মকর্তাদের নির্বাচনী প্রচারে কাজে লাগানো হচ্ছে দাবি করে ফখরুল বলেন, মসজিদের ইমামদের ডেকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপাররা নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে চাপ প্রয়োগ করছেন। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই নয়, সরকারী সব শ্রেণীর কর্মকর্তাদের কাজে লাগিয়ে নৌকায় ভোট চাওয়া হচ্ছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পর্যন্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নিজ নিজ কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীদের জয়ী করে আনার জন্য। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আবদুল মঈন খান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ। অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, আনসার ভিডিপির কয়েক হাজার নতুন পোশাক তৈরি করা হচ্ছে। মূলত ভোটের দিন এসব পোশাক পরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করে জাল ভোট দেবেন। পাশাপাশি বিভিন্ন কারখানাতেও শ্রমিকদের জাল ভোট দেয়ার প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ক্ষমতাসীনরা প্রচার করছে তারা হেরে গেলে কয়েক হাজার লাশ পড়বে। এসবই তাদের মনের দুর্বলতা। আমরা একটা কথাই বলতে চাই, আপনারা যা করার করেছেন। কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে কাউকে আঘাত করবে না। ঐক্যফ্রন্ট আঘাত করার রাজনীতি করে না। এর আগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরী এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ফেনীতে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা দূরভিসন্ধিমূলক। তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর রাতে ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আলামপুর গ্রামে নরসুন্দর বাড়ির (বাবু ডাক্তার বাড়ি) শিশির শীল ও মনিন্দ্র শীলের দুটি টিনের পাকা বসতঘর ও দুটি রান্না ঘর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সম্পূর্ণভাবে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২ নম্বর বগাদানা ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বারকে (যিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি) আটক করা হয়। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হচ্ছে। অবিলম্বে সংশ্লিষ্টদের খুঁজে বের করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ধরনের ঘটনায় জনমনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, ক্ষমতাসীনরা সোনাগাজী উপজেলার আলামপুর গ্রামের নাপিত বাড়ির অমানবিক ঘটনার ন্যায় দেশব্যাপী আরও ঘটাতে পারে এবং সে দায় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের ওপর চাপাতে পারে।
×