ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেরপুর-২ আসনে অগ্নিকন্যার নৌকার পালে হাওয়া

প্রকাশিত: ০২:৪২, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮

শেরপুর-২ আসনে অগ্নিকন্যার নৌকার পালে হাওয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ (নালিতাবাড়ী-নকলা) আসনে টানা ৯ দিন যাবত উপজেলা সদর থেকে তৃণমূল পর্যন্ত গণসংযোগ ও নির্বাচনী পথসভায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কৃষিমন্ত্রী ও বাংলার অগ্নিকন্যা খ্যাত বেগম মতিয়া চৌধুরী। এজন্য ইতোমধ্যেই এ আসনে নৌকার পালে হাওয়া লেগেছে। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই তা বাড়ছে। সেইসাথে দিন দিন সুসংহত হচ্ছে নৌকার অবস্থান। দলীয় প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে অন্যান্য দিনের মতো মঙ্গলবারও বেগম মতিয়া চৌধুরী নকলা উপজেলায় গড়েরগাও, লাভা, বড়ইতারসহ অন্ততঃ ৮টি এলাকায় গণসংযোগ শেষে নির্বাচনী পথসভা করেছেন। তবে এদিন সকাল থেকে দিনভর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে গণসংযোগ এবং সেই গণসংযোগে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এলাকার শত শত মানুষের অংশগ্রহণের বিষয়টি ছিল লক্ষ্যণীয়। দলীয় নেতা-কর্মীদের বাইরেও তার প্রতি সাধারণ মানুষ ও কৃষকদের আবেগ-অনুভূতিই যেন ভিন্ন। মঙ্গলবার স্থানীয় গড়েরগাঁও এলাকায় আয়োজিত নির্বাচনী পথসভায় বেগম মতিয়া চৌধুরী সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ বলেন, তিনি দীর্ঘ ২৭ বছর যাবত নকলা-নালিতাবাড়ীর জনগণকে মায়ের মমতার আচল দিয়ে আগলে রেখেছেন। তিনি নকলা-নালিতাবাড়ীর উন্নয়নের রূপকার। তার দিক-নির্দেশনায় এ এলাকায় সমহারে প্রতিটি উন্নয়ন কাজের সুবিধা ভোগ করছে জনগণ। মতিয়া চৌধুরী কোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সমর্থন করেন না। তিনি জনগণের ভাগ্যের উন্নয়নে বিশ্বাসী। তার ওই বক্তব্যের পর বেগম মতিয়া চৌধুরী যখন উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা প্রত্যেকে ১০টি করে ভোট সংগ্রহ করে দেবেন। আপনাদের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করলেই ১০টি করে ভোট সংগ্রহ করতে পারবেন। আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট ছাড়া আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। ঠিক তখন স্থানীয় লোকজনও তা সাদরে গ্রহণ করে তা সংগ্রহে আশ্বস্ত করেন মতিয়া চৌধুরীকে। জানা যায়, এ আসনে নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ২ টি পৌরসভা ও ২১ টি ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৪৯ হাজার ১৫৮ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ৯১২ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৪৬ জন। এ আসনে এবার টানা ষষ্ঠ দফায় আওয়ামী লীগের মনোনয়নে লড়াইয়ে থাকা আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী মতিয়া চৌধুরীর বিপরীতে লড়াই করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা প্রয়াত হুইপ জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী নুরুল ইসলাম। এ আসন থেকে মতিয়া চৌধুরী ১৯৯১ থেকে ২০১৪’র ৫টি নির্বাচনের মধ্যে ৪টিতেই বিপুল ভোটাধিক্যে নির্বাচিত হলেও কেবল ২০০১ এর নির্বাচনে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে হারানো হয়েছিল তাকে। তবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ৩ দফার সরকারের প্রতিবারই তিনি সংসদে ও সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী থাকায় এলাকায় করেছেন শত শত নয়, হাজার কোটি টাকার নজরকাড়া উন্নয়ন। তাই উন্নয়ন, অভিজ্ঞতা ও সততার প্রশ্নে এলাকায় তার বেড়েছে যেমন জনপ্রিয়তা, ঠিক তেমনি নির্বাচনের শেষ সময়ে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানো সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা ও নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল হালিম উকিলসহ দীর্ঘ সময় চুপচাপ থাকা দলের একটি অংশ ইতোমধ্যে নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছে। অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী ফাহিম চৌধুরী নতুন মুখ হওয়ায় এবং অপর ২ মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিস্টার এম হায়দার আলী ও পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম মোখলেছুর রহমান রিপনসহ অনেক নেতা-কর্মীকেই এখনও যেমন তিনি মাঠে নামাতে পারেননি, ঠিক তেমনি নানা নাটকীয়তায় শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার কারণে মাঠ গুছানোর কাজেও রয়েছেন অনেকটা পিছিয়ে।
×